ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাজেদা চৌধুরীর গাড়িবহরে হামলা, আটক ৩

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

সাজেদা চৌধুরীর গাড়িবহরে হামলা, আটক ৩

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর, ১৩ অক্টোবর ॥ নগরকান্দার তালমার মোড়ে জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) আসনের সংসদ সদস্য সাজেদা চৌধুরীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় বহরে থাকা পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। হামলাকারীদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন নগরকান্দা থানার ওসি এএফএম নাসিমসহ পাঁচজন। হামলা ঠেকাতে পুলিশ ফাকা গুলি ছোড়ে। পুলিশ গাড়িবহরে হামলাকারী তিনজনকে আটক করেছে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের তালমার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী দুদিনের সফরে দুপুরে নগরকান্দা ও সালথায় আসছিলেন। এ সফরে তিনি নিজ বাড়ি সালথার রসুলপুরে অবস্থান করবেন। নিজ বাড়িতে নগরকান্দার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা ছিল। নগরকান্দায় সাজেদা চৌধুরীর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব করেন ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়মন আকবর চৌধুরী। আয়মন আকবরের সঙ্গে বিভিন্ন কারণে নগরকান্দা ও সালথার বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতার মতবিরোধ রয়েছে। সাজেদা চৌধুরীর আগমন উপলক্ষে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নগরকান্দার তালমার মোড় এলাকায় নেত্রীকে স্বাগত জানাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। ওই সময় আয়মন আকবরের দেহরক্ষী বলে পরিচিত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর ফকিরের নেতৃত্বে একদল লোক আগামী জাতীয় সংসদে ফরিদপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী নগরকান্দা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়ার পোস্টার ছেঁড়ে ও তোরণ ভাংচুর করে। জামাল হোসেন মিয়া সাজেদা চৌধুরীর সাবেক এপিএস ছিল। পোস্টার ছেঁড়া ও তোরণ ভাংচুরের খবর পেয়ে জামালের সমর্থকরা তালমার মোড় এলাকায় সমবেত হয়। পুলিশ সংঘর্ষ এড়াতে দুপক্ষের মাঝামাঝিতে অবস্থান নেয়। জামালের সমর্থকরা তালমার মোড়ের পেট্রোল পাম্প এলাকায় এবং সাজেদার সমর্থকরা তালমার মোড় হয়ে নগরকান্দায় ঢোকার সড়কের মুখে অবস্থান নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর আড়াইটার দিকে সাজেদা চৌধুরীর গাড়িবহর তালমার মোড় অতিক্রম করে। ওই সময় পেট্রোল পাম্পের সামনে অবস্থানরত জামালের সমর্থকরা বহরের গাড়িগুলোর দিকে ইট ছুড়ে মারতে শুরু করে। ইটের আঘাতে নগরকান্দা সার্কেল এএসপি মহিউদ্দিনের মাইক্রোবাসের কাঁচ ভেঙ্গে যায়। এছাড়া সাজেদা চৌধুরী ও তার ছেলে আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরীর গাড়িতে ইট লাগলেও বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়নি। হামলাকারীদের ইটের আঘাতে অন্য একটি গাড়িতে থাকা নগরকান্দার ওসি নাসিম আহত হন। হামলার পর সাজেদা চৌধুরী সরাসরি গাড়িবহর নিয়ে নিজ বাড়ি রসুলপুরে চলে যান। ওসি নাসিমকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হরা হয়েছে। ওসি এএফএম নাসিম বলেন, ইটের আঘাতে বহরের একটি গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে গেছে এবং তিনি নিজে আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, এ সময় পুলিশ কয়েকটি ফাকা গুলি ছোড়ে। ফলে হামলাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। হামলাকারী সন্দেহে সেখান থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। হামলার বিষয়ে নগরকান্দা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া বলেন, আমার যেসব পোস্টার ছেঁড়া ও তোরণ ভাংচুর করা হয়েছে সেখানে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিল। এ কারণেই স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে ভাংচুর প্রতিরোধ করতে এগিয়ে গেলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াহেদুজ্জামান মিয়া বলেন, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর গাড়িবহর তালমার মোড় অতিক্রম করার সময় জামাল হোসেনের সমর্থকরা হামলা চালায়। তবে তিনি অক্ষত আছেন।
×