ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালে মালয়েশিয়া পরাজিত ২-১ গোলে

এশিয়া কাপ হকির শিরোপা ভারতের

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

এশিয়া কাপ হকির শিরোপা ভারতের

রুমেল খান ॥ প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেই শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়া হলো না মালয়েশিয়ার। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপ হকির দশম আসরের ফাইনালে আপ্রাণ চেষ্টা করেও সমতায় ফেরা হয়নি তাদের। তাদের ২-১ গোলে হারিয়ে দশ বছর পর আবারও এশিয়া কাপ হকির শিরোপা (অপরাজিত) পুনরুদ্ধার করে ট্রফি জিতে উল্লাসে মেতে উঠলো ‘চাক দে ইন্ডিয়া’র ভারত। সর্বাধিক আটবার ফাইনাল খেলে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতলো ভারত। এর আগে ২০০৩ ও ২০০৭ সালে টানা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। মালয়েশিয়া এবারই প্রথম ফাইনাল খেলে রানার্সআপ হলো। তারা সবচেয়ে বেশি চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে (সর্বাধিক ৫ বার; ১৯৮২, ১৯৯৪, ১৯৯৯, ২০০৯ এবং ২০১৩ সালে)। রবিবারের ফাইনালে অবশ্য ফেভারিট ছিল ভারতই। তাদের র‌্যাঙ্কিং ৬, মালয়েশিয়ার ১২। তাছাড়া এই আসরে ভারত সুপার ফোরের ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল। ফলে ফাইনালে জিতে প্রতিশোধ নিতে পারলো না মালয়রা। মনপ্রীত সিং, সরদার সিং এবং রমনদীপ সিংয়ের জন্য রবিবারের দিনটা ছিল তাৎপর্যময়। কেননা ভারত দলের এই তিন খেলোয়াড় খেলেছিলেন সর্বশেষ ২০১৩ এশিয়া কাপ হকির ফাইনাল ম্যাচটিও। ওই ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৩-৪ গোলে হেরে যায় ভারত। সরদার সিং ওই ম্যাচে ছিলেন ভারত দলের অধিনায়ক। রবিবারের ফাইনালে মালয়েশিয়া হারলেও তাদের খেলা প্রশংসা কুড়ায় স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের। গোটা টুর্নামেন্টে ভারত খেলেছে দাপটের সঙ্গে। কোন ম্যাচেই তাদের কোন দলই সেভাবে বেগ দিতে পারেনি। একমাত্র মালয়েশিয়াই ফাইনালে তাদের ওপর প্রচ- চাপ সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শেষের দিকে। ওই সময় ভারতীয় শিবিরে রীতিমতো ত্রাসের সঞ্চার করে তারা। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় একটির বেশি গোল করতে পারেনি তারা। যদি পারতো তাহলে হয়তো পেনাল্টি শূটআউটে বাজিমাত করতে পারতো তারা। তবে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেই রানার্সআপ হওয়াটাও নিশ্চয়ই কম কৃতিত্বের নয় তাদের জন্য। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ ও তৃতীয় স্থান অধিকারী দলকে পুরস্কৃত করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, এশিয়ান হকি ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী তৈয়ব ইকরাম এবং ফেডারেশনের সভাপতি ও বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার। ফাইনালে ম্যাচের ৩ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় ভারত। পিসি পায় তারা। সুনীলের বাড়ানো বলে রমনদীপের পুশ বারে লাগলে ফিরতি বলে গোল করেন রমনদীপ (১-০)। ২২ মিনিটে পিসি থেকে হারমান প্রীতের হিট মালয় গোলকিপার কুমার সুব্রামিয়াম রুখে দেন। ২৭ মিনিটে ভারতের আকাশদীপ মালয় গোলকিপারকে একা পেয়ে সজোরে হিট করলেও কিপারে বাধাপ্রাপ্ত হন। ২৯ মিনিটে সুমিতের কোনাকুনি হিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে কানেক্টে গোল করেন ললিত উপাধ্য। ব্যবধান দ্বিগুণ করে ভারত (২-০)। ৩৭ মিনিটে মালয়েশিয়ার রহিম রাজির হিটে কানেক্ট করতে পারেনি জাজলান নাজমি। ৪২ মিনিটে আকাশদীপের পাসে ললিতের রিভার্স হিট বারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৪৬ মিনিটে শুয়ে পড়ে হাসান আজরির ফ্লিক করেন। গোল না হলে হতাশায় পোড়ে মালয়েশিয়া। ৪৬ মিনিটে দ্বিতীয় পিসি পায় মালয়রা। ফয়জাল সারির হিট সাইডবার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ৪৯ মিনিটে রোসলি রমাদান থেকে আরশাদ আমিরুলের হিট ভারতের গোলকিপারের গায়ে লেগে ফেরত এলে ফিরতি বলে সাবাহ শাহরিলের গোলে ব্যবধান কমায় মালয়েশিয়া (১-২)। ৫৫ মিনিটে তৃতীয় পিসি পায় মালয়শিয়া। সৈয়দ সাইদের হিট ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফেরত আসে। ৬০ মিনিটে গোলমুখে কানেক্ট করতে পারেনি মালয়েশিয়ার ফাইজাল সারি। পুরস্কার টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় : ফাইজাল সারি (মালয়েশিয়া)। সর্বোচ্চ গোলদাতা : ৭টি, ফাইজাল সারি (মালয়েশিয়া) এবং হারমান প্রীত সিং (ভারত)। সেরা গোলরক্ষক : আকাশ চিকতে (ভারত)। সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় : আরশাদ হোসেন (বাংলাদেশ)। সেরা গোল : হারমান প্রীত সিং (ভারত)।
×