ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রযুক্তিপণ্যের প্রসারে

প্রকাশিত: ০৩:১০, ২১ অক্টোবর ২০১৭

প্রযুক্তিপণ্যের প্রসারে

বুধবার রাজধানীতে শুরু হয়েছে প্রযুক্তি পণ্যের বড় আসর ‘বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৭’। তথ্যপ্রযুক্তির পণ্যের প্রসারে বাংলাদেশের রয়েছে উজ্জ্বল সম্ভাবনা; সে লক্ষ্যে সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। সার্বিক বিচারে তাই এই মেলার স্লোগান ‘মেক ইন বাংলাদেশ’ যুক্তিযুক্তই মনে হয়। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন অনেকটাই সম্পন্ন হয়েছে। এর সুফল পেতে হলে বাণিজ্যিকীকরণে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। সাইবার বিশ্বে বাংলাদেশ নতুন। এর সম্ভাবনা ও সঙ্কট সম্পর্কে সরকার সম্যক অবগত। সরকার ইতোমধ্যে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সাইন্স এ্যান্ড টেকনোলজি (এনসিএসটি) গঠন করেছে। এনসিএসটিতে এক্সিকিউটিভ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের কাজ হলো কাউন্সিল প্রণীত নীতির বাস্তবায়ন। জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালায় আইসিটির উন্নয়নকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার রফতানি বাজার ধরার তাগিদে। এছাড়া সুশাসন নিশ্চিত, আইসিটি সংশ্লিষ্ট নীতি কার্যকর, সফটওয়্যার প্রকল্পের জন্য বিশেষ বরাদ্দ, এ বিষয়ে বিশ্বমানের পেশাদার গড়ে তোলা এবং এ খাতে সমৃদ্ধির জন্য একটি বিশ্বমানের এ সংক্রান্ত ইনস্টিটিউশন গড়ে তুলতে আইসিটির উন্নয়ন আবশ্যক। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও গবেষণা অত্যন্ত জরুরী। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা দেশের জন্য সুখবর। চুক্তির আওতায় এমআইটির আধুনিক প্রযুক্তি (ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডিপ লার্নিং, বিগ ডেটা, ইন্টারনেট অব থিংসের ওপর গবেষণা কার্যক্রম চালানো হবে। এর ফলে নিঃসন্দেহে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য সরকার ইতোমধ্যে যেসব বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে তার ভেতরে রয়েছে গাজীপুরে হাইটেক পার্ক শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক পার্ক স্থাপন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য সময়োপযোগী কার্যক্রম। ৬৪ জেলার নির্বাচিত সরকারী- বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আইসিটি ‘ক্যারিয়ার ক্যাম্প’ চলছে। ক্যারিয়ার ক্যাম্পের উদ্দেশ্য, দেশের শিক্ষিত তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহ বাড়ানো। একই সঙ্গে তাদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা। বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব। এবারের জাতীয় বাজেটেও তার প্রতিফলন ঘটেছে। আউটসোর্সিংয়ে বিশেষ প্রণোদনার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। জনশক্তির তুলনায় দেশে শ্রমবাজার অপর্যাপ্ত থাকায় বেকারত্ব দূর করতে এবং আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার এ খাতে বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ ভাল রোজগার করছেন। অনলাইনে এই ফ্রিল্যান্সিংয়েরই পোশাকী নাম আউটসোর্সিং। এখন স্বাধীনচেতা, কর্মঠ এবং উচ্চাভিলাষী তরুণদের মধ্যে এটি প্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে ঘরে বসে অর্থোপার্জনের এ কাজটি বর্তমান বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থানে চলে এসেছে। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাত থেকে ১ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আইসিটি এক্সপো উদ্বোধনকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জানান হার্ডওয়্যার খাতে সক্ষমতা বাড়াতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যেই হার্ডওয়্যার রফতানি করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে সেটা যে অসম্ভব নয়, সে কথা বলাই বাহুল্য।
×