ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিলেটে ফুটপাথ দখলদার ও আশ্রয়দাতার বিরুদ্ধে পরোয়ানা

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২১ অক্টোবর ২০১৭

সিলেটে ফুটপাথ দখলদার ও আশ্রয়দাতার বিরুদ্ধে পরোয়ানা

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ শহরের ফুটপাথ দখলদার ও তাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে চিহ্নিত ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। তারা হচ্ছেন মহানগর হকার্স লীগ ও মহানগর হকার্স কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি রকিব আলী ও সহসভাপতি আতিয়ার রহমান, শফিক আহমদ, আবুল বাশার, রুহুল আমিন রুবেল, মখলেসুর রহমান, আব্দুল আহাদ; সাধারণ সম্পাদক খোকন ইসলাম; সাংগঠনিক সম্পাদক রুমন আহমদ, জিন্দাবাজার অটোরিক্সা স্ট্যান্ডের আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ইসলাম উদ্দিন, শফিক উদ্দিন, সদস্য সচিব ইফসুফ আলী, মধুবন পয়েন্ট ইমা/লেগুনা স্ট্যান্ডের সভাপতি সোহাগ মিয়া, সহসভাপতি আদিল, সম্পাদক কবির মিয়া, অর্থ সম্পাদক বাবুল মিয়া, রংমহল টাওায়া অটোরিকশা/সিএনজি স্ট্যান্ডের সভাপতি আজমল হোসেন, সহসভাপতি মুরাদ হোসেন, ধোপাদিঘিরপার ইমা/লেগুনা স্ট্যান্ডের সভাপতি সাহাবউদ্দিন সাবু, সহসভাপতি ফয়জুল মিয়া, কার্যকরী সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর নুর হিরণ, কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ ও অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন আম্বরখানা-সালুটিকর শাখার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য তেরা মিয়া। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো এ পরোয়ানা জারি করেন। আদালতের নির্দেশে ১৬ অক্টোবর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালি থানার ওসি ফুটপাথ দখলকারীদের আশ্রয়দাতা হিসেবে ৩৮ জনের তালিকা আদালতে জমা দেন। সেই তালিকা অসম্পূর্ণ হওয়ায় বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। সকালে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদালতে হাজির হয়ে একটি তালিকা জমা দেন। তালিকা জমা দেয়ার পর আদালত ২৬ জনের বিরুদ্ধে সিআর মামলা নথিভুক্ত করে। জেলা আইনজীবী সমিতির লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ মে ফুটপাথ দখলকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে সিলেট সিটি মেয়রকে নির্দেশ দেয় মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। এ ক্ষেত্রে মেয়রকে সহযোগিতার জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকেও নির্দেশ দেয় আদালত। এ নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত ৩০ মে নগরীর ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সিসিক। বৈঠকের পর গত ১ জুন থেকে নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা এলাকায় ফুটপাথে অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদে অভিযান শুরু করা হয়। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই সে অভিযানে ভাটা পড়লে অবৈধ দখলদাররা ফিরে আসে। নগরীর ফুটপাথ ও রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা ছাড়াও রয়েছে যত্রতত্র সিএনজি, লেগুনা, মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড। বিশেষ করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার এলাকার ফুটপাথ বেদখল হয়ে যাওয়ায় পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ফুটপাথ দখলকারী ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী ও সিএনজি, লেগুনা, মাইক্রোবাস চালকদের কাছ থেকে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়ে থাকে। উত্তোলিত চাঁদা বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে আসছে। সম্প্রতি ফুটপাথ দখল মুক্ত করার আদালতের নির্দেশ আসার পর এ নিয়ে অভিযান শুরু হয়। শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি কিছুটা হলেও পথচারীদের দুর্ভোগ কমে আসে। কোর্ট পয়েন্ট থেকে জেল রোড পয়েন্ট পর্যন্ত এখনও রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসার পসার রয়েছে। শহরের এই এলাকায় রয়েছে শাক-সবজি, ফল-কাঁচামালের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা। শহরের প্রাণকেন্দ্র বন্দরবাজার এলাকায় কাঁচামাল বেচাকেনার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ সময়ে এই ব্যবসা ফুটপাথ নির্ভর হয়ে পড়েছে। ফুটপাথ দখলমুক্ত রাখা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ক্রেতার সুবিধার স্বার্থে জেলরোড এলাকায় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অর্ধকিলোমিটার সড়ক সান্ধ্যবাজার হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হলে এই সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে বলে শহরবাসীর ধারণা।
×