ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জলরং আশ্রিত চিত্রকর্ম প্রদর্শনী জলকেলি

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

জলরং আশ্রিত চিত্রকর্ম প্রদর্শনী জলকেলি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রং-তুলির আঁচড়ে বর্ণিত হয়েছে বহুবিধ বিষয় আর সব চিত্রকর্ম সৃজিত হয়েছে জলরঙের আশ্রয়ে। প্রদর্শনালয়জুড়ে শোভা পাচ্ছে চারপাশের চেনা জগত। সেখানে আছে নিসর্গ থেকে যাপিতজীবনের দৃশ্যকাব্য। রাজশাহীর বরেন্দ্রভূমি থেকে দর্শনার্থী চোখ ফেরালে সেই নয়ন দৃষ্টিবদ্ধ হয় নদী ও নৌকার ওপর। চিত্রপট ধরে এগিয়ে গেলে ধরা দেয় পাবর্ত্য জেলা বান্দরবানের নিসর্গ কিংবা চিরচেনা কোন ঘরের উঠান। বাদ যায়নি পুরান ঢাকার দৃশ্যপট। চারুকলা অনুষদের দুই নং জয়নুল গ্যালারিতে দেখা মিলবে এসব ছবির। চিত্রকর্মগুলো এঁকেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা পাঁচশিল্পী। জলরঙে আঁকা সেসব ছবি নিয়ে সাজানো যৌথ এ প্রদর্শনীর শিরোনাম জলকেলি। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী পাঁচশিল্পী হলেন সুমন কুমার সরকার, শেখ ফাইজুর রহমান, সৈকত হোসেইন, অজয় সান্যাল ও শিপ্রা বিশ্বাস। চিত্রকর্মগুলো পরিচয় দেয় তরুণ শিল্পীদের প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বর্ষের পর এই শিল্পীদের জলরঙে কাজ করার বাধ্যবাধকতা ছিল না। তবে ভালবাসার তাগিদে জলরঙের প্রতি ধাবিত হয়েছেন তারা। বিষয় নির্বাচনে বেছে নিয়েছেন প্রকৃতি ও নগরকে। চিত্রকর্ম সৃজনে ব্রতী হয়েছেন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায়। ধাবিত হয়েছেন বৈচিত্র্যময়তার প্রতি। মঙ্গলবার বিকেলে প্রদর্শনী প্রাঙ্গণে কথা হয় অজয় সান্যালের সঙ্গে। চিত্রকর্ম সৃজনে নিসর্গের ভূমিকা উল্লেখ করে এই বলেন, প্রকৃতি হচ্ছে শিল্পী গড়ার কারিগর। প্রকৃতির সান্নিধ্য না চর্চার জায়গাটিতে ঘাটতি রয়ে যায়। নিসর্গের সঙ্গে মিশে যেতে না পারলে তৈরি হয় না শিল্পীসত্তা। গড়ে ওঠে না আত্মিক সংযোগ। তাই শিল্প নির্মাণে আমরা প্রত্যেকেই আশ্রয় নিয়েছি প্রকৃতির। দেশের নানা প্রান্ত ঘুরে মনের দাগ কাটা বিষয়গুলোকে রূপ দিয়েছি ক্যানভাসে। আঙ্গিনা নামের চিত্রকর্মে গ্রাম-বাংলার চিরচেনা কুঁড়েঘর এঁকেছেন সুমন কুমার সরকার। মাটি ও পাতায় গড়া সেই ঘরের সামনে ছড়িয়ে-ছিড়িয়ে আছে কলসি, হাঁড়িসহ নানা কিছু। এই শিল্পীর আরেক ছবিতে উঠে এসেছে বান্দরবানের রুমা বাজার। নদী ও নৌকার সিরিজ ছবি এঁকেছেন শেখ ফইজুর রহমান। আপন আঙ্গিনা নামের ছবিতে বাড়ির পাশের ঝোপঝাড়-লতাপাতা, ঝুড়িসহ বিভিন্ন অনুষঙ্গ মেলে ধরেছেন সৈকত হোসেইন। পাহাড়ের বুক চিড়ে আবির্ভূত হয়েছে মেঠোপথ। সেই পথের ধারে বৃক্ষছায়ার মাঝে দেখা দিয়েছে বসতবাড়ি। পর্বত শিরোনামের এই ছবিটি এঁকেছেন অজয় সান্যাল। পুরনো শহরের ছন্দ নামের ছবিতে এই শিল্পী তুলে ধরেছেন পুরান ঢাকার ব্যস্ত জীবনের চিত্র। সেখানে সড়ক ধরে ছুটছে মানুষ, অট্টালিকার ভেতর দিয়ে উঁকি দিচ্ছে সারি সারি তার কিংবা ঠেলাগাড়িতে করে পণ্য পরিবহনের দৃশ্য। নিসর্গ আবৃত রমনা পার্কের ছবি এঁকেছেন শিপ্রা বিশ্বাস। সেই সঙ্গে এই শিল্পী মেলে ধরেছেন নান্দনিক স্থাপনার সাক্ষ্যবহ ময়মনসিংহের রাজবাড়ি। পাঁচ শিল্পীর ৩৫টি চিত্রকর্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে এ প্রদর্শনী। সোমবার সূচনা হওয়া প্রদর্শনী চলবে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। জাভেদ-শাবানা দম্পতির নাটক আজ ॥ বলিউডের খ্যাতনামা দম্পতি গীতিকবি জাভেদ আখতার ও প্রখ্যাত অভিনেত্রী শাবানা আজমি। আজ বুধবার ঢাকার মঞ্চে প্রথমবারের মতো ‘কাইফি অওর ম্যায়’ শিরোনামের একটি বিশেষ নাটকে অভিনয় করবেন তারা। সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটি মঞ্চস্থ হবে রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকার কৃষিবিদ কমপ্লেক্স অডিটরিয়ামে। জাভেদ আখতার-শাবানা আজমির নাটকের পাশাপাশি এ আয়োজনে গজল পরিবেশন করবেন জসিন্দর সিং। এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ব্লুজ কমিউনিকেশনস। জানা গেছে, শাবানা আজমির পিতা কবি কাইফি আজমির জীবনীনির্ভর মঞ্চনাটক এটি। কবি কাইফি আজমিকে নিয়ে শওকত কাইফির বই ‘ইয়াদ কি রেহগুজার’ থেকে নাটকটি রচনা করেছেন জাভেদ আখতার। মঞ্চে জাভেদ আখতার ও শাবানা আজমির কথোপকথনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে নাটকটির গল্প। ব্লুজ কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদুল ইসলাম জানান, নাটকটির টেকনিক্যাল টিম ইতোমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। আজ সকালে ভারত থেকে ঢাকায় পৌঁছবেন জাভেদ-শাবানা দম্পতি। বিশেষ আয়োজনটি জন্য দুই ধরনের টিকেটের মূল্য ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ও দুই হাজার টাকা। প্রদীপ্ত ৫০- এ তপন বাগচী ॥ ড. তপন বাগচী একাধারে লেখক, গবেষক ও গীতিকবি। কর্মজীবনে বাংলা একাডেমির উপপরিচালক। দিন কয়েক আগে তিনি পা রেখেছেন ৫০-এ। এ উপলক্ষে ‘তপন বাগচী প্রদীপ্ত ৫০’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গীতিসূত্র ও স্বপ্নকুঁড়ির আয়োজনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তিকলা মিলনায়তনে এ আয়োজন বসে। যাতে তপন বাগচীকে নিয়ে কথনের পাশাপাশি ছিল কবিতা, সঙ্গীত ও নৃত্যের আয়োজন। এই আয়োজনের শুরুতেই ছিল কথন পর্ব। এতে তপন বাগচীকে নিয়ে কথা বলেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি বিমল গুহ, কবি কাজী রোজী এমপি, শিল্পী অনিমা মুক্তি গমেজ, গোলাম কিবরিয়া পিনু, শ্যামা প্রসাদ ঘোষ, নীলাদ্রিশেখর সরকার ও বীরেন মুখার্জী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জন্মদিন উদ্যাপন কমিটির সদস্য সচিব সঞ্জয় রায়। বক্তারা বলেন, তপন বাগচী বহু গুণে গুনান্বিত একজন মানুষ। সাহিত্যের ক্ষেত্রে যেমন প্রচুর কাজ আছে, ঠিক একইভাবে তিনি প্রচুর গবেষণাকধর্মী কাজ করেছেন। লোকসাহিত্য, কবিতা, গান সব জায়গাতেই তার দীপ্ত পদচারণা। এর আগে মাশুক হেলালের আঁকা তপন বাগচীর একটি পোর্ট্রেট লেখকের হাতে তুলে দেন বীরেন মুখার্জি। এই আয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগতভাবে তপন বাগচীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। ‘ভালোবাসো মোর গান’॥ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের রমেশচন্দ্র দত্ত মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো ‘ভালোবাসো মোর গান’ শীর্ষক সঙ্গীতানুষ্ঠান। নজরুলসঙ্গীতে সাজানো এ সঙ্গীতাসরের আয়োজন করে বাংলাদেশ নজরুলসঙ্গীত সংস্থা। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশের প্রতিষ্ঠিত ও প্রতিশ্রুতিশীল নজরুলসঙ্গীত শিল্পীরা। এ আয়োজনে গান শোনান খিলখিল কাজী, শামীমা পারভীন শিমু, শহীদুল ইসলাম খান, বিজনচন্দ্র মিস্ত্রী, মাহমুদুল হাসান, এলবার্ট অনিমেষ দাস, প্রতিভা কুন্ডু, তাপসী রায় প্রমুখ ।
×