বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আজ শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানম-ির বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন। ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর দুরন্তপ্রাণ এই শিশু তার পিতার রাজনৈতিক জীবনকে দেখতে শুরু করেছিল মাত্র। বাবার বুকের গভীরে মুখ রেখে সাহস আর বীরত্বের উষ্ণতা নেবার যখনই ছিল শ্রেষ্ঠ সময়, ঠিক তখনই নরঘাতকদের দল তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। দশ বছরের শিশু রাসেল প্রতিদিনের মতো সেদিনও ঘুমিয়ে ছিল। আকস্মিক গুলির বীভৎসতায় তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুমভাঙ্গা চোখ নিয়ে সে আতঙ্কিত হয়, চমকে ওঠে। অবস্থা বুঝে বেগম মুজিব আদরের দুলাল রাসেলকে রক্ষায় কাজের লোকসহ পেছনের দরজা দিয়ে চলে যেতে বলেন। গেট দিয়ে বাইরে যাবার সময় ঘাতকরা তাকে আটক করে। এ সময় বাড়ির ভেতরে মুহুর্মুহু বুলেটের শব্দ আর বীভৎস আত্মচিৎকার শুনে অবুঝ শিশু রাসেল কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘাতকদের বলেছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব।’ কিন্তু এতটুকু মন গলেনি পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধী ঘৃণ্য নরপিশাচদের। আগেই বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সকল সদস্যকে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করেছে। মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঠা-া মাথায় একটি সুন্দর ও অবুঝ শিশু শেখ রাসেলকেও গুলি করে হত্যা করে।
বিলম্ব হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও শেখ রাসেল হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে, বিচারের রায়ও কার্যকর হয়েছে। কিন্তু বাঙালী জাতি এখনও পুরোপুরি কলঙ্কমুক্ত হতে পারেনি। কেননা এখন কয়েকজন আত্মস্বীকৃত খুনী বিদেশে পালিয়ে রয়েছে। সরকার থেকে পলাতকদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ- কার্যকরের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-শিশু সংগঠনগুলো বিস্তারিত কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- সকাল সাড়ে ৮টায় মিরপুর কবরস্থানে নিরনিদ্রায় শায়িত শহীদ শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে।
