ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পরীক্ষা কেন্দ্রে ৩০ মিনিট আগে উপস্থিত হতে না পারলে বিশেষ বিবেচনা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

পরীক্ষা কেন্দ্রে ৩০ মিনিট আগে উপস্থিত হতে না পারলে বিশেষ বিবেচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথমবারের মতো নেয়া উদ্যোগ। তাই এবারের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির বিষয়ে কিছুটা ছাড় দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলছে, ব্যতিক্রম কিছু থাকলে কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নেবে, পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে। এদিকে আগামী ১ নবেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেবে ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮২০ শিক্ষার্থী; যাদের মধ্যে ছাত্র ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৭৮ এবং ছাত্রী ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৪২। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা উপলক্ষে বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন। সংবাদ সস্মেলনে এবারের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তবে প্রশ্ন ফাঁস ও নতুন নিয়ম নিয়ে প্রথমে কথা বলেন সচিব। আগের দিন সচিবালয়ে এ পরীক্ষা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর উপস্থিত হতে হবে। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে আসন্ন জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছিল ওই সভায়। তবে এই ঘোষণার পরে অভিভাবক, শিক্ষার্থীর মধ্যে এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই যানজটের কারণে আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বলেন, সব ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম থাকে। পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে যদি পরীক্ষার্থী হলে পৌঁছতে পারে তাহলে তার দিক থেকেও টেনশন কমে যে, সে ঠিক সময়ের আগে পৌঁছে গেছে। এটার অন্য একটা দিকও আছে যে, ঠিক সময়ে পৌঁছানোর জন্য ওইভাবে প্ল্যান করে বাসা থেকে বের হবে। আমাদের যানজট প্রতিদিনের ঘটনা। সুতরাং, আমরা সেভাবে প্ল্যান করতে বাধ্য হই। ব্যতিক্রম কিছু হলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই সেটা কার্যকারণ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। সচিব বলেন, আমরা চাই প্রকৃত মূল্যায়ন। কোন রকম অসাধু পন্থা যাতে না হয়। এটার অনেক কারণ আছে। আমাদের যে প্রজন্ম পরীক্ষা দিচ্ছে এরাই দেশটাকে পরিচালনা করবে। ওদের যদি আদর্শ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারি, গ্যাপ থাকলে তারা প্রলুব্ধ হবে। সেটি যাতে না হতে পারে সেজন্যই এই ব্যবস্থাপনা। সোহরাব হোসাইন আরও বলেন, পরীক্ষার্থী যাতে বোঝে সাড়ে নয়টায় পরীক্ষার হলে পৌঁছলে তারা যেমন নিরাপদ থাকে তেমনি অন্যদিক থেকে যারা অসাধু পন্থা অবলম্বন করে তারা সেই সুযোগটা পাবে না। কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়ে যাবে পরীক্ষার হলে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে। আমার মনে হয় এটা একটা চমৎকার উদ্যোগ। প্রশ্ন ফাঁস হলে এক সঙ্গে সারা বিশ্বে চলে যায়, আগে বোধটা থাকত প্রশ্ন ফাঁস হলে লজ্জা পেত। তিনি বলেন, আইন করা ছাড়া তো বাধ্যতামূলক করা যায় না, আমরা আবশ্যিকভাবে নিচ্ছি। এখন ধরেন কেউ একটা এ্যাক্সিডেন্টে পড়ে গেল, সেক্ষেত্রে তো বিবেচনা করতে হবে। সে রকম এক্সসেপশন থাকতে পারে। আধাঘণ্টা আগে প্রবেশের পর প্রশ্ন কতক্ষণ আগে দেয়া হবে বা কোথাও খোলা হলে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন: ভবিষতে এমন পদ্ধতিতে যাচ্ছি, কোন জায়গায় প্রশ্নের প্যাকেট খোলা হলে সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, আধাঘণ্টা আগে উপস্থিতির বিষয়টি শিক্ষার্থীরা অভ্যস্ত হয়েই গেছে। প্রশ্ন ফাঁস রোধে আস্থা, দায়িত্বশীলতা বাড়াতে হবে। এজন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছি। এবার জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮২০ শিক্ষার্থী অংশ নেবে। ১ নবেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৮ নবেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। সকাল ১০টা থেকে এ পরীক্ষা শুরু হবে। ২৮ হাজার ৬২৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই হাজার ৮৩৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে বিদেশের নয়টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে ৬৫৯ শিক্ষার্থী। জেএসসিতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ লাখ ৯০ হাজার ২৭৭ এবং জেডিসিতে পরীক্ষার্থী তিন লাখ ৭৮ হাজার ৫৪৩। জেএসসিতে ছাত্রের সংখ্যা নয় লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ এবং ছাত্রী ১১ লাখ ১৮ হাজার ৯৪১। জেডিসিতে ছাত্রের সংখ্যা এক লাখ ৭৩ হাজার ৪৪২ এবং ছাত্রী দুই লাখ ৫ হাজার ১০১। এ বছর থেকে জেএসসির নিয়মিত শিক্ষার্থীদের শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, কর্মী ও জীবনমুখী শিক্ষা এবং চারু ও কারুকলা বিষয়ের পরীক্ষা হবে না। তিন বিষয়ে শিক্ষার্থীকে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে সরবরাহ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান।
×