ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর জাপানের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার

উঃ কোরিয়ার ওপর চাপ বাড়াব

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

উঃ কোরিয়ার ওপর চাপ বাড়াব

উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হুমকি মোকাবেলায় চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানোর কথা বলেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। রবিবারের নির্বাচনে বিশাল জয় পাওয়ার পর তিনি এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। এএফপি। রবিবারের নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে জয়লাভের পর জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী আবে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী অবস্থানে রয়েছেন। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে যে শান্তিবাদী নীতি অনুসরণ করে এসেছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে চান আবে। যদিও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফল তাকে সংবিধান সংশোধনের মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছে কিন্তু আবে বলেছেন তিনি এ বিষয়ে জনমত গঠনের চেষ্টা করবেন। জাপানের জনমত এখনও এ বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত। নির্বাচনে জয়ের ঠিক পরপরই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবেলায় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন। এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে ট্রাম্প আগামী মাসে জাপানে যাবেন। এরপর এই ইস্যুতে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে আবে জানান। তিনি বলেন, মানুষের জীবনকে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস নিশ্চিত করার ইতোপূর্বেকার অঙ্গীকার আমি আবার পুনরুল্লেখ করছি। এবারের নির্বাচনের আগে তিনি ১২ দিন প্রচারাভিযান চালান। উত্তর কোরিয়া ছিল নির্বাচনী প্রচারাভিযানের প্রধান ইস্যু। এ নির্বাচনে আবে খুব সহজে জয় পেয়েছেন। উত্তর কোরিয়া এরই মধ্যে জাপানকে সাগরে ডুবিয়ে দেয়ার হুমকিসহ জাপানের ওপর দিয়ে দুবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপক জেরাল্ড কার্টিস বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধংদেহী ভাবভঙ্গি আবের বিশাল জয়ের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। পিয়ংইয়ংয়ের আচরণ জাপানের সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। তাই তারা জাতীয়তাবাদী মানসিকতা সম্পন্ন আবের দলকে ভোট দেয়। সিয়োশি উশিজিমা নামে পেনশনভোগী ৬৬ বছর বয়সী একজন ভোটার এএফপিকে বলেন, এবারের নির্বাচনে জাতীয় প্রতিরক্ষার দিকে আমার মনোযোগ নিবদ্ধ ছিল। কারণ উত্তর কোরিয়া নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম। এ কারণে আমি এমন দলকে বেছে নিয়েছি যারা বিষয়টি শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে পারবে। আবে বলেন, আমরা উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, পরমাণু ও অপহরণের মতো ইস্যুগুলো আমরা দৃঢ়ভাবে কূটনৈতিক পথ অনুসরণের মাধ্যমে সমাধান করব। ১৯৭০ ও ৮০ এর দশকে পিয়ংইয়ংয়ের হাতে জাপানী নাগরিক অপহরণের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি একথা বলছেন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনএইচকের দেয়া তথ্যমতে আবের নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন পার্লামেন্টে ৩১৩টি আসন পেতে চলেছে। পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষে আবের কোয়ালিশেনের দুই-তৃতীয়াংশ আসন পাওয়া এখন নিশ্চিত বলা যায়। মাত্র কায়েকটি আসনের ফল গণনা এখনও বাকি রয়েছে। আবে হতে যাচ্ছেন জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র। নির্বাচনে আবের দল ব্যাপক জয় পেলেও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এর জন্য আবেকে কৃতিত্ব দেয়ার বদলে কার্যকর বিরোধী অনুপস্থিতি এর কারণ উল্লেখ করেছে। নিক্কেই ডেইলি বলেছে, ভোটাররা মনে করেছে বিরোধী দল সরকার পরিচালনার উপযুক্ত নয়। তাই ক্ষমতাসীন কোয়ালিশন নিয়ে উদ্বেগ থাকার পরও তারা ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীকেই বেছে নিয়েছে। কারণ তাদের সামনে অন্য ভাল বিকল্প ছিল না। কিয়োডো নিউজের দেয়া রবিবার করা এক জরিপে দেখা গেছে, জাপানের ৫১ শতাংশ মানুষ আবেকে বিশ্বাস করে, ৪৪ শতাংশ তা করে। তারা পরিবর্তন চায় কিন্তু তাদের সামনে কোন বিকল্প ছিল না।
×