ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ কালীপূজা ও দীপাবলী

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

আজ কালীপূজা ও দীপাবলী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আজ বৃহস্পতিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা (কালী পূজা) ও দীপাবলী। ধর্মীয় বিশ্বাস মতে, শ্যামা দেবী হলো শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের প্রতীক। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের লালনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ভক্তের জীবনে অবারিত কল্যাণের অঙ্গীকার নিয়ে ধরাপৃষ্ঠে আগমন ঘটে দেবী শ্যামার। আজ জননীরূপে বাঙালীর জীবনে আবির্ভাব ঘটবে মহাশক্তি ত্রিনয়নী মা শ্যামার। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে শক্তি ও শান্তির দেবী শ্যামা মায়ের আগমনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে এখন আনন্দ-উচ্ছ্বাস। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দমুখর পরিবেশে আজ অমাবস্যা তিথিতে দিবাগত রাতে দেশব্যাপী উদযাপিত হবে শ্যামাপূজা ও দীপাবলী। সন্ধ্যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিটি ঘরে, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে জ্বালানো হবে মঙ্গলপ্রদীপ (দেওয়ালি)। বিশ্বব্যাপী অবারিত মঙ্গল কামনায় হিন্দু সম্প্রদায় জাঁকজমকভাবে শ্যামাপূজা ও দীপাবলী উদযাপনে নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ঢাকাসহ বাংলাদেশের সর্বত্র আজ দিবাগত রাতে শুরু হবে শ্যামাপূজা। ঢাক-ঢোল, কাঁসর-মন্দিরা আর শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠবে দেশের পূজাম-পগুলো। ম-পে ম-পে চলবে মহাশক্তি দেবীর আরাধনা। বুধবার মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত একটানা উপবাসব্রত ও অমাবস্যার নিশিপালনের মাধ্যমে ভক্তরা শ্যামা মায়ের আনুকল্য লাভে অঞ্জলি দেবেন। নৈবদ্য সাজিয়ে দেবীর পায়ে তারা উৎসর্গ করেন। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শক্তির দেবী হিসেবে এভাবেই যুগ যুগ ধরে শ্যামা পূজার আয়োজন করে আসছেন। কোথাও শ্যামাপূজার আনন্দ-উৎসব চলবে আজ থেকে টানা তিনদিন। আবার কোথাও পূজা শেষে কাল শুক্রবার রাতে প্রতিমা বিসর্জন দেবে। স্বর্গীয় মাতা-পিতা, আত্মীয় স্বজনের নামে ঘরে ঘরে প্রদীপ প্রজ্বলন করবে হিন্দু সম্প্রদায়। রাতে শ্মশানে গিয়ে মোমবাতি-আগরবাতি জ্বালিয়ে, প্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে স্বর্গীয় বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করবে। অনেক বাড়িতে অশুভ শক্তি তাড়াতে ভূত পুড়ানো হবে। রাজধানীর পুরান ঢাকায় প্রতি বছরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি শ্যামা মায়ের পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকার থেকেও নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। ঢাকার অধিকাংশ পূজাম-পে আনা হয়েছে নানা বৈচিত্র্য। বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে পূজাম-পগুলো। পোস্তগোলা জাতীয় মহাশ্মশানে ২০টির মতো কালীপূজা অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, তাঁতীবাজার, শাঁখারীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, পাঁচশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী বনগ্রাম রাধা গোবিন্দ জিও মন্দির, জয়কালী মন্দির, রামসীতা মন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, রমনা কালী মন্দির, রাজারবাগের বরদেশ্বরী কালীমন্দিরসহ বিভিন্ন পূজাম-পে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে আলোকসজ্জা, ফানুস ওড়ানো, প্রদীপ প্রজ্বলন, ভক্তিমূলক গানের অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, আরতি, প্রসাদ বিতরণ প্রভৃতি।
×