ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশে ফিরে বললেন এই ওপেনার

তামিম ইকবালের কাছে সবার আগে দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

তামিম ইকবালের কাছে সবার আগে দেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কথাতেই আছে আগে দেশ, তারপর ব্যক্তি বা অন্য সবকিছু। বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবালের কাছেও তাই। তামিমের কাছে আগে দেশ। এরপর খেলার সবকিছু। তাই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগেও (বিপিএল টি২০) পুরো ফিট না হয়ে খেলতে নামবেন না। সোমবার দেশে ফিরে মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসে নিজেই জানালেন তা। বললেন, ‘আমার জন্য অগ্রাধিকার হলো জাতীয় দল।’ মানে দেশ। দেশের জন্য খেলা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল টি২০) শুরু হবে ৪ নবেম্বর। এখন ইনজুরিতে আছেন তামিম। ইনজুরির জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষ হয়ে গেছে তার। দেশেও ফিরে এসেছেন। ইনজুরির যে অবস্থা তাতে বিপিএলের শুরুতে খেলতে পারবেন না তামিম। শুরুতেই সিলেটে যে তামিমের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দুটি ম্যাচ রয়েছে সেটিতে খেলতে পারবেন না তামিম। এরপর থেকে বিপিএলে খেলবেন। তবে তাও নিশ্চিত নয়। কারণ তামিম পুরো ফিট না হয়ে বিপিএলে খেলতে নামবেন না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিপিএল ইস্যু উঠতেই তামিম বলেছেন, ‘আমরা সবাই জানি যে বিপিএল সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা টুর্নামেন্ট। কিন্তু জাতীয় দলেরও খেলা আছে। ওটা আমার জন্য সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার জাতীয় দলে খেলার জন্য। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বড় সিরিজ হবে। যতগুলো বিপিএল ম্যাচ মিস হোক না কেন আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়েই নামব।’ মাংসপেশিতে টান লেগেছে তামিমের। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে মাংসপেশিতে টান লাগার পরও প্রথম টেস্ট খেলেন। এরপর আবার ইনজুরিতে পড়েন। আবার দ্বিতীয় টেস্ট ও প্রথম ওয়ানডে না খেলে দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলে আবার মাংসপেশির ব্যথায় ভোগেন। ব্যথা বেড়ে গেলে সফরই শেষ হয়ে যায়। তৃতীয় ওয়ানডে ও দুটি টি২০ না খেলেই দেশে ফিরতে হয়েছে। তামিমকে চার সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে। নবেম্বরের ১৪ তারিখ পর্যন্ত তামিমের ব্যাট হাতে নেয়ার কথা নয়। তাতে করেই বিপিএলে সিলেটপর্বে খেলতে পারবেন না তামিম। তামিম পুরো সুস্থ না হয়ে খেলতেও চান না। বলেছেন, ‘আমার বার্তাটা খুবই পরিষ্কার। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমার মনে হয় না খেলা উচিত হবে। আর আমি এ কাজ করবও না। মেডিক্যাল স্টাফও মনে হয় না চাইবে যে পুরোপুরি ফিট না হওয়া পর্যন্ত কোন ধরনের ক্রিকেট খেলা।’ তামিম নিজের শরীরের বর্তমান অবস্থা নিয়েও কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, ‘এখন দুই সপ্তাহ পুরো রিহ্যাবে থাকতে হবে। তারপর আবার মূল্যায়ন করা হবে। প্রথমে যে পরিকল্পনা ছিল হয়তো বিপিএলের প্রথম কয়েকটা ম্যাচ নাও খেলতে পারি। এখন বলাটা খুব আগে হয়ে যায়। কারণ এখন দুই সপ্তাহ পুরোপুরি রিহ্যাবে থাকব। তারপর দেখব কি অবস্থা, কয়টা ম্যাচ মিস হবে সেটা তখন হয়তো বলতে পারব। এটা নিশ্চিত যে প্রথম দুইটা ম্যাচ খেলতে পারব না।’ দক্ষিণ আফ্রিকায় তামিম ও প্রধান কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহেকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। গুজব ওঠে দুইজনের মধ্যে ঝামেলা চলছে। হাতুরাসিংহের দিকে ব্যাটও উড়িয়ে মারেন তামিম। এমন কথাও শোনা গেছে। কিন্তু তামিম এ গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমার জন্য জিনিসটা খুবই হাস্যকর। একটা জিনিস ঘটছে, ৫ শতাংশ হলে ওটাকে মানুষ ২৫-৩০ শতাংশ বানিয়ে দেয় সেটা মেনে নিতাম। জিনিসটা ঘটছে শূন্য শতাংশ। ওটাকে যদি বানিয়ে দেন হাসা ছাড়া কোনকিছু করার নাই। আমার সঙ্গে তার (হাতুরাসিংহের) কোন সমস্যা নাই। জিনিসটা যে কেন হলো, এটা দুঃখজনক। হাস্যকর একটা ঘটনা।’ তামিম সেই ঘটনা পরিষ্কার করতে গিয়ে জানান, ‘এটা পরিষ্কার করার জন্য কিছু একটা তো ঘটতে হবে। মিডিয়াতে তো বোর্ড থেকে চিঠিও গেছে এরকম কোন কিছু ঘটেনি।’ এসব ঘটনা এখন অতীত। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশ দল বাজে খেলছে। সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ডিসেম্বরে সিরিজ আছে। এর আগে বিপিএল হবে। বিপিএলে তামিম কবে থেকে খেলবেন তার নিশ্চয়তা নেই। তিনি যে পুরো ফিট হয়েই বিপিএলে খেলতে চান। বিপিএলে খেলে নিজেকে তৈরি করতে চান শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের জন্য। জাতীয় দলকেই যে অগ্রাধিকার দেন তামিম। তাই বিপিএলে খেলা নিয়ে তামিমের কোন তাড়াহুড়ো নেই। দক্ষিন আফ্রিকা সফরের ব্যর্থতা নিয়েও কথা বলেছেন তামিম। জানিয়েছেন, ‘সফরে আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী কেউই পারফর্ম করতে পারিনি। কন্ডিশন একটু ভিন্ন ছিল, চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু আমরা এর চেয়ে ভাল পারফর্ম করতে পারতাম। তবে এটাকে অজুহাত হিসেবে দেখাতে চাই না। দল হিসেবে এবং ব্যক্তিগত হিসেবে আমরা যতটা সক্ষম ততটা খেলতে পারিনি। যদি দল হিসেবে খেলতে না পারি তাহলে দেশে খেলছি নাকি দেশের বাইরে খেলছি, সেটা ভাবনার বিষয় না।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সব কিছু থেকেই মানুষ শিক্ষা নেয়। আমাদের জন্য বড় শিক্ষনীয় সফর ছিল এটি। আমাদের যে ভুল ছিল আমি নিশ্চিত ব্যাটসম্যান-বোলার বলেন কম-বেশি সবাই বুঝতে পেরেছি। যদি এটা বাজে সফর হিসেবে চিন্তা করে ভুলে যাই তাহলে আমরা কিন্তু উন্নতি করতে পারব না। ভুলগুলোকে হাতে কলমে বের করে সেগুলো শুধরাতে হবে। ২০১৯ বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে খেলাও কঠিন হবে আমাদের জন্য। এইসব কিছু মাথায় রাখতে হবে।
×