ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘ মহাসচিবের ফোন

প্রকাশিত: ০৭:৩৮, ২২ অক্টোবর ২০১৭

শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘ মহাসচিবের ফোন

বিডিনিউজ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে কথা বললেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্ত‍ানিও গুতেরেস। জাতিসংঘ মহাসচিব শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করেন বলে তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আন্তনিও গুতেরেস ও শেখ হাসিনা টেলিফোনে প্রায় ২০ মিনিট রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করেন। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে স্বভূমিতে পুনর্বাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর আরও চাপ প্রয়োগের করতে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। রোহিঙ্গা সঙ্কটের অবসানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর তুলে ধরা পাঁচ দফা প্রস্তাব যাতে বাস্তবায়িত হয় সেজন্য গুতেরেসের সমর্থন চান তিনি। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আমি পাঁচদফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিলাম, গুতেরেসকে বলেন তিনি। গত ২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে ভাষণে মিয়ানমারে উৎপীড়নের হাত থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় প্রস্তাব তুলে ধরে মানবিক এই সঙ্কট অবসানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের ত্বরিত পদক্ষেপ চান শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার প্রস্তাব * অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা * অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা * জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা * রাখাইন রাজ্য হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা * কোফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূলের’ চেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে কয়েক দফায় মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে গত মাসে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্যে গুতেরেস বলেন, রাখাইনে সহিংসতা রোহিঙ্গাদের খুব দ্রুতই বিশ্বের বড় উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠীতে পরিণত করেছে, যা মানবিকতা ও মানবাধিকারের জন্য ‘দুঃস্বপ্নের’ জন্ম দিয়েছে। পালিয়ে আসা, যাদের বেশিরভাগ নারী, শিশু ও বয়স্ক, তাদের কাছ থেকে আমরা রক্ত হিম করা বক্তব্য পেয়েছি। তাদের বর্ণনায় নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, বেসামরিকদের বিরুদ্ধে ভূমি মাইন ব্যবহার ও যৌন সহিংসতাসহ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের কথা বলে। সঙ্কট সমাধানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সঙ্কটের সমাধান না হলে প্রতিবেশী দেশগুলোসহ পুরো অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক অসন্তোষের ঝুঁকি তৈরি হবে। দশকের পর দশক শোষণ- বৈষম্যের শিকার হওয়ায় রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে চরমপন্থার উত্থান ঘটতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
×