ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নীলার উদ্যোগে নারীর ডিজিটাল ক্ষমতায়ন

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

নীলার উদ্যোগে নারীর ডিজিটাল ক্ষমতায়ন

চাকরি করেছেন নয় বছরের বেশি। হঠাৎ একদিন বাবা ডেকে বললেন, ‘দেশের জন্যও কিছু কর।’ এরপর বদলে নিলেন গতিপথ, নারীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়ার হার রোধ করতে প্রতিষ্ঠা করলেন ‘ওমেন ইন ডিজিটাল।’ বর্তমানে তিনি দেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে কাজ করছেন ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে, আজকের ডিপ্রজন্মে তার সাক্ষাতকারে উঠে এসেছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সাক্ষাতকার নিয়েছেন- বেনজির আবরার ডিপ্রজন্ম : আছিয়া খালেদা নীলার মুখে শুনতে চাই তার পরিবারের কথা- নীলা : আমি আছিয়া খালেদা নীলা, প্রতিষ্ঠাতা ওমেন ইন ডিজিটাল। আমাদের পরিবারকে যৌথ পরিবার বলা যায়, যদি পরিবার এর কথা বলতে হয় তাহলে সবার কথাই বলতে হবে। আমরা এখনও ফুফু, খালা, মামা সবার সঙ্গেই মিলেমিশে আছি, পুরো পরিবারের সব সদস্যই যার যার জায়গাতে প্রতিষ্ঠিত। যেহেতু পরিবার অনেক বড় সেহেতু সবার কথা তো বলা সম্ভব না, তাই ছোট করে বলার চেষ্টা করছি, আমার পরিবারে আছে আমার বাবা, মা, এক ভাই, এক বোন। আর আমার স্বামী আর শাশুড়ি এবং মা। আমার বাবা, ভাই আর স্বামী ৩ জনই ব্যবসায়ী কিন্তু সবারই আলাদা ব্যবসায়। বোন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছে একটি বহুমুখী প্রতিষ্ঠানে। আমার মা আগে স্কুল টিচার ছিলেন, এখন মা এবং শাশুড়ি মা দুজনই গৃহিণী। আমি আমার জীবনে যতটুকু এগোতে পেরেছি পুরোটাই আমার পরিবারের জন্য, তাদের সমর্থন ছাড়া এতকিছু করা কখনও সম্ভব হতো না। আমি সর্বশেষ নয় বছরেরও বেশি চাকরি করেছি এবং আমার বেতনও ৬ সংখ্যার ঘরে ছিল। আমি আমার শিক্ষা জীবনের ২য় বর্ষ থেকে চাকরি শুরু করি। আমার ব্যবসায়ে আসার পেছনে আমার বাবার অবদান সব চেয়ে বেশি, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমাকে বলেছেন আমি তোমাকে ইঞ্জিনিয়ার বানিয়েছি, কিন্তু তুমি এখন দেশের জন্য কিছু কর। আর সেই থেকে শুরু... ডিপ্রজন্ম : বর্তমানে যেসব কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন- নীলা : বর্তমানে আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে আমার প্রতিষ্ঠান ওমেন ইন ডিজিটালের কাজ, এছাড়া কাজ করছি ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঞবষবপড়সসঁহরপধঃরড়হ টহরড়হ (ওঞট) এর একজন ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ওঞ ঊীঢ়ধৎঃ হিসেবে। বাংলাদেশ থেকে আমি প্রথম এই পজিশনের জন্য সিলেক্ট হয়েছি। আমার আগে কোন বাংলাদেশি ছেলে বা মেয়ে এখানে কাজ করেনি, আমি আমার কাজের প্রথম ধাপ হিসেবে শ্রীলঙ্কায় প্রথম মিশন শেষ করেছি। যেখানে আমি ২০০ ছাত্রছাত্রী, ৭০ জন কর্মজীবী এবং অন্যান্য মানুষদের ট্রেনিং করিয়েছি। আমার ট্রেনিং বিষয় ছিল- ‘ঊফঁপধঃরড়হ, ঝশরষষং ধহফ ঈধৎববৎ উবাবষড়ঢ়সবহঃ, ইধংবফ ড়হ ওঞ’ ‘ওঞ ঢ়ৎড়ফঁপঃ ফবাবষড়ঢ়সবহঃ চৎড়পবংং’ ‘খবধহ ংঃধৎঃঁঢ় সবঃযড়ফড়ষড়মু ’ এবং ‘ঊসঢ়ড়বিৎরহম ঝগঊং ঃযৎড়ঁময ঊ-ঈড়সসবৎপব’. ওঞট থেকে আমরা শ্রীলঙ্কায় একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রজেক্ট শুরু করেছি। বাংলাদেশেও কিছু প্রজেক্টের প্ল্যান আছে বিটিআরসির সঙ্গে কথা চলছে। আশা করি বাংলাদেশ ও ভাল কিছু করব ওঞট থেকে। এছাড়া ও বিভিন্ন প্রাইভেট এবং সরকারী প্রজেক্টের কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছি। মেন্টর হিসেবে আছি বেশকিছু লোকাল এবং ইন্টারন্যাশনাল স্টার্টআপে। আমি এক সঙ্গে অনেক কিছু করতে চাই না, ভাল কিছু কাজ করব যেগুলোর আসলেই প্রয়োজন আছে। ডিপ্রজন্ম : ওমেন ইন ডিজিটাল সম্পর্কে জানতে চাই- নীলা : অনেকেরই ধারণা আমরা হয়ত মেয়েদের কোন সংগঠন অথবা এনজিও। আসলে আমরা কোনটাই না। ওমেন ইন ডিজিটাল একটি সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ, আমাদের ১৫ জন ইন হাউস ডেভেলপার আছে আমাদের হেড অফিসে। আর ১০ জন ডেভেলপার আছে যারা আমাদের সঙ্গে পার্ট টাইমার হিসেবে কাজ করে। আমরা মূলত ওঞ চৎড়ফঁপঃ ফবাবষড়ঢ় করে থাকি ইন্টারন্যাশনাল ক্লায়েন্টের জন্য যেমনÑ ঙহষরহব ঝড়ভঃধিৎব, ডবন ধঢ়ঢ়ষরপধঃরড়হ, গড়নরষব ধঢ়ঢ়ষরপধঃরড়হ ্ মধসব ফবাবষড়ঢ়সবহঃ. মৎধঢ়যরপ ফবংরমহ ধহফ ংড়ভঃধিৎব ঃবংঃরহম এর কাজ করে থাকি। আমাদের সব ডেভেলপারই মহিলা, এছাড়া আমরা বিভিন্ন বিষয়ের উপর ট্রেনিংও দিয়ে থাকি। শুধু মেয়েদের কম খরচে। যারা আমাদের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়ে থাকে আমরাই তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে থাকি আমাদের নিজেদের অফিসে এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে। আমরা বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছি। যেমন- ১. প্রযুক্তি মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন। ২. ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং (পাথফাইন্ডার)- আমাদের একটা এ্যাপ্লিকেশন। যেখানে বিশেষজ্ঞদের কাছে সরাসরি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যায় টেকনোলজির বিভিন্ন বিষয়ের উপর এবং আমাদের বিশেষজ্ঞরা সে সকল প্রশ্নের জবাব দিয়ে থাকেন। কারও যদি ক্যারিয়ার সম্পর্কে কিছু জানার থাকে তারাও এই এ্যাপ্লিকেশনে প্রশ্ন করতে পারে। ৩. ক্যারিয়ার সেন্টার- নারীদের জন্য একটি নিখুঁত অনলাইন নিয়োগের হাব। এখানে শুধু মেয়েদের জন্য এ চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়ে থাকে। ৪.ওমেন ইন ই-কমার্স- ব্যবসাই মহিলাদের জন্য একটি অনলাইন বাজার। ৫. ট্রেনিং এবং ওয়ার্কশপ- দক্ষতার উন্নতির উপর ফোকাস করে ডিজিটাল সরঞ্জামগুলোর ভাল ব্যবহার বা প্রযুক্তি বিকাশের জন্য। ৬. মেন্টরিং সাপোর্ট- ভবিষ্যতের ডিজিটাল নেতারা মূল্যবান পরামর্শদান পরিষেবাগুলোর মাধ্যমে তাদের কর্মজীবন, শুরু বা ব্যবসাটি পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও প্রদান নিশ্চিত করবেন। ৭. মহিলাদের জন্য প্রতিযোগিতা- ‘Digital Innovation Challange for Women' ÔNational Hackathon for Women' 8. Community Lead - শহুরে এবং গ্রামে আমরা কিছু প্রতিনিধি নির্বাচন করে থাকি। কারণ আমরা গ্রাম কে ফোকাস করেই বেশি কাজ করি আমরা বিশেষ করে থাকি যে গ্রামগুলো উন্নয়ন হলে এ শহর অটো উন্নতি হয়ে যাবে। আমাদের এই প্রতিনিধিরাই আমাদের কার্যক্রম পুরো বাংলাদেশে চালিয়ে থাকে। ৯. মহিলা উদ্যোক্তা উন্নয়ন আমরা যেহেতু মহিলাদের টেকনোলজিতে করতে চাইছে, সেহেতু তাদের ব্যবসার উন্নতির জন্য টেকনোলজি কিভাবে সাহায্য করতে পারে আমরা তাদের সে বিষয়ে সাপোর্ট এবং ট্রেনিং দিয়ে থাকি। ১০. জ্ঞান ভাণ্ডার : বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল লেখক আমাদের জন্য বিনা পয়সায় লিখে থাকেন। আমরা যখনি কোন বিষয়ে বুঝে না থাকি তখন তারা আমাদের ওই বিষয়ের উপর লিখে দেন যেটা আমরা আমাদের কমিউনিটিতে শেয়ার করে থাকি। ১১. ঝযবঋড়ৎঐব : আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রাম এবং শহরে কাজ করে থাকি। আমরা এমন কিছু গ্রামে কাজ করেছি সেখানে ছেলেরাই টেকনোলজি সম্পর্কে জানে না। মেয়েদের তো ভাবাই যায় না। কিন্তু আমরা যখন মেয়েদের ট্রেনিং করানো শুরু করি তখন অনেক ছেলে রা আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চায়। তখন যদি ওদের হেল্প না করতে পারি তাহলে অনেক খারাপ লাগে। তাই এই বিষয়টি মাথায় রেসিকে আমরা ঝযবঋড়ৎঐব কার্যক্রমটি হাতে নেই এবং যেসব ছেলেমেয়েদের তত্ত্বাবধানে কাজ করতে সমস্যা নেই সে রকম ১০% ছেলেকে আমরা আমাদের সঙ্গে কাজের সুযোগ দেই। ১২. সাফল্য গল্প : আমাদের কমিউনিটিতে যারা ভাল কাজ করে তাদের আমরা বিভিন্নভাবে প্রমোট করি লোকালয় এবং ইন্টারন্যাশনালি। পুরো বাংলাদেশে ১৮টি জেলায় আমাদের কাযক্রম চলছে। দেশের বাহিরে ৫টি দেশে আমাদের চ্যাপ্টার আছে। যেখানে আমাদের প্রতিনিধিরা কাজ করে থাকে। সেগুলো হলোÑ নেপাল, ইন্ডিয়া, জার্মান, অস্ট্রেলিয়া এবং সুইডেন। শ্রীলঙ্কায়ও চালু করার পরিকল্পনা আছে, পাঁচ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি মহিলা আমাদের নেটওয়ার্কও আছে। যার মধ্যে তিন শতাধিক মহিলা আমাদের মাধ্যমে আয় শুরু করেছে। ডিপ্রজন্ম : মাইক্রোসফট এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা যেভাবে কাজে লাগাচ্ছেন- নীলা : আইসিটি মন্ত্রণালয় আমাদের ‘ন্যাশনাল হ্যাকাথন ফর ওমেন’ এ সমর্থন দিয়েছিল। তখন ওই সাপোর্ট তা না পেলে আমরা হয়ত এত সুন্দরভাবে হ্যাকাথন শেষ করতে পারতাম না, কারণ হ্যাকাথন শেষ হওয়ার আট মাস আগে থেকে আমরা ক্যাম্পেইন শুরু করি এবং হ্যাকাথনে ১৫০০ মেয়ে সারা বাংলাদেশ থেকে আবেদন করে, তাই এত মেয়ের জায়গা করাটা আমাদের জন্য সম্ভব ছিল না। ব্যাপারটা আমরা আইসিটি মন্ত্রণালয়ে জানাই এবং তারা আমাদের সাপোর্ট করেন।বর্তমান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এতে সরাসরি তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেন। মাইক্রোসফট আমাদের ‘Digital Innovation Challenge for women 2017’ য়ে পুরোপুরি সমর্থন করেছে। মাইক্রোসফটের বাংলাদেশ প্রধান সোনিয়া আপু অনেক সহযোগী ভাবাপন্ন। উনি সবভাবেই সাপোর্ট করার চেষ্টা করেছেন। প্রতিযোগীদের জন্য ২টি আলাদা করে মেন্টরিং সেশন নিয়েছেন, যেটা আসলেই আমরা আশা করিনি। আপু অনেক কাজে ব্যস্ত থাকেন তা আমরা সবাই জানি। তার মাঝেও আমাদের অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন। সব চেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে প্রতিযোগীরা সবাই আপুর অনেক বড় ভক্ত হয়ে গেছে কারণ উনি ওদের অনুমতি দিয়েছেন তার কাছে যাওযার জন্য। আমাদের দেশে খুব কম মানুষরাই এই সুযোগ তা দেন সাধারণ মানুষদের। ভবিষ্যতে আরও কাজ করার ইচ্ছা আছে তাদের সঙ্গে। ডিপ্রজন্ম : নারীদের অগ্রযাত্রায় আইসিটি খাতে এগিয়ে নিয়ে যাবার চিন্তা প্রথম কবে মাথায় আসল এবং কেন? নীলা : আমি একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। ব্যাবসায়ে আসার আগে আমি চাকরি করতাম। তখন আমি একটা কমন ব্যাপার খেয়াল করেছি মেয়েরা কেন জানি টেক নিয়ে কাজ করতে চায় না, আবার কেউ যদি আসেও বেশি দিন থাকেও না। কারণ অফিসগুলো মেয়েদের টেক রিলেটেড সব কাজে যুক্ত করতে চায় না। সব সময় দূরভাবাপন্ন মনোভাব পোষণ করে। তাদের ধারণা টেকনোলজি একমাত্র ছেলেরাই বুঝে! যার কারণে যারা বের হয়ে আসে তারা ও কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। খুব কম মেয়ে আছে যে কিনা নিজের অবস্থান এর জন্য ফাইট করতে পারে। আমি আজ যা করতে পেরেছি তা একমাত্র আমি ভয়েস রাইজ করেছি বলেই পেরেছি।সব মেয়েরা তা পারে না, করেও না। সে জন্যই মেয়েদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছাটা মাথায় আসে। আইডিয়াটা নিজেকে দেখে নিজের চারপাশটা দেখেই মাথায় আসে, তার উপর বাবার আদেশ দেশের জন্য কিছু কর। দেশের তো ৫০% মানুষই নারী। তারা যদি টেকনোলজিতে পিছিয়ে থাকে তাহলে তো ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে না। ৫০% পুরুষ মানুষ দিয়ে আর ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে না। সে থেকেই ২০১৩ থেকে নীরবে এই বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। মেয়েরা টেকনোলজি পারে আমরা তা দেখিয়ে দিব পৃথিবীকে। ডিপ্রজন্ম : সাফল্যগুলোর কথা শুনতে চাই- নীলা : সাফল্য বলতে আমি শুধু কিছু লোকাল ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড পেলাম আমি তা মনে করি না। আমার কাছে সফলতা তখনি মনে হয় যখন কোন একজন গ্রামের খালা আমাকে ফোন করে বলে আমার প্রোডাক্ট এর ছবি তুলতে কবে আসবে, ডিজিটাল মার্কেটিং কবে থেকে আমরা শুরু করব, আজ ফেসবুক থেকে ৫টা আর ওয়েবসাইট থেকে ২টা অর্ডার পেয়েছি। অথবা কোন একজন প্রতিযোগী যখন বলে ওমেন ইন ডিজিটাল এর জন্যই জীবনে আমি প্রথমবার ঢাকা এসেছি। অথবা আমি আগে শুধু ঝঊঙ পারতাম এখন আমি ওয়েবসাইট ডেভেলপ করতে পারি, অথবা আমার আয় বেড়েছে। এগুলোই আমাদের সফলতা।
×