স্বরূপকাঠীতে সম্প্রসারিত হচ্ছে জাহাজ নির্মাণ শিল্প

নিজস্ব সংবাদদাতা, পিরোজপুর, ২২ অক্টোবর ॥ প্রায় ৩০ বছর ধরে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীতে জাহাজ নির্মাণের কাজ চলছে। পূর্বে হাতে গোনা কয়েকটি ডকইয়ার্ডে ছোট আকৃতির জাহাজ তৈরি হলেও, বিগত ৫ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে এই শিল্পটি। ফলে ২৫টিরও বেশি ডকইয়ার্ডে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় তিন সহস্রাধিক মানুষের। অধিকাংশ ডকইয়ার্ডগুলো নেছারাবাদের সোহাগদল, সুটিয়াকাঠি, স্বরূপকাঠি, পঞ্চবেকি, বাইরুলা, বরছাকাঠি এবং ছারছিনায় অবস্থিত। এসব ডকইয়ার্কে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ায়, বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম ছেড়ে যুবকরা সৎভাবে উপার্জন করছেন। শুধু নেছারাবাদ উপজেলা নয়, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার লোকজনও কর্মসংস্থানের খোঁজে ছুটে আসছেন ডকইয়ার্ডগুলোতে। তারা সর্বোচ্চ ৪০ টাকা ঘণ্টা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের কাজ করছেন। বালুবহনকারী কার্গোসহ প্রায় ১০ ধরনের লোহার তৈরি নৌযান তৈরি হয় নেছারাবাদের ডকইয়ার্ডগুলোতে যেখানে বর্তমানে ৩০ ফুট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা জাহাজ তৈরি হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী ছাড়াও ঢাকা থেকে লোকজন নেছারাবাদের ডকইয়ার্ডে আসে জাহাজ তৈরি করার জন্য। ডকইয়ার্ডের ভাড়া ও শ্রমিকের মজুরি কম হওয়ার কারণেই লোকজন এখানে আসেন বলে জানান জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে জড়িত আব্দুর রশিদ। জাহাজের আকারভেদে জায়গার ভাড়া হিসেবে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দিতে হয় ডকইয়ার্ডের মালিকদের। বর্তমানে উপজেলার শতাধিক লোক জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে জাহাজ নির্মাণের অধিকাংশ ঠিকাদার ঢাকার গোয়ালন্দ এলাকার। তবে ডকইয়ার্ডে যেসব মিস্ত্রিরা কাজ করে, তাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নাই। তারা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই কাজ করেন। সরকারী উদ্যোগে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা গেলে, কাজের মান আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তাদের আশা। অন্যদিকে কোন ডকইয়ার্ডেই নাই যথাযথ যন্ত্রপাতি। তাই ডকইয়ার্ডগুলোর মান উন্নয়নের জন্য সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন সালেহিয়া ডকইয়ার্ডের একজন কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম। এছাড়া ঘনঘন বিদ্যুত বিভ্রাট ঘটায় কাজের মারত্মক ব্যাঘাত ঘটে বলেও জানান জাহাজ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। শিল্পটির আরও সম্প্রসারণের জন্য এই সমস্যারও সমাধান চান তারা।