ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়া আজ ফিরছেন

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

খালেদা জিয়া আজ ফিরছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লন্ডন সফরে গিয়ে তিন মাসেরও বেশি সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অবস্থান শেষে আজ বুধবার দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ইমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তার ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। এদিকে বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সেখানে অবস্থান করবে বলে জানা গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, খালেদা জিয়া আরও কিছুদিন লন্ডনে অবস্থান করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে তার বিরুদ্ধে পর পর কয়েকটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন তিনি। দেশে ফিরে শীঘ্রই তিনি সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন। জানা যায় কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে রাজধানীর প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের আজ সন্ধ্যায় বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে সংবর্ধনা দিতে নিজ নিজ এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকার আশপাশের জেলা গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীর নেতাদের নিজ নিজ এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে বিমানবন্দরে আসতে বলা হয়েছে। খালেদা জিয়া দেশে ফিরে প্রথমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া মামলাগুলো আইনগতভাবে মোকাবেলা করে জামিন নেয়ার চেষ্টা করবেন। জামিন পাওয়ার পর এ মাসের শেষের দিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ সফরে এলে তার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। এরপর তিনি নির্বাচনের সহায়ক সরকারের প্রস্তাব চূড়ান্ত করবেন এবং সুবিধাজনক সময়ে তা ঘোষণা করবেন। দেশে ফিরে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন শুরু করবেন খালেদা- রিজভী ॥ সরকারী দলের সব অপপ্রচার ও গ্রেফতারি পরোয়ানা বিদীর্ণ করে আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দেশে ফিরে আসছেন উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে ফিরেই তিনি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন শুরু করবেন। গ্রেফতারি পরোয়ানার মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে দুর্র্বল করা যাবে না। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাসাস আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, পালানোর অভ্যাস সরকারী দলের নেতাদের আছে, খালেদা জিয়ার নেই। খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেলেও তার দেশে ফেরার ঠিক আগ মুহূর্তে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে খালেদা জিয়াকে দুর্বল করা যাবে না। তিনি সচল, অব্যয়, অক্ষয়। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীই প্রধান বাধা মন্তব্য করে রিজভী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয়, সহায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। বিএনপি সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দেয়া বক্তব্য সম্পর্কে রিজভী বলেন, কেউ সত্য স্বীকার করলেই আওয়ামী লীগের গা জ্বলে। জিয়াউর রহমান এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা- এটাই সত্য। কখনও তা অস্বীকার করা যাবে না। রিজভী বলেন, দেশে কখন কি করতে হবে সব ছক আওয়ামী লীগ করে রেখেছে। কখন আইনমন্ত্রীকে ছুটিতে পাঠাতে হবে, কখন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে হবে, কখন প্রধান বিচারপতির ক্যান্সার হয়েছে বলতে হবে এসবের সময় নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু তারা কি ভুলে গেছে জনগণের একটা ছক আছে? আওয়ামী লীগকে দেশের জনগণ একদিন গলায় গামছা দিয়ে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাবে। আইনমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, মন্ত্রী সাহেব আপনি রাস্তায় বের হলে সামনে-পেছনে, ডানে-বায়ে পুলিশের হুইসেল বাজে। আপনি জনগণের মনের কথা কিভাবে বুঝবেন। আপনি যে মিথ্যাচার করছেন সেটা জনগণের মনে দাগ কেটে আছে। আপনি বলেন প্রধান বিচারপতির ক্যান্সার হয়েছে, আর তিনি বলেন আমি সুস্থ। আপনি এতবড় মিথ্যা কথা বলেন। মানববন্ধন কর্মসূচীতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, জাসাস সভাপতি ড. মামুন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, সহ-সভাপতি হাসান আহমেদ, মনিরুজ্জামান মনির, শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন রিপন প্রমুখ।
×