ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কমছে আবেগ, বাড়ছে চাপ ॥ অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় লক্ষাধিক

রোহিঙ্গাদের স্থায়ী নিবাস হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের স্থায়ী নিবাস হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

হাসান নাসির/এইচএম এরশাদ ॥ বাংলাদেশ অভিমুখে বিরামহীন স্রোত যে গতিতে প্রবহমান তাতে করে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নামের জনগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত থাকবে কিনা সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এখন আসা রোহিঙ্গারা ভয়াবহ নির্যাতনের যে বর্ণনা দিচ্ছে, তা অনেকের কাছেই আগের মত বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। বরং অপেক্ষাকৃত সুখী জীবনের হাতছানিই তাদের এদিকে টেনে আনছে, এমনই ধারণা টেকনাফ উখিয়ার অধিবাসীদের। দিনে দিনে রোহিঙ্গা বাড়ছে বাংলাদেশে, আর কমছে তারা মিয়ানমারে। নিজভূমে তাদের ফিরে যাবার অনিহায় আতঙ্ক বাড়ছে স্থানীয় পর্যায়ে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে সারাদেশে যে আবেগ তার ছিটেফোটাও নেই কক্সবাজারবাসীদের মধ্যে।সময় যতই গড়াচ্ছে আবেগ ততই রূপ নিচ্ছে উটকো চাপে। খোদ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরই বলেছেন, এ চাপ আমরা সইতে পারছি না। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে হবে। এদিকে, আবেগের তোড়ে শুরুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণ সামগ্রী আসতে থাকলেও তা এখন স্তিমিত। চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এখন আর নামছে না ত্রাণবাহী বিদেশী উড়োজাহাজ। শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গা বোঝা চাপতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ওপরই। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের চিন্তা ভাবনায় জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার। প্রশ্ন উঠেছে, এ বোঝা আমরা বইব কেন? কিন্তু বাস্তবতা হল যারা এসে গেছে তাদের ঠেলেও দেয়া যাচ্ছে না। তবে কি রোহিঙ্গাদের স্থায়ী নিবাস হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ? মিয়ানমারে নির্যাতন আগের মতো না থাকলেও নাফ নদ পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গাদের আগমন থেমে নেই। সাড়ে ৫ লাখ ইতোমধ্যেই এসেছে। সীমান্ত পাড়ি দেয়ার জন্য একেবারে প্রস্তুতি নিয়ে আছে আরও লক্ষাধিক। এই গতি অব্যাহত থাকলে শেষ পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়া উপজেলায় বসবাসকারী বাংলাদেশী নাগরিকদের জীবনযাত্রা কতটা অস্বস্তিকর হয়ে উঠবে তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই তারা চাপ অনুভব করতে শুরু করেছে। অনেকের বাড়ির পুকুরপাড় এবং আবাদযোগ্য উঁচু জমি বেদখল হয়ে গেছে রোহিঙ্গা বসতিতে। রাখাইন থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আচরণগত বডি ল্যাঙ্গুয়েজেও পরিবর্তন আসছে। তাদের চলাফেরা এমনই যে, তারা এদেশকে নিজের দেশ ভাবতে শুরু করেছে। এর মধ্যে রয়েছে নানামুখী ইন্ধনও। রোহিঙ্গাদের একটি ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টাও এখন আর অপ্রকাশিত নয়। বরং কক্সবাজারসহ চট্টগ্রাম এক সময় আরাকান রাজ্যেরই অন্তর্ভুক্ত ছিল, এমন প্রচারও রয়েছে। রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় এখন শৃঙ্খলা এসেছে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে। যারা আছেন তারা ত্রাণ পাচ্ছেন, চিকিৎসা সহায়তা মিলছে। সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে তারা সংগ্রহ করছে ত্রাণ সামগ্রী। অপেক্ষাকৃত দূরের ঘরগুলোতে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার তৎপরতাও রয়েছে। অনেকেই ত্রাণ নিয়ে ফের দাঁড়িয়ে যাচ্ছে আরেক লাইনে। এতে করে খাদ্য সঙ্কট এখন নেই। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে চলছে আবাসন, স্যানিটেশন, সুপেয় পানির জন্য নলকূপ স্থাপন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণসহ নানা কার্যক্রম এবং প্রক্রিয়া। রোহিঙ্গাদের আবাসনের জন্য একটি দ্বীপ উন্নয়নের কাজও চলমান বলে খবরে প্রকাশ। অনেকের প্রশ্ন, ফেরত পাঠাবার জন্য দেশী- বিদেশী তৎপরতার পাশাপাশি তাদের পুনর্বাসনে এত এত পদক্ষেপ কতটা যৌক্তিক। এর মাধ্যমে বরং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এক ধরনের ভুল বার্তা যাচ্ছে। এতে করে রোহিঙ্গারা যেমন বাংলাদেশকে লোভনীয় ভাবতে শুরু করেছে, তেমনি করে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রচার পেয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে এক ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে পরিষ্কারভাবে রোহিঙ্গা বোঝা নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি নিরাপত্তা এবং সামাজিক জীবনযাত্রায়ও বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বলেছেন, স্রোতের মতো আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইয়াবা এবং অস্ত্রও আসছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। আউং সান সুচির কর্তৃত্বনিয়ে প্রশ্ন মিয়ানমারের নেত্রী আউং সান সুচি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আশ্বাস প্রদান করলেও সে দেশের সরকারের ওপর তার কতটা কর্তৃত্ব রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার কক্সবাজারের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির ত্রাণগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করছে সামরিক বাহিনী। সে দেশের সরকারের ওপর সুচির কোন কর্তৃত্ব নেই। তিনি তো প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। তাকে মন্ত্রী পর্যায়ের একটি পদ দেয়া হয়েছে। তার ‘জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ’ অবস্থা। সে দেশের সরকার পরিচালনায় সুচির কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতার সীমারেখা স্পষ্ট করে দেয়া আছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার নমনীয় হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ের এ নেতা। তিনি বলেন, মিয়ানমারের পক্ষে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক চাপ হজম করা কঠিন হয়ে পড়বে। একপর্যায়ে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। এ বিষয়ে তিনি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিশেষ করে জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা থাকা উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। শুক্রবারের এ অনুষ্ঠানে সেতুমন্ত্রী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) ২০ লাখ টাকার চেক, চট্টগ্রাম খুলশী ক্লাবের ১০ লাখ টাকার চেক, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ কমিটির পক্ষ থেকে ১১ হাজার ২ শ’ পরিবারের জন্য ত্রাণ সামগ্রী, চট্টগ্রাম মহল মার্কেট থেকে ২ হাজার পরিবারের জন্য ত্রাণসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত অনুদান গ্রহণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, আওয়ামী লীগের ত্রাণ উপ কমিটির চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম মুন্সী, খুলশী ক্লাবের সভাপতি শামসুল আলম, চট্টগ্রাম মহল মার্কেটের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন আহমেদ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। রোহিঙ্গা ঢল থামার লক্ষণ নেই রাখাইন প্রদেশে আপাতত সহিংসতা বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানা যায় ওপার থেকে পাওয়া বিভিন্ন সূত্রে। কিন্তু তারপরও রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ থেমে নেই। শুক্রবার সকালেও আঞ্জুমানপাড়া এবং উলুবনিয়াসহ টেকনাফের একাধিক সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ৩ থেকে ৪ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানান স্থানীয়রা। নতুনভাবে অনুপ্রবেশকারীরা বলছে, পাড়ায় কেউ নেই। আমরা কেন থাকব? এজন্য পালিয়ে এসেছি। মগরা এখন জ্বালাতন না করলেও পরে করতে পারে, এ আশঙ্কায় চলে এসেছি শান্তির দেশে । ডাঃ জাফর আলম নামের এক রোহিঙ্গা নেতা জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদী পার হয়ে বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। আরও ৯০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দেয়ার জন্য পথে রয়েছেন। এদিকে স্থানীয়রা জানান, এখন আর রোহিঙ্গাদের কথা আগের মতো বিশ্বাস করছে না। তারা বলছে, এরা মিথ্যা কথা বেশি বলে। তিলকে তাল করছে। লাখ লাখ রোহিঙ্গার ভারে এখনই নুয়ে পড়েছে উখিয়া টেকনাফ। আরও রোহিঙ্গা আনার জন্য মুঠোফোনে প্রতিনিয়ত খবর দিচ্ছে এপারে অনুপ্রবেশকারীরা। ত্রাণের ঢলে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। অপরদিকে, বিরূপ প্রভাব পড়েছে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হওয়ার উপক্রম। কিছু মানুষ সাময়িক উপকৃত হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের আগের মতো স্বাভাবিক নিয়মে জীবন যাপনের সময়-সুযোগ তিরোহিত হয়েছে। একই অবস্থা চাকরিজীবী এবং দিনমজুরদেরও। তাদের আশঙ্কা, রোহিঙ্গা ঢলের কারণে তারা কর্মহীন হয়ে যাবে। রোহিঙ্গারা রিফিউজি ক্যাম্প থেকে চাল, ডালসহ নিত্যপণ্য পেতে থাকবে। এতে করে তারা দৈনিক ২ শ’ টাকা মজুরিতে কাজ করতে পারবে। সস্তায় রোহিঙ্গা দিনমজুর পাওয়া গেলে স্থানীয়দের কাজের অভাব হবে। কেননা, তারা যেহেতু কোন ধরনের রেশন বা সহযোগিতা পায় না সেহেতু তাদের পক্ষে কম মূল্যে কাজ করা সম্ভব নয়। নিবন্ধিত ১ লাখ ৩৮ হাজার রাখাইন প্রদেশে সহিংসতায় এবার পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন চলছে দ্রুতগতিতে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬৮৭ রোহিঙ্গার নিবন্ধন করা হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ১২টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার নাগরিকদের সরকারী ব্যবস্থাপনায় ৬টি ক্যাম্পের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন কাজ এগিয়ে চলছে। বৃহস্পতিবার কুতুপালং ক্যাম্পে নারী পুরুষ মিলে ৩ হাজার ৯৩ জন, নোয়াপাড়া ক্যাম্পে ১ হাজার ৬১০ জন, থাইংখালী ক্যাম্পে ২ হাজার ১ জন, বালুখালী ক্যাম্পে ১ হাজার ৭০১ জন, লেদা ক্যাম্পে ১ হাজার ৭৭৪ জন, কুতুপালং-২ ক্যাম্পে ১ হাজার ৬৮ জনসহ পুরোদিনে ৬টি কেন্দ্রে মোট ১১ হাজার ২৪৭ জনের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। পাসপোর্ট অধিদফতরের সহায়তায় এ নিবন্ধন কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। ডব্লিউএফপি’র ত্রাণ তৎপরতা টেকনাফে নতুন অনুপ্রবেশকারী ২৮ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে নিয়মিত ত্রাণ দিচ্ছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি)। এছাড়া গত ১ বছর ধরে টেকনাফের এনজিও সংস্থা ‘শেড’ এর মাধ্যমে প্রতি মাসে ২ বার চাল, হাই প্রোটিন বিস্কুট ও অন্যান্য জরুরী ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। ডব্লিউএফপির পক্ষে কর্মসূচী বাস্তবায়নকারী সংস্থা শেড এর কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মান্নান গণমাধ্যমকে জানান, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবরের পরে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে টেকনাফ উপজেলার লেদা, জাদিমুরা ও আলীখালীতে ঝুপড়ি করে বসতি স্থাপনকারী প্রায় সাড়ে ৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার পক্ষ থেকে ২৫ কেজি করে প্রতি মাসে ২ বার চাল দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে এসব অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা পরিবারদের নিয়মিত রেশনের আওতায় আনার জন্য এবং বিধবা, বৃদ্ধ, পঙ্গু, মারাত্মক অপুষ্টির শিকার, উপার্জনক্ষম ব্যক্তিহীন পরিবারকে অগ্রাধিকার দিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ৩ হাজার ৮২৭ পরিবারকে নিবন্ধন করা হয়। এসব পরিবারকে প্রতি মাসে ২৫ কেজি করে ২ বার চাল দেয়া অব্যাহত রয়েছে। সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংস ঘটনার পর বাংলাদেশে পালিয়ে এসে যেসব অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা পরিবার টেকনাফ উপজেলার লেদা, জাদিমুরা, উঞ্চিপ্রাংয়ের রইক্ষং পুটিবনিয়া ও আলীখালীতে ঝুপড়ি করে বসতি স্থাপন করেছে, তাদের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ২২ হাজার ৪’শ পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় তালিকাও হালনাগাদ করা হচ্ছে। তাছাড়া ‘আদ্রা’ নামক এনজিও প্রত্যেক কার্ডধারীকে ৪ কেজি করে ডাল এবং ২ লিটার করে ভোজ্য তেল দিয়েছে। একইভাবে টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুরে আরেকটি এনজিও’র মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা পরিবারদের মাঝে চাল বিতরণ চলছে। আহলে সুন্নাতের ত্রাণ বিতরণ কক্সবাজারের আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে চতুর্থ দফায় ত্রাণ বিতরণ করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত। শুক্রবার বিকেলে উখিয়ার থাইংখালি তানজিমারখোলা ক্যাম্পে এ ত্রাণ বিতরণ করা হয়। আহলে সুন্নাতের ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল ১ হাজার পিস তাঁবু, ৩ হাজার পিস মশারি, ৩ হাজার পিস শাড়ি, ওষুধ ও খাদ্য সামগ্রীসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এ সময় সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক এম এ মতিন বলেন, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পুরোপুরিভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বার বার বৈঠকের নামে প্রহসনে লিপ্ত রয়েছে। এ প্রহসন বন্ধ করে মিয়ানমারে তাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে। রাখাইন রাজ্যে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণ করে ‘সেইফ জোন’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।
×