ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রিয়ালকে রুখে দিয়ে গ্রুপের শীর্ষে টটেনহ্যাম

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

রিয়ালকে রুখে দিয়ে গ্রুপের শীর্ষে টটেনহ্যাম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদকে ১-১ গোলে রুখে দিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের ‘এইচ’ গ্রুপের শীর্ষে উঠে এসেছে ইংলিশ ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পার। ম্ঙ্গলবার রাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে রাফায়েল ভারানের আত্মঘাতী গোলে স্পার্সরা এগিয়ে যাওয়ার পর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পেনাল্টি গোলে সমতা ফেরায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। গ্রুপের আরেক ম্যাচে সাইপ্রাসের ক্লাব এ্যাপোয়েল নিকোশিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ‘এফ’ গ্রুপে অপ্রতিরোধ্য ছন্দে এগিয়ে চলেছে ম্যানচেস্টার সিটি। তৃতীয় ম্যাচেও জয় পেয়েছে তারা। এবার ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে সিটিজেনরা। টানা তিন জয়ে গ্রুপের শীর্ষে গার্ডিওলার দল। ‘ই’ গ্রুপে ইতিহাস গড়া জয় পেয়েছে লিভারপুল। স্বাগতিক স্লোভেনিয়ার ক্লাব ম্যারিবোরকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে দ্য রেডসরা। আরেক ম্যাচে ঘটেছে অঘটন। রাশিয়ান ক্লাব স্পার্টাক মস্কোর কাছে ৫-১ গোলে বিশাল ব্যবধানে হেরেছে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়া। বার্নাব্যুতে দ্বিতীয়ার্ধে গোলরক্ষক ও অধিনায়ক হুগো লোরিসের দুটি অসাধারণ গোল বাঁচানোর কারণে টটেনহ্যাম হটস্পারের বিরুদ্ধে জয় পায়নি স্বাগতিক রিয়াল। তেমনি অতিথিরাও বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে। স্বাগতিক গোলরক্ষক কেইলর নাভাসও বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত সেভ করে দলকে রক্ষা করেন। এই ম্যাচে রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে অভিষেক হয়েছে ১৮ বছর বয়সী মরক্কোর রাইটব্যাক আচরাফ হাকিমির। প্রথম ১০ মিনিট দু’দলই বেশ চাপে ছিল। তবে হ্যারি কেনের কল্যাণে এই সময়টা টটেনহ্যামই বেশি আধিপত্য বিস্তার করে খেলে। ইংলিশ এই ফরোয়ার্ডের দুর্দান্ত ফর্মে ম্যাচের আগেই রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বেশ শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। বামদিক থেকে কেনের একটি আক্রমণ নাভাস রুখে দেন। ফার্নান্দো লোরেন্তে গোল সীমানায় কাসেমিরোকে ফেলে দিলেও পোলিশ রেফারি সিজমন মারিসিনাক তাতে কোন ইতিবাচক সাড়া দেননি। ২৮ মিনিটে সার্জি অরির ক্রস থেকে ভারানের পায়ে লেগে বল জালে জড়ালে আত্মঘাতী গোলের লজ্জা পায় রিয়াল। তবে বিরতির আগে সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে ম্যাচে সমতা ফেরায় সর্বশেষ দুই আসরের চ্যাম্পিয়নরা। ৪৩ মিনিটে টনি ক্রুসের আদায় করা পেনাল্টি থেকে রোনাল্ডো দলকে সমতায় ফেরান। ম্যাচ শেষে টটেনহ্যাম কোচ মরিসিও পচেট্টিনো বলেন, হুগো অসাধারণ খেলেছে। একটি বড় উপহার তার প্রাপ্য হয়ে গেল। সে তার জাত চিনিয়েছে। আমরা সবাই দেখেছি কেন হুগো লোরিস বিশ্বের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক। নিজের ওপর তার অগাধ আস্থা আছে। সব খেলোয়াড়ই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তিনি আরও বলেন, এই পর্যায়ে ড্র করাটা বেশ স্বস্তিদায়ক। রিয়াল অমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। শেষ পর্যন্ত আমরা এক হয়ে ম্যাচটি ধরে রেখেছিলাম। রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, ঘরের মাঠে জিততে না পারায় আমরা মোটেও খুশি নই। কিন্তু ম্যাচটি ছিল দুই গোলরক্ষকের। আমাদের হয়ে কেইলর নাভাস ও তাদের হয়ে লোরিস যা খেলেছে তাতে ম্যাচের ফলাফল মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। অন্যদিকে পেনাল্টি মিসের খেসারত দিতে হয়েছে নেপোলিকে। ম্যাচে দুটি পেনাল্টির সুযোগ পেয়েও একটি কাজে লাগাতে পেরেছে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। ফলে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ২-১ গোলে হারতে হয়েছে তাদের। ইউরোপের পাঁচটি মেজর লীগে সর্বোচ্চ গোল করা সিটির রাহিম স্টার্লিং ও গ্যাব্রিয়েল জেসুসের কল্যাণে বিরতির আগেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে নেপোলি ম্যাচে ফিরে আসে। ৩৮ মিনিটে পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করেন ড্রিয়েস মারটিনস। ৭৩ মিনিটে আমাডু দিয়াওয়ারা স্পট কিক থেকে গোল করে নেপোলির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের চলতি মৌসুমের শুরুটা লিভারপুলের ছিল হতাশাজনক। টানা দুই ম্যাচে ড্রয়ের পর তৃতীয় ম্যাচে স্বরূপে ফিরেছে জার্গেন ক্লপের দল। ম্যারিবোরকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ইতিহাস গড়েছে লিভারপুল। ইউরোপিয়ান ফুটবলে এ্যাওয়ে ম্যাচে এটাই কোন ইংলিশ ক্লাবের সবচেয়ে বড় জয়। সেøাভেনিয়ার মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচে দ্য রেডসদের হয়ে জোড়া গোল করেন রবার্টো ফিরমিনো ও মোহামেদ সালাহ। একটি করে গোল করেন ফিলিপ কুটিনহো, অক্সলেড-চেম্বারলেইন ও এ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ড। ১৯৬৯ সালের অক্টোবরে নরওয়ের মাঠে লিনকে ৬-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল লিডস ইউনাইটেড। এর ১২ বছর আগে আইরিশ ক্লাব শামরোক রোভার্সকে একই ব্যবধানে হারিয়েছিল আরেক ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যারিবোরের বিরুদ্ধে গোলোৎসব করে দুটি রেকর্ডকে পেছনে ফেলে ইতিহাস গড়েছে লিভারপুল।
×