ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ আশরাফের স্ত্রী শীলা ইসলামের ইন্তেকাল

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

সৈয়দ আশরাফের স্ত্রী শীলা ইসলামের ইন্তেকাল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সহধর্মিণী শীলা ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় লন্ডনের এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের ইউসিএলএইচ ইউনিভার্সিটি কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। সৈয়দ আশরাফের চাচাত ভাই কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের জানান, মরহুমার মরদেহ দেশে আনা হবে কি-না তা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মৃত্যুকালে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, তাদের একমাত্র মেয়ে রিমা ইসলাম ও পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। শীলা ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকবার্তায় তারা মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। পরিবার সূত্র জানায়, শীলা ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলেন। এর আগে জার্মানির একটি হাসপাতালে তার কেমোথেরাপিসহ ক্যান্সারের কয়েক ধাপ চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে আবারও তাকে লন্ডনে নেয়া হয়। তিন মাসে আগে লন্ডনের একটি হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ শীলা ইসলামকে ভর্তি করা হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তাকে লন্ডনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাসা থেকেই তিনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শনিবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় সোমবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন শীলা ইসলাম। উল্লেখ্য, লন্ডনে একটি গুজরাটি পরিবারে জন্ম নেয়া শীলা ইসলাম লন্ডনের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যাম থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেন। পরে তিনি লন্ডনের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করে অবসর নেন। সৈয়দ আশরাফ ও শীলা ইসলামের একমাত্র মেয়ে রিমা ইসলামও লন্ডনে থাকেন। তিনি লন্ডন এইচএসবিসি ব্যাংকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তার পরিবারের সদস্যরাও দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন।স্বামী দেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী। শ্বশুর ছিলেন দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের বধূ হলেও শীলা ইসলাম ছিলেন একেবারেই সহজ-সরল একজন নারী। খুবই সাদামাটা ও সহজিয়া ছিলেন তিনি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সহজেই মিশে যেতে পারতেন। পরিবার সূত্র জানায়, স্বামী দেশের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে শীলা ইসলাম মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে চলে আসতেন। ছুটে যেতেন তার স্বামীর নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জে। সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত না হয়ে কাজ করতেন বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। শিশুদের জন্য শীলা ইসলামের ছিল অন্যরকম এক ভালবাসা। কিশোরগঞ্জে গেলেই শিশুদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন তিনি। শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে চলে যেতেন বিভিন্ন স্কুলে। কারণ তিনিও এক সময় লন্ডনে শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সহধর্মিণী শীলা ইসলামের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে আরও শোকবার্তা পাঠিয়েছেনÑ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হাসিদ বিপু, জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ প্রমুখ। কিশোরগঞ্জ থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মহধর্মিণী শীলা ইসলামের মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট এমএ আফজালসহ আওয়ামী লীগ ও দলের সব সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনাও জানিয়েছেন।
×