ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল মিয়ানমার যাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২২ অক্টোবর ২০১৭

কাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল মিয়ানমার যাচ্ছে

শংকর কুমার দে ॥ মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো ও এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধকল্পে দুই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত, ইয়াবাসহ মাদক পাচার বন্ধের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য আগামীকাল মিয়ানমার যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন দলটি। সোমবার থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সফরকারী দলের দুই দিনব্যাপী মিয়ানমার সফরের প্রস্তুতি সম্পন্ন। মিয়ানমার সফরের সময়ে আলোচনার মূল এজেন্ডায় রোহিঙ্গা সঙ্কট ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় চারটি পূর্বনির্ধারিত বিষয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, পুলিশ প্রধান, বিজিবি প্রধান, কোস্টগার্ড প্রধান, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক)। দুদিনের সফর আগামীকাল সোমবার শুরু হবে। আগামী ২৫ অক্টোবর ফিরে আসবে প্রতিনিধি দলটি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আমলে রোহিঙ্গাদের আগমনের ধারা এখন বাঁধভাঙ্গা স্রোতের মতো হয়ে আসার ঘটনার সামাল দিতে হচ্ছে বর্তমান সরকারকে। বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক সাফল্যের কারণে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নিধন ও নির্যাতনের ঘটনাটিকে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ স্বীকার করাসহ চাপ প্রয়োগ করায় মিয়ানমার আলোচনার টেবিলে বসতে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে প্রস্তাব দিতে বাধ্য হয়েছে। শুধু তাই নয়, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর আং সান সুচির দফতরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে ঢাকায় এসে গত ২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হওয়ার ঘটনাটিকে বর্তমান সরকারের আকাশচুম্বী কূটনৈতিক সাফল্য বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে সফরকারী দলের এক কর্মকর্তার দাবি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আগমনের ঘটনার যে ঘটনা ঘটেছে তার পরিপূর্ণ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ১৯৯২ সালে তার স্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকার সময়টিতে। জিয়া-খালেদা সরকারের সময়ে বাংলাদেশে আসার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বারবার চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হয়। আলোচনার টেবিলে আনতে পর্যন্ত ব্যর্থ হয় জিয়া-খালেদার সরকার। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান ও ১৯৯২ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের সময়েই ৪ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় যা তাদের তখন ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়া হয়। এরপর গত ২৫ আগস্ট থেকে আবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে দমন অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত সোয়া পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এখনও প্রায় প্রতিদিনই রোহিঙ্গা আগমনের ঘটনা ঘটা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশে এখন ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার আগমন ঘটেছে। সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা আসছে, যা এখনও রাখাইনে দমন-পীড়ন চলার খবর মিলছে।
×