ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টাকার জন্য স্ত্রীকে আটকে রেখে নির্যাতন!

প্রকাশিত: ২২:২৩, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

টাকার জন্য স্ত্রীকে আটকে রেখে নির্যাতন!

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা) ॥ টাকার জন্য স্বামী খবির দফাদার দু’সন্তানের জননী স্ত্রী রিনা বেগমকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে অমানষিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাতে কলাপাড়া উপজেলা পশ্চিম চাকামইয়া গ্রামে। শনিবার বিকেলে আহত রিনা বেগমকে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় ভাই আবদুর রব উদ্ধার করে। পরে রবিবার রাতে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। জানাগেছে, আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামের আবদুল গনি হাওলাদারের কন্যা রিনা বেগমকে (৩২) কলাপাড়া উপজেলার পশ্চিম চাকামইয়া গ্রামের সোনামদ্দিন দফাদারের ছেলে খবির দফাদারের সাথে ১৯৯৭ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ভালোই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। ২০০৭ সালে স্ত্রী রিনা বেগম ঝিয়ের কাজের ভিসায় সৌদি আরব যায়। গত ১০ বছর রিনা বেগম সৌদি আরব ছিল। গত আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে আর সৌদি আরব যাবেনা মর্মে বাড়ীতে আসে। সৌদি আরবে উপার্জিত টাকা স্বামী খরিব দফাদারকে দেয়। এ টাকা দিয়ে স্বামী সাংসারিক ব্যয়সহ আধাপাকা বাড়ী নির্মাণ করে। কিন্তু বাড়ী নির্মাণ সম্পন্ন হয়নি। এদিকে স্বামীর সন্দেহ হয় স্ত্রী রিনা বেগম সৌদি আরবে উপার্জিত টাকা বাবার বাড়ীতে রেখে দিয়েছে। গত শুক্রবার সকালে খবির দফাদার স্ত্রী রিনার কাছে এক লক্ষ টাকা দাবী করে বাবার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। ওইদিন সন্ধ্যায় রিনা টাকা না নিয়ে বাড়ীতে আসে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়। এক পর্যায় ঘরের বাডাম (গাছের চ্যারা) দিয়ে অমানষিক নির্যাতন করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। এতে তার শরীরের বাম হাতের বাহু, দু’পায়ে জখম হয়। শনিবার বিকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোকলেসুর রহমান গাজী, দফাদার আবদুল আজিজ, আনসার কমান্ডার শাহজাহান ও তার (রিনা) ভাই আবদুর রব রিনাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। রবিবার রাত আটটার দিকে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সোমবার আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখাগেছে, রিনা বেগম শরীরের যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। তার বাম হাতের বাহু, দু’পায়ে কালো দাগ রয়েছে। আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিখিল চন্দ্র শীল বলেন তার বাম হাতের বাহু, দু’পায়ের রানসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। আমতলী সদর ইউপি দফাদার আবদুল আজিজ বলেন চাকামইয়া ইউপি সদস্য মোখলেসুর রহমান ও রিনার ভাইকে নিয়ে রিনাকে খবির দফাদারের বাড়ী থেকে উদ্ধার করেছি। নির্যাতিত রিনা বেগম বলেন আমি ১০ বছর সৌদি আরবে ঝিয়ের কাজ করে সমুদয় টাকা আমার স্বামীর হাতে তুলে দিয়েছি। কিন্তু এ টাকায় তিনি সšুÍষ্ট নয়। তিনি সন্দেহ করেন আমি টাকা আমার বাবার বাড়ীতে রেখে এসেছি। শুক্রবার সকালে আমাকে এক লক্ষ টাকার জন্য বাবার বাড়ীতে পাঠায়। আমি টাকা নিয়ে আসতে না পারায় আমাকে কয়েক দফায় বেধরক মারধর করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। আমাকে চিকিৎসা দেয়নি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। খবির দফাদার মুঠোফোনে বেধরক মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন আমি কোন টাকা চাইনি। আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (তদন্ত) নুরুল ইসলাম বাদল বলেন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দেখে এসেছি।
×