ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠকের পর ত্রাণমন্ত্রী

রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য এক হাজার কোটি টাকা চায় আইওএম

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য এক হাজার কোটি টাকা চায় আইওএম

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে এক হাজার কোটি টাকা চায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আইওএমের মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইংয়ের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সংস্থাটির এই পরিকল্পনার কথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া। আর আইওএম মহাপরিচালক বলেছেন, রোহিঙ্গা নাগরিকদের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসাটা সময়ের সবচেয়ে বড় সঙ্কট। আইওএম মহাপরিচালের সঙ্গে বৈঠক শেষে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, লেসি সুইংয়ের বাংলাদেশে আসার উদ্দেশ্য ছিল রোহিঙ্গারা কী অবস্থায় আছে সেটা সরজমিনে দেখা। তাদের জন্য পরবর্তীতে কী করা যায় সেজন্য তিনি এসেছেন। তিনি সরেজমিনে রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখে এসেছেন। সেখানে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার ঘর অস্থায়ীভাবে দরকার। এক লাখ দশ হাজার ঘর তৈরি হয়েছে, এর মধ্যে আইওএম ৪৬ হাজার ঘর তৈরি করে দিয়েছে। ত্রাণমন্ত্রী জানান, বৃষ্টির জন্য ১৫ হাজার ছাতা, চার হাজার ৬০০ মাদুর আর এক লাখ পরিবারকে ক্রোকারিজ সামগ্রী দিয়েছে আইওএম। ইতোমধ্যে আইওএম পরিকল্পনা নিয়েছে। আরও কিছুদিনের জন্য এক হাজার কোটি টাকা তারা বরাদ্দ চেয়েছে বিভিন্ন সংস্থার কাছে। এ নিয়ে আগামী ২৩ অক্টোবর সভা আছে। সূত্র জানায়, আগামী ২৩ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে প্লেজিং কনফারেন্স আয়োজন করেছে আইওম, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় ইউএনএইচসিআর ও মানবিকতাবিষয়ক জাতিসংঘের সমন্বয়কের কার্যালয় ওসিএইচএ। এক হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২০০ কোটি টাকা আইওএম ইতোমধ্যে পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে জানিয়ে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, বাকি টাকার বিষয়ে জেনেভার সভায় উত্থাপন করবেন বলে মহাপরিচালক আমাদের জানিয়েছেন। তিনি জানান, আইওএমের বিশ্বাস এবং আমাদেরও বিশ্বাস সেই টাকাটা পেয়ে গেলে এ সমস্যাটা সাময়িকভাবে তাদের (রোহিঙ্গা) সহযোগিতা বেগবান করতে পারব। কুতুপালং রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পটি অস্থায়ী জানিয়ে তিনি বলেন, যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে তাদের ভাষাণচরে স্থানান্তর করা হবে। সেখানে নৌবাহিনী কাজ করছে। ক্যাম্প সরিয়ে নেয়ার জন্য আইওএম সর্ব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটে আন্তর্জাতিকভাবে আইওএম মিয়ানমারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে। আনান কমিশনের প্রতিবেদন মোতাবেক রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে দেশে ফেরত নেয়ার জন্য আরও চাপ সৃষ্টি করবেন বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক। রোহিঙ্গা সমস্যাকে বড় ধরনের মানবিক সঙ্কট আখ্যা দিয়ে আইওএমের মহাপরিচালক লেসি সুইং বলেন, আমরা মনে করি এবং এ বিষয়ে একমত হয়েছি যে, এটি খুব বড় মানবিক সঙ্কট। ¯্রােতের মতো বিপুলসংখ্যক মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসাটা সময়ের সবচেয়ে বড় সঙ্কট। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি এটি নজিরবিহীন ঘটনা। ২৫ আগস্ট সহিংসতা শুরুর পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৫০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। উল্লেখ্য, আইওএম মহাপরিচালক চারদিনের সফরে গত রবিবার বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশে আসার পর তিনি গত সোমবার রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখার জন্য কক্সবাজার যান।
×