ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রূপগঞ্জে ইটভাঁটির ধোঁয়ায় হুমকিতে পরিবেশ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২২ অক্টোবর ২০১৭

রূপগঞ্জে ইটভাঁটির ধোঁয়ায় হুমকিতে পরিবেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ২১ অক্টোবর ॥ রূপগঞ্জে ইটভাঁটির কালো ধোঁয়ার কবলে পড়ার আশঙ্কায় ফের আতঙ্কে স্থানীয় কৃষি ও সামাজিক পরিবেশ। বর্ষার পানি কমে যাওয়ার সময় রূপগঞ্জের দাউদুপরের ৩০ ইটভাঁটির চলে বাড়তি কর্মযজ্ঞতা। হুমকির মুখে পরে স্থানীয় কৃষি ফসলের উৎপাদন। তাই প্রতিবছর কৃষক ও ভাঁটি মালিকদের মাঝে চলে চাপা ক্ষোভ। কখনও তা সংঘাতে রূপ নেয়। তবু পাকা আবাসন গড়ার প্রধান কাঁচামাল ইট প্রস্তুতে তাদের প্রস্তুতিও থাকে সবকিছু মাথায় রেখেই। তবে বেসরকারী হিসাব বলছে এ ইটভাঁটির সংখ্যা ৬০টিরও বেশি। স্থানীয় কৃষকরা জানায়, ইটভাঁটিত আগুন দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত কিছুটা স্বস্তি হলেও আগুন দেয়ার পর কৃষি ফসলের ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেয়। এ এলাকার আমগাছগুলোতে মুকুল এলেও তা ফলনের মুখ দেখে না। নারিকেল গাছের ডগাগুলো থুবড়ে পড়ে। কলাগাছগুলোর পাতাও এ সময় মরে যায়। কৃষকরা আরও জানায়, ইটা প্রস্তুতে ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে ভাটায় মন্ডা তৈরি করে। ফলে জমির উর্বরতা হ্রাস পায়। এতে ফসল উৎপাদনে পড়ে ভাটা। সরেজমিন দেখা যায়, দাউদপুরের লক্ষ্যা শিমুলিয়া থেকে বেলদী, দেবই, খৈসাইর, খাস দাউদপুর, খাস কামাল কাটিসহ শীতলক্ষ্যার দুপাড়ে রয়েছে ৩০টির অধিক ইটভাঁটি। এসব ভাঁটিতে প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সহজ জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার হচ্ছে হরদম। ফসলি জমি ও নদী তীরের বসতির পাশেই গড়া এসব ইটভাঁটিতে নানা অনিয়মের মাধ্যমে চালাচ্ছে কার্যক্রম। শুধু তাই নয়, ইটবহনের কাজে ব্যবহার হয় শ্যালোচালিত ইঞ্জিন তৈরি নছিমন, ভটভটি ও ইছার মাথা নামে পরিচিত ঝুঁকিপূর্ণ ট্রাক্টর দিয়ে। এসব ইছার মাথা গ্রামের সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় পাকা রাস্তার স্থায়িত্ব থাকে না। ফলে অল্প দিনেই রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে খানা খন্দে পরিণত হয়। অপরদিকে ইটভাঁটিগুলোর চিমনি পরিবেশ অধিদফতরের নিয়ম না মেনে স্থাপন করায় কালো ধোঁয়া প্রবেশ করে গ্রামের বসত ঘরে। এতে করে গ্রামের শিশু ও বৃদ্ধ শ্রেণীরা নানা বায়ুবাহিত রোগে ভুগে থাকেন। আইনে চুলায় কাঠ পোড়ানো নিষিদ্ধ থাকলেও রূপগঞ্জের এসব ইটভাঁটিতে তা মানা হচ্ছে না। কয়লা না পুড়িয়ে গাড়ির টায়ার, গার্মেন্টসের ধুনা বা কাপড় পোড়াতেও দেখা গেছে। বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার আতঙ্কে কেউ কেউ এই এলাকা থেকে বসতঘর সরিয়ে নিয়েছেন। ইটা প্রস্তুতের মৌসুমে এই এলাকায় হয়ে পড়ে ধুলো ময়লা ও ধোঁয়াচ্ছন্ন নগরী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেলদী এলাকার ভাঁটি ম্যানেজার জানান, ভারত থেকে আমদানিকৃত কিছু কয়লাও রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। এসব কয়লার দাম কম থাকায় অনেক ভাঁটিতে তা পোড়ানো হচ্ছে।
×