ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আবর্জনায় বিপর্যয় বুড়িগঙ্গা ও শুভাঢ্যার খাল

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২১ অক্টোবর ২০১৭

আবর্জনায় বিপর্যয় বুড়িগঙ্গা ও শুভাঢ্যার খাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ২০ অক্টোবর ॥ কেরানীগঞ্জ উপজেলার সহস্রাধিক শিল্প কারখানার বর্জ্য পদার্থ, ময়লা আবর্জনা, রাসায়নিক কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা খাল হয়ে বুড়িগঙ্গায় মিশে পানি দূষিত হচ্ছে। শুভাঢ্যা ইউনিয়নের তৈল ঘাট থেকে শুরু করে খোলামোড়া ঘাট পর্যন্ত নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে শিল্প কারখানাসহ বিভিন্ন বাসা বাড়ির ময়লা আবর্জনার স্তূপ গড়ে তোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বর্জ্য আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করলেও এলাকাবাসী তা কর্ণপাত করছে না। তারা মধ্য রাত থেকে ভোর রাত পর্যন্ত বাড়ি ঘরের বর্জ্য আবর্জনা বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলছে। এতে পরিবেশসহ নদীর পানি মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কেরানীগঞ্জ তৈরি পোশাক মার্কেটের বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীরের তৈল ঘাট, আগানগরের বাঁশপট্টি, জিনজিরা ইউনিয়নের রসুলপুর, মান্দাইল ঘাট, বরিশুর ঘাট ও খোলামোড়া ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাড়ি ঘরের বর্জ্য আবর্জনা নদী তীরে ফেলে ময়লার পাহাড় গড়ে তুলছে। এই ময়লার স্তূপগুলো পরবর্তীতে নদীর পানির সঙ্গে মিশে পানি দূষিত হচ্ছে। এ কারণে এখন বুড়িগঙ্গা নদীর পানি কেউ ব্যবহার করতে পারছে না। এ দূষণ ঠেকাতে সংসদ সদস্য বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু কেরানীগঞ্জের প্রতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে কোন ধরনের বর্জ্য আবর্জনা বুড়িগঙ্গা নদী ও শুভাঢ্যার খালে না ফেলা হয়। ইতোপূর্বে বুড়িগঙ্গা নদীর দখল দূষণ ঠেকাতে বিআইডব্লিউটিএ গত ২২ বছরে ২২ দফা অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু স্থায়ীভাবে নদীর তীর দখল ও ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে পারেনি তারা। অভিযানের কিছুদিন পর পুনরায় আবর্জনা ফেলা শুরু হয়ে যায়। অভিযোগে জানা যায়, ওই বর্জ্য আবর্জনার দুর্গন্ধে নদীর তীর দিয়ে জনসাধারণের চলাফেরা করা কঠিন। এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ বলেন, বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ ঠেকাতে নদীর তীরবর্তী লোকজনরা যাতে ময়লা আবর্জনা নদীতে না ফেলে সেজন্য ৪০টি ভ্যান গাড়ি ও বিদেশ থেকে উন্নতমানের আরও ৪টি গাড়ি আনা হবে। ওই গাড়িগুলো বর্জ্য আবর্জনা নিয়ে ধলেশ্বরী নদীর তীরে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা হবে। অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহে এলীদ মাঈনুল আমীন বলেন, কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন বাসা বাড়িসহ ছোটখাটো মিল কারখানার বর্জ্য আবর্জনা ফেলার জন্য বিদেশ থেকে উন্নতমানের গাড়ির আমদানির জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ওই গাড়িগুলো আসার পর কেরানীগঞ্জের যাবতীয় বর্জ্য আবর্জনা ধলেশ্বরী নদীর তীরে ফেলা হবে এবং ওই বর্জ্য আবর্জনা থেকে বিদ্যুত তৈরি করা হবে। ওই বিদ্যুত কেরানীগঞ্জের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যত্রও দেয়া যাবে।
×