ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্যাস পাইপ লাইন কেটে ফেলায় বিপত্তি

রাজধানীর রামপুরা বনশ্রী ও খিলগাঁওয়ে চুলা জ্বলেনি

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৭ অক্টোবর ২০১৭

রাজধানীর রামপুরা বনশ্রী ও খিলগাঁওয়ে চুলা জ্বলেনি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুলা না জ¦লায় সোমবার সকালের খাওয়া নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে রাজধানীর একাংশের মানুষকে। রবিবার রাতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পয়ঃনিষ্কাশন লাইন বসাতে গিয়ে পূর্ব রামপুরা হাইস্কুলের কাছে তিতাসের একটি পাইপ কেটে ফেলায় এই বিপত্তি ঘটে। তিতাস গভীর রাতে সরবরাহ লাইনটি বন্ধ করে দেয়। এতে সোমবার সকালে রামপুরা, বনশ্রী এবং খিলগাঁও এলাকার প্রায় সব বাড়িতে গ্যাসের চুলা জ¦লেনি। তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মীর মশিউর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, আমরা খবর পেয়ে গ্যাস লাইনটি সংস্কার করেছি। সোমবার দুপুর নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। রামপুরা এলাকায় গত কয়েক মাস ধরেই ওয়াসা এবং সিটি কর্পোরেশন পয়ঃনিষ্কাশন এবং পানি সরবরাহ লাইন নির্মাণ করছে। এলাকার অধিকাংশ রাস্তা খুঁড়ে রেখেছে দুই প্রতিষ্ঠান। তীব্র ভোগান্তির মধ্যেই রামপুরা এবং খিলগাঁও এর মানুষ বসবাস করছে। এসব এলাকায় প্রধান সড়ক থেকে অলিগলিও খুঁড়ে রাখায় ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এর আগে রামপুরা ব্রিজ থেকে হাজিপাড়া পর্যন্ত বিভিন্ন লাইনের সংস্কার করা হয়েছে। এখন রামপুরা ব্রিজ থেকে বাড্ডা এলাকার দিকে রাস্তা খোঁড়া হচ্ছে। তিতাস দাবি করছে রাস্তা খোঁড়ার সময় কোথায় তিতাসের লাইন রয়েছে তা দেখা হচ্ছে না। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। তিতাসের জরুরী বিভাগের ডিজিএম আরমানুর রেজা ভূঁইয়া বলেন, রাজধানীর পূর্ব রামপুরায় হাইস্কুলের কাছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা সংস্কারের কাজ করার সময় রবিবার রাতেই পাইপ লাইনটি কাটা পড়ে। এরপর আমাদের জানানো হলে তাৎক্ষণিকভাবে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হয়। সকাল ১০টায় আমরা সংস্কার কাজ শুরু করি। দুপুর নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। এদিকে সকালে চুলা না জ¦লায় বিপাকে পড়েন এই সব এলাকার মানুষ। প্রায় সকলেই সকালের খাবারের জন্য হোটেল রেস্তরাঁয় ছুটে যান। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সকালে প্রায় সকল খাবারের দোকানের সামনে স্থানীয়দের লম্বা লাইন ছিল। অনেকেই এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার সংগ্রহ করেছেন। তবে সীমিত সময়ের মধ্যে হোটেল রেস্তরাঁর খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় শুকনো খাবারের ওপরই ভরসা করতে হয়েছে অনেককে। তবে সব থেকে বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী নারীরা। যারা সকালে উঠেই দুপুরের রান্না শেষ করে অফিসে যান দিনটির জন্য তাদের বিকল্প চিন্তা করতে হয়েছে। বনশ্রী সি ব্লকের কাবাব ঘরের মালিক নুরুল হুদা জানান, গ্যাস না থাকায় সকাল থেকে মানুষের উপচেপড়া ভিড় সামাল দিতে হচ্ছে। বেলা ১১টার মধ্যে সব খাবার শেষ হয়ে গেছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ সকালের খাবার তৈরি করা হয় তার কয়েকগুণ বেশি তৈরি করার পরও অনেককেই খাবার দেয়া সম্ভব হয়নি। স্থানীয় আড্ডা বিরিয়ানি হাউজের একজন কর্মী জানান, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত খাবার কিনতে আসা মানুষের চাপ ছিল। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা খাবার কিনেছেন। অনেককেই খাবার নিতে ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা শায়লা শারমিন জানান, সকালে ঘুম থেকে জেগে রান্নাঘরে গিয়ে দেখি গ্যাস নেই। খবর নিয়ে জানলাম আশেপাশের সব জায়গার একই অবস্থা। কোন ধরনের ঘোষণা নেই এরপর কখন সরবরাহ স্বাভাবিক হবে তাও জানা সম্ভব না হওয়ায় এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হয়েছে।
×