ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তৃতীয় স্থান পাওয়া বিজয়ী দলের এজাজ আহমেদের হ্যাটট্রিক, পাকিস্তান ৬-৩ দক্ষিণ কোরিয়া

গোল উৎসবের ম্যাচে পাকিস্তানের জয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

গোল উৎসবের ম্যাচে পাকিস্তানের জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জয় দিয়ে শুরু, জয় দিয়ে শেষ। একেই বলে শেষ ভাল যার সব ভাল তার। বলা হচ্ছে পাকিস্তান জাতীয় হকি দলের কথা। তাদের ভাগ্যটাই আসলে সুপ্রসন্ন বলতে হবে। কেননা সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপ হকির দশম আসরে তারা গ্রুপপর্ব, সুপার ফোর পর্ব এবং স্থান নির্ধারণী পর্ব... সবমিলিয়ে সাত ম্যাচ খেলে মাত্র এক ম্যাচে জিতেও কি না শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট শেষ করেছে তৃতীয় স্থান অধিকার করে। রবিবার মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে তারা গোল উৎসবের ম্যাচে ৬-৩ গোলে হারায় গত আসরের চ্যাম্পিয়ন এবং সর্বাধিক চারবারের শিরোপাধারী দক্ষিণ কোরিয়াকে। মজার ব্যাপারÑ সর্বশেষ (২০১৩) আসরেও তৃতীয় হয়েছিল এই আসরে তিনবারের শিরোপাধারী পাকিস্তান। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তৃতীয় হলো তারা। এর আগে প্রথমবারের মতো এমন কৃতিত্ব দেখিয়েছিল ১৯৯৪ সালে জাপানের হিরোশিমায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ আসরে। এখানেই শেষ নয়, ২০১৩ আসরের সেমিফাইনালে এই দক্ষিণ কোরিয়ার কাছেই ১-২ গোলে হেরে ফাইনালে যাবার স্বপ্নভঙ্গ ঘটেছিল পাকিদের। মালয়েশিয়ার ইপোতে সেই হারের শোধ তারা তুললো এবার বাংলাদেশের ঢাকায়। যদিও এবার সুপার ফোরে একবার মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। ম্যাচটিতে কেউই জিততে পারেনি (১-১)। ফাইনাল এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের আগ পর্যন্ত এক ম্যাচে দুই দল মিলে সর্বোচ্চ গোল হয়েছিল ৯টি। তাও মাত্র একটি ম্যাচে। গত ১২ অক্টোবর ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়া ৭-২ গোলে হারায় ওমানকে। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের স্কোরলাইন ছুঁয়ে ফেলে কোরিয়া-ওমান ম্যাচের মোট গোলসংখ্যাকে। মজার ব্যাপারÑ গ্রুপপর্বের ওই ম্যাচের বিজয়ী দল ছিল কোরিয়া এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের বিজিত দলও সেই কোরিয়াই। রবিবারের ম্যাচে ১০ মিনিটে প্রথম গোল করে গোলের হালখাতা খোলে চতুর্দশ র‌্যাঙ্কিংধারী পাকিস্তান। মুশতাক-ইরফান কম্বিনেশন। হিট থেকে এজাজ আহমেদের কানেক্টে এগিয়ে যায় পাকিস্তান (১-০)। ২০ মিনিটে সমতায় ফেরে কোরিয়ানরা। চু সুক হুনের রিভার্স হিটে স্কোরলাইন ১-১ করে ত্রয়োদশ র‌্যাঙ্কিংধারী কোরিয়া। ৬ মিনিট পরেই রশিদ মেহমুদের চমৎকার হিটে গোল করে আবারও লিড নেয় পাকিস্তান (২-১)। ৩০ মিনিটে আতিক ও এজাজের সুন্দর আদান প্রদানে গোল করেন এজাজ আহমেদ (৩-১)। এর ২ মিনিট পরেই দ্বিতীয় পিসি পায় পাকিস্তান। এক্ষেত্রে পিসি বাতিলের জন্য কোরিয়ার রেফারেল ধোপে টেকেনি। আবু মাহমুদের গোলে ব্যবধান আরও বৃদ্ধি পায় (৪-১)। ৩৬ মিনিটে এজাজ আহমেদ একাই বল নিয়ে বিপদ সীমানায় ঢুকে প্লেসিং পুশে গোল করেন (৫-১)। সেই সঙ্গে পূরণ করেন হ্যাটট্রিকও। এটা ফাইনালের আগে টুর্নামেন্টের তৃতীয় হ্যাটট্রিক। প্রথমটি করেছিলেন মালয়েশিয়ার ফাইজাল সারি। গত ১২ অক্টোবর ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে মালয়েশিয়া ৭-১ গোলে চীনকে হারায়। ওই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন ফাইজাল। ৪৩ মিনিটে লি নামইয়ং শূটিং সার্কেল থেকে ড্রাগ এ্যান্ড পুশে গোল করলে ব্যবধান কিছুটা কমায় কোরিয়া (২-৫)। ৫৫ মিনিটে দ্বিতীয় পিসিতে আরেকটি গোল করে খেলায় কিছুটা উত্তেজনা ফেরায় কোরিয়া (৩-৫)। সিউ ইনুউর কানেক্টে গোলটি হয়। যখনই মনে হচ্ছিল শেষ ৫ মিনিটে আরও দুটি গোল করে সমতায় ফিরবে কোরিয়া, তখনই ৫৯ মিনিটে আরেকটি গোল করে সেই ধারণাকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয় পাকিস্তান। রশিদ-ইয়াকুব-এজাজের আদান প্রদানে ইয়াকুবের প্লেসিং পুশে গোল হলে জয় এবং তৃতীয় স্থান নিশ্চিত হয়ে যায় পাকিস্তানের (৬-৩)।
×