ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অনুপ্রবেশ থামছে না

কৌশলে বাংলাদেশে সব রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসনের নীলনক্সা!

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ১৫ অক্টোবর ২০১৭

কৌশলে বাংলাদেশে সব রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসনের নীলনক্সা!

হাসান নাসির/এইচএম এরশাদ ॥ নাফ নদী পাড়ি দিয়ে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা আসতে এখন আর বাধা নেই। ওপারে সৃষ্ট ভীতিকর পরিস্থিতির বিপরীতে সীমান্তে কঠোরতা না থাকায় তাদের নিরাপদ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। একসঙ্গে এতবেশি রোহিঙ্গার স্রোত এর আগে আর ঘটেনি। ঐতিহাসিকভাবে রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি রাখাইন রাজ্য হলেও তাদের অধিকাংশই এখন বাংলাদেশে। মিয়ানমারে আর বড়জোর লাখ তিনেক রোহিঙ্গা থাকতে পারে বলে ধারণা দিচ্ছে এপারে অনুুপ্রবেশকারীরা। এর মধ্যে ত্রিশ হাজারের মতো দালাল বাদ দিলে বাকিরাও তল্পিতল্পা গুটিয়ে এদিকে যাত্রা করতে প্রস্তুত। নির্যাতন বন্ধ হওয়ার পরও রোহিঙ্গারা যেভাবে প্রতিদিনই হাজারে হাজারে ধেয়ে আসছে তার নেপথ্যে কোন ধরনের পরিকল্পনার ছক রয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কৌশলে সকল রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে এনে পুনর্বাসনের নীল নক্সা নয় তো? আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মিকে (আরসা) নিয়ে এখন আর ভাবছে না মিয়ানমার সরকার। অস্ত্রবিরতির মেয়াদ শেষে আলোচনার প্রস্তাব থাকলেও সংগঠনটির শক্তি-সামর্থ্য এবং ভিত্তি এমন নয় যে, সরকার তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রয়োজন অনুভব করবে। এদিকে মিয়ানমার নেত্রী আউং সান সুচি এবং সেনাপ্রধান মিন অং লাইং এর পরস্পরবিরোধী যে বক্তব্য, তাতে রোহিঙ্গা নিয়ে সেদেশের সরকার অভ্যন্তরে পাল্টাপাল্টি অবস্থান রয়েছে বলে প্রতীয়মান। সুচি তাঁর বক্তব্যে কিছু আশার আলো দেখাবার চেষ্টা করলেও পরক্ষণেই তা ভ-ুল হয়ে যাচ্ছে সেনাপ্রধানের অফিসিয়াল পেজে দেয়া ভাষ্যে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ইউনিয়ন এবং দ্বিপাক্ষিক নানা তৎপরতার বিপরীতে মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে আসা বক্তব্য প্রকৃত অর্থেই আন্তরিক নাকি কালক্ষেপণের কৌশল তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সেই বিপদগ্রস্ত নিরীহভাব কেটে যেতে শুরু করেছে। তাদের প্রতি আগে যেমন একতরফা সহানুভূতি দেখা গিয়েছিল তা ক্রমেই কমছে। এখন বরং তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে শেষ পর্যন্ত এরা থেকে যায় কিনা তা ভেবে শঙ্কিত স্থানীয়রা। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অফিসের র‌্যাপিড রেসপন্স মিশনের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী গত ২৫ আগস্টের পর থেকে ১৩ অক্টোবর শুক্রবার পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছে ৫ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা। এ অনুপ্রবেশ এখনও অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই দলে দলে এবং বিচ্ছিন্নভাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধের পাশাপাশি অনুপ্রবেশকারীদের যথাযথ অধিকার দিয়ে প্রত্যাবাসনে ইতিবাচক অগ্রগতি দৃশ্যমান না হওয়া পর্যন্ত এ স্রোত অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশে আসা অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যে এখন আর বড়জোর আড়াই থেকে তিন লাখ রোহিঙ্গা থাকতে পারে। এর মধ্যে ৩০ হাজারেরও মতো রয়েছে সেদেশের সরকারের দালাল, যারা সীমান্ত পাড়ি দেবে না। সরকারই বরং তাদের আদর যতœ করে রেখেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এবং পর্যবেক্ষক দলের কাছে শেখানো বক্তব্য উপস্থাপন করাতে। বাকিরা পাহাড় পর্বতে আশ্রয় নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছে অনাহারে-অর্ধাহারে। তারাও রয়েছে বাংলাদেশে চলে আসার পরিকল্পনায়। সূত্র জানায়, মিয়ানমারের মূল ভূখ- থেকে রাখাইন রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা ময়ু পর্বতমালার বিভিন্ন পাহাড়ে আশ্রয় নিয়ে আছে অর্ধ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। তারা চরম দুর্দশার মধ্যে আছে বলে খবর রয়েছে এপারের রোহিঙ্গাদের কাছে। সুযোগ পেলে তারাও সীমান্ত অতিক্রম করবে। রোহিঙ্গা সঙ্কট মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ হলেও তা আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশে। দফায় দফায় সহিংসতার কবলে পড়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন ১০ থেকে ১১ লাখ। এছাড়া সৌদি আরবে ৫ লক্ষাধিক, পাকিস্তানে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক, মালয়েশিয়ায় প্রায় দেড় লাখ, থাইল্যান্ডে ৫০ হাজার, ভারতে ৫০ হাজারের কাছাকাছি এবং বিভিন্ন দেশে আরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে। বাকিরা হয়তো রাখাইন প্রদেশে থাকতে পারবে না, এমনই আশঙ্কা তাদের। এদিকে এর আগেও দফায় দফায় রোহিঙ্গা বিতাড়ন ঘটলেও তা নিয়ে এত বেশি সমালোচনা এবং চাপের মুখে পড়েনি মিয়ানমার সরকার। এখনও কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত না হলেও জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার চাপের মুখে পড়েছে দেশটির সরকার। সে কারণে সেদেশের সেনাবাহিনী প্রধানের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের পাশাপাশি আসছে আউং সান সুচির আশাজাগানিয়া বক্তব্যও। তবে সুচির ক্ষমতা কতটুকু তা সকলের জানা। অনেকেই মনে করছেন, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের যে অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে উঠেছে তা থেকে নিজকে নিরাপদ রাখতে সুচি এই বক্তব্যগুলো দিয়ে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি চাইলেও তার কিছু করার ক্ষমতা নেই। কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ায় আশ্রিত রোহিঙ্গারাও বিশ্বাস করেন না যে, সুচি তাদের জন্য কল্যাণকর কিছু করতে সমর্থ হবেন। সুচির সমালোচনা করলেও তিনি যে, ক্ষমতাহীন তা মানছে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা আন্দোলনে বাংলাদেশ ভূখ- ব্যবহারের শঙ্কা বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা শুরুতে বিধ্বস্ত এবং নিরীহ আচরণে থাকলেও এখন তারা ধীরে ধীরে গুছিয়ে উঠতে শুরু করেছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ত্রাণ বিতরণ, চিকিৎসাসেবা, প্রাথমিক আবাসন, স্যানিটেশন, সুপেয় পানির ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। এখন এমন পরিবার একটিও নেই, যে পরিবারটি ত্রাণবঞ্চিত হচ্ছে। বরং তারা একাধিক স্থান থেকে ত্রাণ পাচ্ছে। ছুটছে এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পে। নগদ অর্থের অভাব থাকলেও ঘরে খাদ্যের অভাব নেই। একাধিক ক্যাম্পে গিয়ে পাওয়া বাড়তি ত্রাণ থেকে কিছু তারা বিক্রিও করছে। বিপদে পড়ে আসা এ মানুষগুলোকে ব্যবহারে বিভিন্ন গোষ্ঠীর তৎপরতাও লক্ষণীয়। উখিয়া এবং টেকনাফের ক্যাম্প এলাকায় শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন স্লোগান ও দাবিসংবলিত ডিজিটাল ব্যানার। সেখানে নাগরিকত্বের অধিকারসহ ২৩ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। তারা বলছে, বর্মি সরকার এ দাবিগুলো মেনে নিলে তবেই ফিরে যাবেন। এমন বক্তব্যে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি এ দাবিগুলো মেনে না নিলে তারা বাংলাদেশেই থেকে যাবে? এটা তো তাদের দেশ নয়। এদিকে বিভিন্ন দাবিতে বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির আলামতও সৃষ্টি হয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রতি ইন্ধন রয়েছে কিছু গোষ্ঠীর, যারা তাদের আন্দোলনে নামানোর চেষ্টা করছে। দাবিগুলো ন্যায্য হলেও এ নিয়ে রোহিঙ্গারা আন্দোলন শুরু করলে অভিযোগ উঠতে পারে রোহিঙ্গাদের তৎপরতায় বাংলাদেশের ভূখ- ব্যবহারের। মিয়ানমার সরকার এমনিতেই রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। এর মধ্যে যদি আশ্রিত রোহিঙ্গারা আন্দোলন সংগ্রাম করে তাহলে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আনতে পারে সেই পুরনো অভিযোগ। বলতে পারে যে, বাংলাদেশ মিয়ানমারকে অস্থিতিশীল রাখতে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় এবং সহযোগিতা দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিশ্বের দৃষ্টি অন্যত্র সরে গিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। রোহিঙ্গা ভিড়ে স্থানীয়রা সংখ্যালঘু দলে দলে স্রোতের মতো অনুপ্রবেশের পর এখন মিয়ানমার থেকে বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিদিনই আসছে অসংখ্য রোহিঙ্গা পরিবার। কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফে মাইলের পর মাইল এখন শুধু রোহিঙ্গা আর রোহিঙ্গা। সড়কের দু’পাশে বাঁশ ও পলিথিনে তৈরি হাজার হাজার ঘর। বিষয়টি বড় ইস্যুতে পরিণত হওয়ায় সারাবিশ্বের দৃষ্টিও রোহিঙ্গাদের দিকে নিবদ্ধ। আর তাদের ভিড়ে উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দারা পরিণত হয়েছে সংখ্যালঘুতে। প্রতিদিন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ফলে পুরো রাখাইন রাজ্যই রোহিঙ্গাশূন্য হতে আর বেশি বাকি নেই। স্থানীয়রা শুরুতে কিছু সহানুভূতি দেখালেও এখন অনেক অভিযোগও তুলে ধরছেন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে। কুতুপালং এলাকার একটি পরিবার জানায়, রোহিঙ্গারা তাদের পুকুর পাড়ে ঘর তৈরি করছিল। বাধা দেয়ায় তারা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছে যে, তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়েছে। যেহেতু এ ধরনের ঘটনা কিছু ঘটেছে সেহেতু প্রশাসনও বিশ্বাস করেছে। এতে বেকায়দায় পড়েছে পরিবারটি। সংখ্যায় রোহিঙ্গারা বেশি হয়ে যাওয়ায় তাদের অন্যায় আধিপত্যও মেনে নিতে হচ্ছে। মহিউদ্দিন নামের এক গ্রামবাসী জানান, শীত মৌসুমে মরিচসহ অনেক ধরনের শাকসবজির চাষ তারা করে থাকেন। কিন্তু সড়কের পাশে উঁচু জমিগুলোতে এখন রোহিঙ্গাবসতি। তারা যদি সরে না যায় তাহলে শাকসবজি চাষ থেকে উপার্জনের পথ বন্ধ। নির্যাতন নয় হুমকিতেই বিতাড়ন বাংলাদেশে যারা এসেছে তারা বলছেন, এখনও গ্রামে গ্রামে গিয়ে সেনা ও মগরা দেশ ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে সেখানে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গাদের। তবে ধনাঢ্য রোহিঙ্গারা সেনাদের মোটা অঙ্কের কিয়েত দিয়ে বসবাস করে চলছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী আপাতত নির্যাতন না চালালেও এখন রাখাইন যুবকরা রোহিঙ্গাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। চলছে হুমকি-ধমকি এবং ভিটেবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার আল্টিমেটাম। ছোটখাটো দোকানে রাখাইন যুবকরা হানা দিয়ে টাকা-কাপড়-চোপড় লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার সকালে নতুন করে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা জানায়, নৌকায় করে নাফ নদী পার হওয়ার আগে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান করতে দেখেছি। তারা নৌকা না পেয়ে এদিকে আসতে পারছে না। বালুখালী বস্তির রোহিঙ্গা মাঝি লালু জানান, বলি বাজার, বুচিদং ও রাসিদংয়ে চলছে মাইকিং। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে চলে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। যারা যেতে না চায়, তাদের পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে। অপেক্ষমাণ রোহিঙ্গারা কয়েকদিনের মধ্যেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলে জানান লালু মাঝি। হাতির আক্রমণে ৪ রোহিঙ্গা নিহত কক্সবাজারের উখিয়ায় বন্যহাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া ৪ রোহিঙ্গা। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৭ জন। শনিবার ভোররাতে বালুখালী ক্যাম্পের ডি-ব্লকের পাহাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফজুরুল হক টুটুল জানান, মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে এসে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা উখিয়ার বালুখালী পাহাড়ী এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। তারা হাতির আশ্রয়স্থল নষ্ট করে গড়ে তুলেছে ঘরবাড়ি। শনিবার ভোরে হাতির একটি দল তা-ব চালায় পাহাড়ী এলাকায়। ওই সময় হাতির আক্রমণে ঘটনাস্থলে ৩ শিশুসহ ৪ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়। আহত হয় আরও ২ রোহিঙ্গা। চিকিৎসার জন্য আহতদের উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় বেশকিছু ঘর-বাড়িও বিধ্বস্ত করে বন্যহাতির দল। তিনি জানান, নিহত ৪ জন রোহিঙ্গার মধ্যে ৩৫ বছরের এক নারী, ৯ থেকে ১১ বছরের ৩ জন শিশু রয়েছে। তাদের স্থানীয়ভাবে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাতির আক্রমণ থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় আরও ৫ রোহিঙ্গা আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতা বকতার আহমদ এ জন্য বন্যহাতি চলাচলের পথ বন্ধ করে বসতি স্থাপন করাকে দায়ী করেছেন। তিনি জানান, হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে রোহিঙ্গাদের মৃত্যু ঘটনা থেমে নেই। শনিবারে হতাহতরা ছাড়াও উখিয়া-টেকনাফে গত এক মাসে বন্যহাতির পায়ের চাপায় দলিত হয়ে মারা গেছে অন্তত দশ রোহিঙ্গা। মাত্র দু’মাস আগেও কুতুপালং-টিভি রিলে কেন্দ্র এলাকায় তেমন কোন বসতিই ছিল না। অথচ এখন লাখ লাখ মানুষ সেখানে। এলাকাটি ছিল বন্যহাতির পাল চলাচলে তৈরি রাস্তা। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটি অংশ ঘর বানিয়েছে হাতি চলার পথের ওপর। আর এতেই দেখা দিয়েছে বিপত্তি। আশ্রয়প্রার্থীরা বলছেন, ঝুঁকি জেনেও এখানেই বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। একের পর এক ঘটনা ঘটায় সেখানে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্পে নিয়ে আসার কথা বলছে জেলা প্রশাসন।
×