স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘টার্গেট পূরণ হবে?’ ‘ইয়েস স্যার।’ বাংলাদেশী আরচারদের কাছ থেকে এমন কমিটমেন্টই আদায় করে নেয়া হলো সোমবার। অলিম্পিকে যদি বাংলাদেশ কোনদিন পদক যেতে, তাহলে সেটা জিতবে আরচারি বা শূটিং থেকেÑএমনটাই অভিমত ক্রীড়ামোদীদের। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে বাংলাদেশ ক্রীড়া দলকে পরিচয় করে দেয়া হয়েছিল ‘অলিম্পিকে কোন পদক না জেতা বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ’ বলে। এই অপমানের উপযুক্ত জবাব একমাত্র দিতে পারেন বাংলাদেশী আরচাররাই।
২০২০ টোকিও অলিম্পিকে লাল-সবুজের সাক্ষ্য রাখতেই তীরন্দাজদের প্রস্তুত করছে ‘তীর’ ও ‘বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন’। প্রাপ্তির খাতায় আমাদের অনেক কিছু থাকলেও কিছু কিছু স্বপ্ন এখনও অধরা। সে অধরাকে স্পর্শ করতে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘তীর’ এবার যুক্ত হলো বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সঙ্গে। সম্ভাবনাময় আরচারি দলের সঙ্গে প্রাইম স্পন্সর ও ডেভেলপমেন্ট পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয়ে তীর শুরু করল ‘গো ফর গোল্ড’। সোমবার বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের অডিটরিয়ামে সিটি গ্রুপের সঙ্গে একটি পাঁচ বছর মেয়াদী চুক্তিতে আবদ্ধ হয় আরচারি ফেডারেশন। সিটি গ্রুপের পক্ষে বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক শোয়েব মোঃ আসাদুজ্জামান এবং বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরচারি ফেডারেশনের সভাপতি লে. জেনারেল মইনুল ইসলাম (অব) এবং সহ-সভাপতি ও প্রশিক্ষণ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কমিটির আহ্বায়ক আনিসুর রহমান দিপু উপস্থিত ছিলেন। ‘গো ফর গোল্ড’ ভিশনকে সামনে রেখে নেয়া হয়েছে নতুন ও যুগান্তকারী কিছু উদ্যোগ। যার মধ্যে রয়েছে জেরা পর্যায়ে ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে তরুণ তীরন্দাজদের খুঁজে বের করা এবং তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেয়া। আন্তর্জাতিকভাবে সফল কোচ নিয়োগ প্রদান করে জাতীয় দল ও নতুন তীরন্দাজদের খুঁজে বের করা এবং তাদের দক্ষ দলে পরিণত করার পরিকল্পনাও রয়েছে। খেলোয়াড়দের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হচ্ছে ফিটনেস সেন্টার। প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং প্রতি বছর নির্দিষ্ট টার্গেট পূরণ করে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যাবে। এছাড়াও আরচারিকে বাংলাদেশে জনপ্রিয় করে তোলার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রমোশনাল ক্যাম্পেইনের পরিকল্পনা রয়েছে এই ভিশনে। আরচারদের স্কিল ও পয়েন্ট বাড়াতে এই পাঁচ বছরে তাদের ধাপে ধাপে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের পয়েন্ট টার্গেট হিসেবে সেট করে দেয়া হবে। আরচাররা সেই টার্গেট ছুঁতে পারলে স্পন্সরশিপের অর্থের পরিমাণ যেমন বাড়বে, তেমনি ছুঁতে না পারলে অর্থের পরিমাণ কমবে, এমনকি চুক্তি বাতিলও হয়ে যেতে পারে। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে তীর ও বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের উদ্যোগে টোকিও ২০২০ অলিম্পিকে পদক ও এশিয়ান গেমস ২০২২-এ স্বর্ণজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।