ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে কলেজ ছাত্র হত্যা মামলায় ৯ জনের ফাঁসির আদেশ

প্রকাশিত: ২২:৫৪, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

গাজীপুরে কলেজ ছাত্র হত্যা মামলায় ৯ জনের ফাঁসির আদেশ

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে কলেজ ছাত্র শাহাদাত হোসেন সোহাগকে হত্যার দায়ে নয়জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। এছাড়াও অন্য একটি ধারায় তাদের প্রত্যেককে ছয় মাসের করে সশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা করে জরিমানা, আরও একটি ধারায় ওই আসামীদের প্রত্যেককে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে আদালত। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভুঁইয়া বুধবার মামলার এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উত্তর ছায়াবীথি এলাকার নাজমুল হকের ছেলে জহিরুল ইসলাম ওরফে জাকির হোসেন ওরফে জন্টু, বিলাসপুর এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে জুয়েল, দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকার মো. আবদুল মালেকের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম ওরফে প্রিতম ওরফে প্রিতু ওরফে ইতু, রথখোলা এলাকার সিদ্দিকের ছেলে আরিফ, নিয়ামত সড়ক এলাকার শামসুল হকের ছেলে সেলিম ও একই এলাকার আব্দুস সোবহানের ছেলে আসাদুল ইসলাম, সামন্তপুর এলাকার লেহাজ উদ্দিনের ছেলে মো. হানিফ ও উত্তরবিলাসপুর এলাকার আইয়ুর আলীর ছেলে রিপন আহমেদ জুয়েল এবং শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার বাঘেরভিটা এলাকার বাক্কা মিয়ার ছেলে বাক্কা সুমন। এদের মধ্যে সেলিম, আসাদুল ইসলাম, হানিফ ও রিপন পলাতক রয়েছে। রায় ঘোষণাকালে অপর পাঁচ আসামী আদালতে উপস্থিত ছিল। গাজীপুর আদালতের অতিরিক্ত পিপি মো. আতাউর রহমান জানান, প্রায় সাত বছর আগে ২০১০ সালে গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের (বিজ্ঞান বিভাগ) ছাত্র ছিল শাহাদাত হোসেন সোহাগ (২২)। ওই বছরের ৮ জানুয়ারি সোহাগের বন্ধু বিহন কায়সার তার স্ত্রী আঁখিকে মোবাইল ফোনে বিরক্তকারীদের সঙ্গে আপোসরফা করার জন্য ফোন করে তাকে জেলা শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠে আসতে বলে। ফোন পেয়ে সোহাগ তার অপর বন্ধু নাহিদকে সঙ্গে নিয়ে ওই মাঠে গিয়ে বিহন কায়সার, তার স্ত্রী আঁখি, হানিফ ও অন্য আসামিদের দেখতে পায়। সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আসামিরা ছুরি, কিরিচ, ক্রিকেটের স্ট্যাম্প নিয়ে সোহাগ ও নাহিদের ওপর হামলা চালায়। এসময় বিহন দৌড়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। আসামিরা সোহাগকে এলোপাতাড়ি মারধর এবং ছুরি দিয়ে আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে হুমকি দিয়ে চলে যায়। গুরুতর আহত সোহাগকে রিক্সায় করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আসামীরা পথরোধ করে আবারো হামলা চালায় এবং ছুরিকাঘাত করে। এতে সোহাগের বন্ধু নাহিদ ও রাশিদুল আহত হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহাগকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ১০ জানুয়ারি সোহাগের পালক বাবা আবুল হাসেম সুফি বাদী হয়ে ১০জনকে আসামী করে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু তদন্ত শেষে পুলিশ গত ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এমামলায় ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন ও দীর্ঘ শুনানী শেষে বুধবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় পাঁচ আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রাস্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি আতাউর রহমান খান, মকবুল হোসেন কাজল, আব্দুল করিম (ঠান্ডু)। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ ও বেগম জেবুন্নেছা মিনা।
×