ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারত ৪-০ পাকিস্তান

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে ভারত

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২২ অক্টোবর ২০১৭

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে ভারত

রুমেল খান ॥ দু’দলই ছিল সমীকরণের চক্রে। তবে এক দল ছিল অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থায়, আরেকদল অনেকটাই বেকায়দায় অবস্থায়। এশিয়া কাপ হকির সুপার ফোরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচের দল ভারত-পাকিস্তানের কথাই বলা হচ্ছে। মওলানা ভাসানী জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হওয়া এই ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে প্রথম দল হিসেবে নাম ফাইনালে নাম লেখায় ভারত। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বার ফাইনালে উঠল তারা। সব মিলিয়ে আটবার (চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দু’বার)। ম্যাচটি উপভোগ স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে হাজির হয়েছিলেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক। তারা গলা ফাটিয়ে উৎসাহ জোগান উভয় দলকেই। সুপার ফোরে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এটা দ্বিতীয় জয় ভারতের। ৭ পয়েন্ট নিয়ে এই পর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো তারা। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা পাকিস্তানের দ্বিতীয় হার। মাত্র ১ পয়েন্ট তাদের। চার দলের মধ্যে তলানীতে তারা। ফলে ফাইনালে ওঠার আশাও শেষ তাদের। এখন তৃতীয় হওয়ার ম্যাচ খেলবে তারা আজ। গ্রুপ পর্বেও ভারতের কাছে ১-৩ গোলে হেরেছিল পাকিস্তান। ফাইনালে উঠতে ভারতের বিপক্ষে কমপক্ষে ৫ গোলের জয় দরকার ছিল তাদের। গোল করা তো দূরে থাক, উেেল্টা এক হালি গোলই হজম করতে হয় তাদের। অথচ প্রথম দুই কোয়ার্টারে দারুণ খেলে তারা। নিজেরা গোল করতে না পারলেও ভারতকেও কোন গোল করতে দেয়নি তারা। কিন্তু শেষ দুই কোয়ার্টারে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে তারা। একের পর এক গোল খেতে থাকে না। পুরো ম্যাচে দারুণ খেলেন ভারতের গোলরক্ষক আকাশ চিকতে। বেশ কটি নিশ্চিত গোল রুখে দেন তিনি। ২৮ মিনিটে পিসিতে ভারতের হারমনপ্রিত সিংয়ের হিট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে সাতবির সিংয়ের ক্রস ফেরাতেই পারেননি পাকিস্তানের গোলরক্ষক এবং এক ডিফেন্ডার। দু’জনকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় জালে। এরপর দুই মিনিটে দুই গোল করে পাকিস্তানের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা শেষ করে দেয় গতবারের রানার্সআপরা। ম্যাচের ৫১ মিনিটে পিসিতে হারমনপ্রিত সিংয়ের গোলের এক মিনিট পর স্কোরশিটে নাম লেখান ললিত উপাধ্যায়েক। ৫৭ মিনিটে গুরজান্ত সিংয়ের ফিল্ড গোল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে চার গোলের লজ্জায় ডুবে পাকিস্তান। ভারত জিতলেও শনিবারের ম্যাচে অবশ্য পাকিস্তানের সঙ্গে ন্যূনতম ড্র করলেই ফাইনালে উঠত ভারত। আবার তারা যদি পাকিস্তানের কাছে বেশি গোলের ব্যবধানে হারত এবং মালয়েশিয়া-কোরিয়া ম্যাচটি বেশি গোলে ড্র হতো, সেক্ষেত্রে তাদের পয়েন্ট পাকিস্তান-মালয়েশিয়ার সমান (৪) হয়ে যেত। তখন গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়লে ভারতের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভেস্তেও যেতে পারত। বিশ^ হকির র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারত ষষ্ঠ, পাকিস্তান চতুর্দশ স্থানে। ১৯৭৮ থেকে ২০১৭Ñ ৩৯ বছরে হকি মাঠে পাকি-ভারত মুখোমুখি হয়েছে ১৭১ বার; ৮২ বার জিতেছে পাকিস্তান, ৫৯ বার জিতেছে ভারত, ড্র ৩০ ম্যাচে। এশিয়া কাপেও এগিয়ে পাকিস্তান। আট ম্যাচের ছয়টিতে জয়ী, হার তিনট। ঢাকায় অবশ্য এগিয়ে ভারত। পাঁচ ম্যাচে তারা জিতেছে তিন ম্যাচে, পাকিস্তানের জয় একটিতে, অপর ম্যাচটি ড্র। এখন দেখার বিষয়, আজকের ফাইনালে জিতে ২০০৭ সালের পর (১০ বছর পর) আবারও এশিয়া কাপ হকির ট্রফি জিতে তা নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠতে পারে কি না ‘চাক দে ইন্ডিয়া’র ভারত।
×