ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঐশীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

ঐশীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মালিবাগে নিজ ফ্ল্যাটে স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় মেয়ে ঐশী রহমানকে বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় রবিবার প্রকাশ করা হয়েছে। বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদন্ড থেকে ঐশীকে রেহাই দেয়ার পাঁচটি কারণ উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলে, ‘মৃত্যুদন্ড-প্রাপ্ত আসামি জোড়া খুনের ঘটনা ঘটিয়েছেন সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়া এবং মানসিক বিচ্যুতির কারণেই। এ আসামি এ্যাজমাসহ নানা রোগে আক্রান্ত। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদন অনুসারে তার দাদি ও মামা অনেক আগে থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তাদের পরিবারে মানসিক বিপর্যস্ততার ইতিহাস রয়েছে। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ১৯ বছর। তিনি এ ঘটনার সময় সাবালকত্ব পাওয়ার মুহূর্তে ছিলেন। তার (ঐশী) বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারি অপরাধের নজির নেই। ঘটনার দুদিন পরই স্বেচ্ছায় থানায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি।’ উদ্ভূত পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সাজা কমানো হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করেছে উচ্চ আদালত। গত ৫ জুন হাইকোর্টের বেঞ্চটি মৃত্যুদ- কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়ার পাশাপাশি জরিমানার ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে পাঁচ হাজার টাকা করে। রবিবার সকালে ৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশ করে রায় প্রদানকারী বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ে আদালত বলে, ‘মৃত্যুদ- রহিত করতে সমাজের প্রতিটি স্তরে সুশাসন ও মানুষের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শুধু রাষ্ট্রের মধ্যে নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।’ হাইকোর্ট আরও বলে, ‘নিম্ন আদালত সামাজিক অবক্ষয় বিবেচনায় নিয়ে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে এ রায় দিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, একটি মেয়ে তার বাবা-মাকে নিজের হাতে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করার সাহস দেখিয়েছেন। কিন্তু সাজা নির্ধারণ ও বিচারের ক্ষেত্রে এ ধরনের আবেগ প্রদর্শনের সুযোগ নেই। আদালত আইনগত তথ্যাদি ও প্রমাণাদি বিবেচনায় নেবে। যেখানে একজন নারী হিসেবে ১৯ বছর বয়সে এ ধরনের অপরাধ করেছেন। তার বাবা পুলিশে ও মা ডেসটিনিতে চাকরিরত এবং জীবন-জীবিকা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ঐশীকে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেননি। তারা যখন উপলব্ধি করছিলেন, ঠিক সে সময় তার জীবন আসক্তিতে ও উচ্ছন্নে চলে গেছে।’ ঐশীর মানসিক অসুস্থতা, মাদকাসক্ত, পারিবারিক ইতিহাস, সর্বোপরি বয়স বিবেচনা করে এ রায় দেয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
×