ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রূপালী ব্যাংক

সিবিএ নেতাদের চাকরি পুনর্বহালে নৌমন্ত্রীর হুমকি!

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ১৬ অক্টোবর ২০১৭

সিবিএ নেতাদের চাকরি পুনর্বহালে নৌমন্ত্রীর হুমকি!

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে রূপালী ব্যাংকের কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৯ নেতাকর্মীর চাকরিচ্যুতসহ বিভিন্ন শাস্তি প্রত্যাহারে হুমকি দিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার হিনহার ইতিহাস সবার জানা। গোড়ায় হাতদিলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। সুতরাং বিষয়টির সম্মানজনক সমাধান করুন। রবিবার দুপুর ২টায় রূপালী ব্যাংকে সিবিএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ হুমকি দেন। শাজাহান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে। শ্রমিক নেতাদের দোষ দিয়ে আদমজী জুট মিল বন্ধ করেছিল বিএনপি। অফিসারদের লুটপাটের কথা কিন্তু বলা হয়নি। গোড়ায় হাত দিলে অনেক কিছু বেরিয়ে যায়। এতটুকু বলব প্রধান বিচারপতি সিনহার ইতিহাস সবার জানা। সুতরাং গোড়ায় হাত দিলে অনেকের অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। আমরা চাইনা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে যারা আছেন তাদের অনেক কিছু বেরিয়ে যাক। আমার অনুরোধ একটা সম্মানজনক সমাধান আপনারা করুন। সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকলেও বলুন। আমরা রাজি আছি এবং শ্রমিক নেতাদের উচিত হবে ঐক্যবদ্ধভাবে বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে ভাবা। আমি এ বিষয়ে এতদিন কথা বলিনি। ম্যানেজমেন্টের আচরণ পর্যবেক্ষণ করেছি। তাদের আচরণ সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। রূপালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এটি পূর্ব নির্ধারিত কোন কর্মসূচী ছিল না। ব্যাংকের কাছ থেকে কর্মসূচী পালনের জন্য অনুমতিও গ্রহণ করা হয়নি। চাকরিচ্যুত সিবিএ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ জানান, সমবেদনা জানানোর জন্য মন্ত্রী মহোদয় এসেছিলেন। ট্রেড ইউনিয়ন রক্ষা করতে, ব্যাংক বাঁচাতে সমঝোতা করতে ম্যানেজমেন্ট বলেছেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিনসহ শ্রমিকলীগ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিবিএ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মোঃ নূরুজ্জামান, উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ শওকত আলী খান, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন ও প্রি›িসপাল অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন সরকারের সঙ্গে গুরুতর অসদাচরণ ও অশালীন আচরণ করে সিবিএ নেতারা। এমনকি ওই কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করে তারা। ওই ঘটনায় ১৯ আগস্ট সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, সেক্রেটারি মোঃ কাবিল হোসেন কাজী ও কেয়ারটেকার মোঃ আরমান মোল্লাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় ড্রাইভার মোঃ আবুল কালাম আজাদকে। আর ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে কেয়ারটেকার মোঃ আনোয়ার হোসেন, ছাব্বির আহমেদ ভুঁইয়া ও মনিরুল ইসলামসহ এ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (গ্রেড-১) মোঃ আহসান হাবিবকে। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিবিএর শাস্তির পর তবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের সিবিএর শাস্তির ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে গত ২৩ আগস্ট জাতীয় শোকদিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রূপালী ব্যাংক সিবিএ। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, বিশেষ অতিথি অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মোঃ সোহরাব উদ্দিন, রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতাউর রহমান প্রধান, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত থকার কথা থাকলেও তারা কেউউ উপস্থিত হননি।
×