ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্য

উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রমে বড়ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে ॥ শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৬ অক্টোবর ২০১৭

উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রমে বড়ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে ॥ শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের উচ্চ শিক্ষাকে বিশ্বমানে উন্নীত করতে শিক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, দেশের উচ্চ শিক্ষা বিশ্বমানে উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। ২০৩০ সাল নাগাদ উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন কমিটি তাদের সুপারিশ পেশ করেছে এবং একটি খসড়া পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নে এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল আইন পাস হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা কমিশনও গঠন করা হবে। রবিবার ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ড্রাফট স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ফর হায়ার এডুকেশন ইন বাংলাদেশ : ২০১৭-২০৩০’ শীর্ষক কর্মশালায় শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আওতাধীন ‘হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (হেকেপ)’-এর উদ্যোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এডুকেশন স্পেশালিস্ট ইয়োকো নাগাশিমা, হেকেপ প্রকল্প পরিচালক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহান্ত প্রমুখ। আলোচনায় অংশ নেন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মীজানুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। খসড়ার কৌশলগত পরিকল্পনার ওপর পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা পেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লা। আলোচনায় বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষাবিদ ও উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তারা অংশ নেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। উন্মুক্ত ও সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে হবে। অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এতে থাকবে। তথ্যের ভিত্তিতে ভবিষ্যতের জন্য করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। সবার পরামর্শ এতে সন্নিবেশিত করা হবে। তিনি অতিদ্রুত লক্ষ্য-নির্ভর একটি কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নে এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল আইন পাস হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা কমিশন গঠন করা হবে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা প্রথাগত ধারণার পরিবর্তন চাই। শিক্ষা হবে দক্ষতানির্ভর, যাতে একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত অর্থে মানবসম্পদে পরিণত হতে পারে। প্রফেসর ইউসুফ আলী মোল্লা তার প্রবন্ধে বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করতে আমাদের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানের প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে পাঠদান ও গবেষণার উন্নয়নের জন্য আমাদের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাদকমুক্ত রাখতে অধিদফতরের সুপারিশ দেশের কোটি কোটি শিক্ষার্থী তথা তরুণসমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। ইতোমধ্যে এ লক্ষ্যে কেবলমাত্র শহর অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠে যেন বহিরাগতরা খেলাধুলা করতে পারে সে বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি মতামত পাঠানো হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠির মতামতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ শহরে খেলাধুলা করার জন্য পর্যাপ্ত মাঠ নেই। তাই ওই সব এলাকার তরুণরা খেলাধুলা না করে মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। আর এর থেকে পরিত্রাণ পেতে শহর এলাকার স্কুলের মাঠগুলো যাতে সবাই খেলাধুলার জন্য ব্যবহার করতে পারে সেজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি মতামত চাওয়া হয়। এক্ষেত্রে ওই চিঠিতে নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ব্যবহারে অনুমতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠদানের ধরন বিবেচনায় নিয়ে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি, মাঠগুলোতে খেলাধুলার ধরন ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে শিক্ষা অধিদফতর।
×