ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ০-৭ ভারত

ভারতের কাছেও হারল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

ভারতের কাছেও হারল বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চাক দে ইন্ডিয়া... ৬০ মিনিটের ম্যাচে মোট সাতবার লাউড স্পীকারে বেজেছে গানটা। সাতবার কেন? প্রতিবার গোল হওয়াতে! যতবারই বেজেছে, ততবারই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসা হাজার সাতেক বাংলাদেশী দশর্ক-সমর্থক-অনুরাগীর। কারণ গোলগুলো যে হয়েছে তাদের প্রিয় বাংলাদেশ দলের গোলপোস্টে! প্রত্যাশা ছিল ড্র কিংবা ভাল খেলে কম গোলে সম্মানজক হার। কিন্তু তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল। এশিয়া কাপ হকিতে শুক্রবার তারা পুল ‘এ’ তে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ০-৭ বিধ্বস্ত হয়েছে ভারতের কাছে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে এই আসরের দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। পক্ষান্তরে টানা দুই ম্যাচেই হেরে এখনও পয়েন্টশূন্য থেকে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতেই আছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এই জয়ে সুপার ফোরে যাওয়ার পথে এক পা দিয়ে রাখল ভারত আর সেই স্টেজে যাওয়ার কোন আশাই নেই লাল-সবুজ বাহিনীর। যদিও জাপানের সঙ্গে শেষ গ্রুপ ম্যাচটি এখন খেলা বাকি আছে তাদের। তবে সেই ম্যাচে জিতলেও কোন লাভ হবে না বাংলাদেশ দলের। কেননা ওই ম্যাচে জিতলে জাপানের পয়েন্ট হবে ৪, বাংলাদেশ জিতলে হবে ৩ অথচ পাকিস্তানের ইতোমধ্যেই হয়ে আছে ৪ আর ভারতের ৬। শেষ ম্যাচে পাকিস্তান জিতলে বা ড্র করলে কপাল পুড়বে জাপানের। বাদ পড়তে হবে তাদেরও। তবে শেষ ম্যাচে পাকিস্তান হারলে (ভারতের বিপক্ষে) এবং জাপান জিতলে দু’দলেরই পয়েন্ট সমান (৪) হয়ে যাবে। তখন বিবেচনায় আসবে গোল পার্থক্য। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ম্যাচে ০-৭ গোলে হেরেছিল পাকিস্তানের কাছে আর ভারত তাদের প্রথম ম্যাচে জাপানকে হারিয়েছিল ৫-১ গোলে। শক্তির বিচার করলে ভারতই ছিল ফেভারিট আর বাংলাদেশ আন্ডারডগ। বিশ^ র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারতের অবস্থান ষষ্ঠ। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ আছে ৩৪ নম্বরে। ফলে ম্যাচের ফলাফলও হয়েছে তেমনই! তারপরও বাংলাদেশ দলের সমালোচনা না করে পারা যাচ্ছে না। কেননা প্রথম ম্যাচের ভুলগুলো সংশোধন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি জিমিবাহিনী। প্রচুর ভুল করেছে তারা। বার বার বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। মাঠ বড় করে খেলতে পারেনি। পজিশন সেন্সও ছিল যাচ্ছেতাই। প্রতিপক্ষের গতি ও দমের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি তারা। না, একটি অর্ধে অবশ্য ভালই পেরেছে। তৃতীয় কোয়ার্টারে বিস্ময়করভাবে কোন গোল হজম করেনি তারা। ভারতের সঙ্গে খেলে পাল্লা দিয়ে। এটুকু বাদ দিলে পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে ভারত। তবে ঠিকমতো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে তাদের গোলের সংখ্যা ডজনে গিয়ে ঠেকলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। ম্যাচের ৭ মিনিটে গুরজন্ত সিংয়ের গোলে ম্যাচে লিড নেয় ভারত (১-০)। পরের মিনিটেই গোলমুখে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন সুনীল। ১০ মিনিটে গোলরক্ষক অসীম গোপের দক্ষতায় আরেকটি গোল হজমের হাত থেকে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ওই মিনিটেই আকাশ দ্বীপ সিংয়ের ফিল্ড গোলে ২-০ তে এগিয়ে যায় ভারত। ১৩ মিনিটে ললিত উপাধ্যায়ের গোলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৩-০। ২০ মিনিটে অমিত রোহিদাসের গোলে ৪-০তে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ২৮ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোক পায় ভারত। বাংলাদেশ রেফারেলের আবেদন করে। তবে সিদ্ধান্ত ভারতের পক্ষেই যায়। হারমান প্রীতের পেনাল্টি স্ট্রোক জড়িয়ে যায় পোস্টে (৫-০)। দ্বিতীয় কোয়ার্টার শেষ হয়। তৃতীয় কোয়ার্টারের শুরুতেই একটা পেনাল্টি পায় ভারত। তবে কোন গোল হয়নি। ৪৬ মিনিটে ভারত পেনাল্টি কর্নার পায়। ডান প্রান্ত থেকে বাড়িয়ে দেয়া সতীর্থের হিটে ফিনিশিং টোকা দেন রনদ্বীপ সিং (৬-০)। ৪৭ মিনিটে হারমান প্রীত সিংয়ের ড্রাগ এ্যান্ড ফ্লিক বাংলাদেশের গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে আশ্রয় নেয় পোস্টে (৭-০)।
×