ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ম্যানেজার প্রত্যাহার

কিশোরগঞ্জে সোনালী ব্যাংকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাত

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

কিশোরগঞ্জে সোনালী ব্যাংকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ২২ অক্টোবর ॥ কিশোরগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক (এজিএম) সাইফুদ্দিন সবুজ নয়ছয় করে আমানতকারী ও ঋণ গ্রহীতাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে এজিএমকে প্রত্যাহার করেছে। এদিকে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বাদী হয়ে শাখা ব্যবস্থাপক সাইফুদ্দিন সবুজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ময়মনসিংহ অঞ্চলের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে রবিবার এ প্রতিবেদকের কাছে থানার ওসি খোন্দকার শওকত জাহান জানান। জানা গেছে, ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে সুড়ঙ্গ কেটে সোনালী ব্যাংকের ১৬ কোটি টাকা চুরির ঘটনার পর এবার শাখাটির ম্যানেজারের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এই ব্যাংক শাখায় লেনদেনকারীদের মাঝে। অনেকে আমানতের খোঁজখবর নিতে ব্যাংকে আসছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, শহরের পুরান থানার আমানতকারী ঠিকাদার আশিকুজ্জামান এলিনের ৪ লাখ ২০ হাজার, হারুয়ার ব্যবসায়ী জুলহাস সওদাগরের ৮০ হাজার, সাব্বির আহমেদের ২ লাখ, অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারী কর্মকর্তার ৫ লাখ, সরকারী এক কর্মচারীর ২ লাখ ৫০ হাজার এবং হোসেনপুর রোডের মোল্লাপাড়ার ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের ক্ষুদ্র ঋণের ১০ লাখ টাকা ও জেলার পাকুন্দিয়ার পূর্বাচল হিমাগারের ১২ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উপরোক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের টাকা জমা দেয়ার কথা বলে সিল-স্বাক্ষর সংবলিত রসিদ প্রদানের পর জমা না দিয়ে আমানতকারীদের এবং চেক রেখে টাকা উঠিয়ে ঋণ গ্রহীতাদের এসব টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন ব্যাংকের ম্যানেজার সাইফুদ্দিন সবুজ। আর এসব ঋণের টাকা আত্মসাতে তাকে ওই ব্যাংকের দালাল হিসাবে পরিচিত বোরহান, মিলন, আলমগীর ও সোহেল নামে চার ব্যক্তি সহযোগিতা করেছেন বলে জানা গেছে।চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা থেকে একটি অডিট টিম এলে প্রথমে তাদের কাছে ধরা পড়ে এসব অনিয়ম-দুর্নীতি ও আত্মসাতের ঘটনা। পরে এ ঘটনায় ইসমাইল হক নামে এক প্রিন্সিপাল অফিসার পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম পাঠায় প্রধান কার্যালয় থেকে। একই সময় ম্যনেজার সাইফুদ্দিন সবুজকে প্রত্যাহার করে সোনালী ব্যাংক ময়মনসিংহের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। শনিবার পর্যন্ত এ তদন্ত টিমের সদস্যরা কিশোরগঞ্জে অবস্থান করছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন শাখা ম্যানেজারের কাছে আসছে টাকা আত্মসাতের একের পর এক অভিযোগ। মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত ম্যানেজার সাইফুদ্দিন সবুজ আত্মগোপন করেছেন। তার বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে বলে জানা গেছে।
×