ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুর্নীতির অনুসন্ধান বন্ধে সুপ্রীমকোর্ট চিঠি দিতে পারে না

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

দুর্নীতির অনুসন্ধান বন্ধে সুপ্রীমকোর্ট চিঠি দিতে পারে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোঃ জয়নুল আবেদীনের দুর্নীতি অনুসন্ধান বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দেয়া সুপ্রীমকোর্টের চিঠি আইন বহির্ভূত, সুপ্রীমকোর্ট এ ধরনের চিঠি দিতে পারে না বলে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন দুই এ্যামিকাস কিউরি (আদালতকে সহায়তাকারী)। সাবেক বিচারপতির দুর্নীতি অনুসন্ধান বন্ধে সুপ্রীমকোর্ট প্রশাসনের দেয়া চিঠি নিয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে মঙ্গলবার দুই এ্যামিকাস কিউরি তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। পরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামী ৩১ অক্টোবর দুপুর ২টা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। হাইকোর্টের নিয়োগ দেয়া তিন এ্যামিকাস কিউরির মধ্যে মঙ্গলবার এ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী ও সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। আরেক এ্যামিকাস কিউরি সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ৩১ অক্টোবর বক্তব্য উপস্থাপন করবেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার শুনানিতে বিচারপতি মোঃ জয়নুল আবেদীনের পক্ষে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, দুদকের পক্ষে এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান এবং সুপ্রীমকোর্টের চিঠি আদালতের নজরে আনা আইনজীবী এ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান তরফদার উপস্থিত ছিলেন। দুপুর দুইটার পর শুনানি শুরু হলে প্রথমে সাবেক বিচারপতি মোঃ জয়নুল আবেদীনের পক্ষে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বক্তব্য উপস্থাপন করেন। শুনানিতে ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, প্রথম চিঠির পর সব কাগজপত্র দিয়েছে সুপ্রীমকোর্ট। এই আদালতের সামনে যে চিঠি সেটা দ্বিতীয়বারের। এই চিঠির পরও সব তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। এই চিঠির আর কার্যকারিতা নেই। তিনি বলেন, এমন না যে, বিচারপতি জয়নুল আবেদীন প্রধান বিচারপতির ভাই বা আত্মীয়। এখানে প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত কোন লাভ নেই। বিচার বিভাগের অভিভাবকের মতো কাজ করেছেন তিনি। এখানে অসৎ উদ্দেশের প্রশ্নই আসে না। বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের পক্ষে এ সময় ব্যারিস্টার মইনুল লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন আদালতে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দুদক অনুসন্ধান কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে থাকে। মূলত মিডিয়া ট্রায়ালের জন্য এটা করে। ব্যারিস্টার মইনুলের বক্তব্যের পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেন, আমি জবাব দেব। এ সময় আদালত বলে, এটার জবাব দেয়ার সুযোগ নেই। আপনার কোন শুনানি থাকলে সেটা বলতে পারেন। তবে তার আগে আমাদের কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দেন। আদালত তখন জানতে চায়, আপনারা কোন ব্যক্তির সম্পদ বিবরণী যে ফরমের মাধ্যমে চেয়ে থাকেন, সেই ফরমে দেখা যাচ্ছে সন্তানরা যে বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে তার তথ্য চেয়েছেন, এটা কেন চান? জবাবে দুদক আইনজীবী বলেন, এটার প্রয়োজন পড়ে। আদালত বলে, এটা কি কেউ অনুসরণ করে? জবাবে দুদক আইনজীবী বলেন, আমার ছেলে স্কলাস্টিকায় পড়ে। আমি তো সব তথ্যই রাখি। আদালত তখন বলে, আপনি দুদকের আইনজীবী তাই হয়তো রাখেন। ৩৫ বছর আগে কেউ একজনের ছেলে প্রাইমারী স্কুলে পড়েছে, তার হিসাব কি কেউ রাখে? আপনি এমন একটা তথ্য চাচ্ছেন যা অবাস্তব। বিভিন্ন ব্যক্তি একজন মসজিদ, মাদ্রাসা, ক্লাবে চাঁদা দেয় সেটার রশিদ কি কেউ রাখে? মোটা অঙ্কের টাকা দিলে কেউ হয়তো হিসাব রাখতে পারে। সামান্য অঙ্কের টাকা দিলে কি কেউ রাখে? জবাবে দুদক আইনজীবী বলেন, স্বচ্ছতার স্বার্থেই রাখা প্রয়োজন এবং দুদক সেটা চেয়ে থাকে। এ সময় আদালত বলে, কেউ সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যয় করল সামান্য টাকা সেটার হিসাব রাখতে হবে? দুদকের আইনজীবী তখন একই জবাব দেন। এ সময় আদালত বলে, কবে কত টাকার বাজার করলাম, মুরগি কিনলাম তিনশ’ টাকায়, মাছ কিনলাম চারশ’ টাকায় এরকম দৈনন্দিন বাজারের হিসাবও রাখতে হবে? তদন্ত করার অনেক পদ্ধতি আছে তাই বলে কি এভাবে! এটা অবাস্তব! বাস্তবতার নিরিখে বিষয়টি দেখুন। আপনারা ব্যাংক এ্যাকাউন্টের হিসাব চাইছেন সেটা চাইতেই পারেন। তবে তথ্য ফরমেট ৬, ৭, ১১ ও ১২ ক্রমিকে যা চাচ্ছেন তা বাস্তবসম্মত না। এ সময় দুদক আইনজীবী বলেন, এই ফরম নিয়ে আদালতের অভিমত কমিশনকে জানানো হবে। এ সময় দুদকের আইনজীবী বলেন, এই ব্যক্তি (বিচারপতি জয়নুল আবেদীন) বিরুদ্ধে এখনও কোন মামলা হয়নি। তাই তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ তা সত্য নয়। দুদক মিডিয়া ট্রায়াল করে, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করে দুদক আইনজীবী বলেন, এটা কোন মিডিয়া ট্রায়াল না। সাংবাদিকরা তথ্য চাইলে দুদক তা দিতে বাধ্য। সাংবাদিকদের চাওয়ার প্রেক্ষাপটে দুদক সময় সময় তথ্য সরবরাহ করে থাকে। খুরশীদ আলম খান বিচারপতি জয়নুল আবেদীন সম্পর্কে বলেন, নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট বিচারপতি জয়নুল আবেদীন দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এই বিবরণী পাওয়ার পর দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে বেশ কিছু টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এগুলো আমেরিকা, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশে কিছু টাকা পাচার করেছেন তিনি। এর সত্যতা জানার স্বার্থেই এ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে চিঠি দেয় দুদক, সেই চিঠির এখনও জবাব পাওয়া যায়নি। তবে সার্বক্ষণিকভাবে দুদক এ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছে। তিনি বলেন, বিদেশে পাচার করা অর্থের তথ্য খুব দ্রুত পাওয়া সম্ভব না। এ সময় খুরশীদ আলম খান অর্থপাচার রোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক একটি আইন উল্লেখ করে বলেন, যে প্রক্রিয়ায় এ তথ্য পাওয়া যায় তা সময়সাপেক্ষ। এগুলো প্রয়োজন পড়ে এ কারণে যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে সূক্ষ্মভাবে মিলিয়ে দেখার জন্য এবং সতর্কভাবে দেখার জন্যই সময় প্রয়োজন পড়ে। তখন আদালত বলে, এত সতর্কভাবে করছেন যে, একজন ব্যক্তিকে ১০ বছর ঝুলিয়ে রেখেছেন। অনুসন্ধানের নামে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। আবার আপনারা মিডিয়াকেও তথ্য দেন ওই ব্যক্তি সম্পর্কে। এভাবে চললে তো মিডিয়া ওই ব্যক্তিকে শেষ করে ফেলবে। তাই এই প্রক্রিয়ায় আপনারা অনুসন্ধান না করে যাকে নোটিস দেবেন তাকে নোটিস দেয়ার আগে তার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে নেবেন। তাহলে তো আর হয়রানির শিকার হতে হবে না। আদালত বলে, বিচারপতি জয়নুল আবেদীন সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন ২০১০ সালের ৮ আগস্ট। আর আপনারা সেই তথ্য জানার জন্য সুপ্রীমকোর্টকে চিঠি দিচ্ছেন চলতি বছরের ২ মার্চ। এইটুকু তথ্য জানতে আপনাদের সাত বছর সময় লাগল। আপনারা তো ওই সময়ই সুপ্রীমকোর্টকে চিঠি দিতে পারতেন। জবাবে দুদক আইনজীবী বলেন, একটি মহৎ উদ্দেশে চিঠি দেয়া হয়েছে। একজন বিচারপতির সম্পদের হিসাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই সময় লেগেছে। আদালত এ সময় বলেন, আপনারা যদি এই গতীতে চলেন তাহলে দেখা যাবে আরেকটা তথ্যের জন্য ২০২৪ সালে গিয়ে আরেকটা নোটিস দিচ্ছেন। আসলে দুদক এক্সপ্রেসের মতো চলছে না দুদক চলছে কচ্ছপ গতীতে। জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সময় লাগবে। রাতারাতি কিছু হবে না। এ সময় আদালত বলে, একটি লোককে সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস দিলেন ১০ বছর আগে, আপনারা ১০ বছর ধরে অনুসন্ধান করতে থাকলেন। যে ব্যক্তির বিষয়ে অনুসন্ধান করতে থাকলেন সে ব্যক্তির অবস্থাটা কি দাঁড়াল? তার যদি ডায়াবেটিক নাও থেকে থাকে তাহলে আপনাদের অনুসন্ধানের কারণে ডায়াবেটিক হয়ে যাবে, প্রেশার না থাকলে প্রেশার হয়ে যাবে। একটি লোক প্রতিদিন ঘুমানোর আগে এবং ঘুম থেকে ওঠার পর যদি চিন্তা করে দুদক তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে তাহলে এর চেয়ে মানসিক হয়রানি আর কী আছে? একটা সময় হয়তো এই লোক হার্ট এ্যাটাক করবেন। এরপর এ্যামিকাস কিউরি এ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন। তিনি বলেন, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। সে দৃষ্টিতে কোন ব্যক্তি দায়মুক্তি পেতে পারে না। সাবেক বিচারপতির ক্ষেত্রে আলাদা বলে কোন আইন নেই। তাই সুপ্রীমকোর্টের এই চিঠি সংবিধান এবং আইন বহির্ভূত। সুপ্রীমকোর্ট চিঠিতে যে ভাষা ব্যবহার করেছে তা আইন বহির্ভূতভাবে করা হয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠান এভাবে বলতে পারে না। এসময় আদালত তার কাছে জানতে চান, সুপ্রীমকোর্টের এই চিঠির বিচার করার এখতিয়ার হাইকোর্টের আছে কিনা। জবাবে প্রবীর নিয়োগী বলেন, এটা প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক আদেশ। সুতরাং কোন প্রশাসনিক আদেশের বিচার করার এখতিয়ার হাইকোর্টের রয়েছে। আরেক এ্যামিকাস কিউরি এএম আমিনউদ্দিন বলেন, সুপ্রীমকোর্ট আইনগতভাবে এ ধরনের চিঠি দিতে পারে না। প্রধান বিচারপতি হলেও এ জাতীয় অভিমত তিনি দিতে পারেন না। একজন বিচারপতি দায়মুক্তি পেতে পারেন না। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জনতা টাউয়ার মামলার উদাহরণ টেনে বলেন, এই মামলায় এরশাদের সাজা হয়েছে। আপীল বিভাগ সে সাজা বহাল রেখেছে। তিনিতো রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় প্লট বরাদ্দ নিয়ে একটি আদেশ দিয়েছিলেন। সে আদেশের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, যেটি জনতা টাউয়ার মামলা নামে পরিচিত। এই মামলায় একজন রাষ্ট্রপতিকেউ দায়মুক্তি দেয়া হয়নি। তাই একজন বিচারপতি যদি অপরাধ করে থাকেন তবে তিনি দায়মুক্তি পেতে পারেন না। এর আগে গত ৯ অক্টোবর আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোঃ জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সুপ্রীমকোর্টের দেয়া চিঠি কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। ১৯ অক্টোবর রুলের ওপর প্রথম শুনানি হয়। দুদককে গত ২৮ মার্চ সুপ্রীমকোর্টের দেয়া চিঠিটি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান তরফদার। এরপর আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে। রুলে ওই চিঠি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, দুদক চেয়ারম্যান, আপীল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী ও বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে দশ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। গত ৫ ও ১৭ জুন ‘সাবেক বিচারপতির দুর্নীতি তদন্তে সুপ্রীমকোর্ট প্রশাসনের বাধা!’ এবং ‘সাবেক এক বিচারপতির দুর্নীতি তদন্তে থেমে নেই দুদক’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দৈনিক জনকণ্ঠে। এরপরই আলোচনায় আসে এই চিঠি। দুর্নীতি বন্ধে সুপ্রীমকোর্টের এমন চিঠি নিয়ে উত্তপ্ত হয় সংসদও। সাবেক দুই প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রীমকোর্ট প্রশাসনের এই নির্দেশনা মানতে বাধ্য নয় দুদক। বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে দুদকের চাহিদা অনুযায়ী বিচারপতি জয়নুলের কর্মজীবন সংক্রান্ত নথিপত্র দুদকে পাঠায় সুপ্রীমকোর্ট প্রশাসন। আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে জনকণ্ঠে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিনও নেন বিচারপতি জয়নুল আবেদীন। পরে সুপ্রীমকোর্টেও তা বহাল থাকে। এদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রীমকোর্টের দেয়া রায় নিয়ে গত ৯ জুলাই সংসদে ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যে বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের প্রসঙ্গটিও আসে। জনকণ্ঠের ওই প্রতিবেদনগুলো উদ্ধৃত করে প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করতে গিয়ে এ বিষয়টি তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘ওই চিঠি দেয়ার মাধ্যমে বিচারপতি এসকে সিনহা ন্যায়বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন, যা দ-বিধির অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি সুপ্রীমকোর্টের নাম শুধু ব্যবহারই করেননি, তিনি সুপ্রীমকোর্টের প্যাডও ব্যবহার করেছেন, যদিও এটা ছিল তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’ উল্লেখ্য, মোঃ জয়নুল আবেদীন ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরে ২০০৯ সালে আপীল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে অবসরে যান তিনি। আলোচিত এ বিচারপতি ২০০৪ সালে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত বলে তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টাও করেছিলেন বলে জানা গেছে। আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোঃ জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস দেয় দুদক। দুদকের দেয়া নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি জয়নুল আবেদীন ২০১০ সালের ২৫ জুলাই হাইকোর্টে একটি রিট আবেদনও করেছিলেন। রিটের ওপর শুনানি গ্রহণের পর বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ও বিচারপতি কাজী রেজাউল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি বিবেচনায় খারিজ করে দেয়।
×