ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়া ৭-১ চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ৭-২ ওমান

মালয়েশিয়া-কোরিয়ার আয়েশি জয়

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

মালয়েশিয়া-কোরিয়ার আয়েশি জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিদ্যা অর্জনের জন্য সুদূর চীনে যেতে হয়। তবে হকিবিদ্যা অর্জনের জন্য উল্টো চীনাদেরই যেতে হবে মালয়েশিয়ায়! হকি খেলা কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কিÑ তা ৭-১ গোলে ম্যাচ জিতে চীনকে হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিল মালয়েশিয়া। বৃহস্পতিবার এশিয়া কাপ হকিতে দিনের প্রথম এই খেলায় অবশ্য প্রথম কোয়ার্টারে বেশ ভালই খেলেছিল চাইনিজ বাহিনী (এশিয়া কাপে ২ বারের তৃতীয় স্থান অধিকারী), মাত্র ০-১ গোলে পিছিয়ে ছিল তারা। কিন্তু সময় যতই গড়িয়েছে, ততই আক্রমণের ধার এবং গোলসংখ্যা সমৃদ্ধ করেছে এই আসরে ১ বার তৃতীয় এবং ৫ বার চতুর্থ হওয়া মালয়েশিয়ানরা। আর বিপর্যস্ত-বিধস্ত হয়েছে চীনা দলটি। পুরো ম্যাচে আটটির মতো পেনাল্টি কর্নার পেয়েছে মালয়েশিয়া। সেখানে চীনা দল পেয়েছে মাত্র একটি। মালয়েশিয়ান দলের গতি ও স্টিকের কারুকাজের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি চাইনিজরা। ১১ মিনিটে রহিম রাজির গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় মালয়বাহিনী। ১৭ মিনিটে ফয়জাল সারির চমৎকার হিটে ব্যবধান দাঁড়ায় ২-০। পরের মিনিটেই রহিম-ফয়জাল-টেঙ্গুর আদান-প্রদানে টেঙ্গু তাজউদ্দিন গোল করেন (৩-০)। ৩১ মিনিটে ষষ্ঠ পেনাল্টি কর্নার (পিসি) থেকে গোল করেন ফয়জাল সারি (৪-০)। ৩৪ মিনিটে শাহরিল সাবাহর কানেক্টে আরেকবার চীনা পোস্টে বল ঢুকলে ৫-০ গোলে এগিয়ে যায় মালয়েশিয়া। ৪০ মিনিটে নাবিল নুর দুই দফা চীনা গোলরক্ষক এও ঝিউয়িকে ডজ দিয়ে কোনাকুনি হিটে গোল করেন (৬-০)। তবে ৫৬ মিনিটে সান্ত¡নাসূচক একটি গোলের দেখা পায় চীনা হকি দল। দুবারের প্রচেষ্টায় একটি গোল শোধ করেন ই ওয়েনহুই (১-৬)। খেলা শেষ হবার মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগে (৬০ মিনিটে) রমাদান রুসলির পুশে গোল হলে চীনাদের হারের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকা হয় (৭-১)। চীন অবশ্য ৫০ মিনিটে আরেকটি গোল করতে পারতো। মালয় গোলরক্ষক সুব্রমিয়াম কুমারকে একা পেয়েও গোল করতে পারেনি সু লিক্সিং। শেষ পর্যন্ত ওই স্কোরেই খেলা শেষ হলে পূর্ণ তিন পয়েন্ট প্রাপ্তি এবং শুভসূচনার চিত্তসুখ নিয়ে মালয়েশিয়া এবং গোলের ভারে জর্জরিত এবং বড় হারের লজ্জা নিয়ে টার্ফ ছাড়ে চীন দল। এদিকে শিরোপা জেতার চেয়ে তা ধরে রাখা কঠিন। থাকে প্রত্যাশার বিশাল চাপও। তবে সেই চাপকে যে মোটেও চাপ মনে করছে না এবং শিরোপা ধরে রাখাটাও যে কঠিন কিছু নয় দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে। বৃহস্পতিবার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে তারা এশিয়া কাপ হকিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচ (পুল ‘বি’) খেলতে নেমে সাজিয়ে বসেছিল গোলের পসরা। প্রতিপক্ষ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানকে ভাসিয়ে দেয় গোলবন্যায়। স্কোরলাইন ছিল ৭-২। চলমান দশম আসরে এখন পর্যন্ত যে চারটি খেলা হয়েছে, তাতে এই ম্যাচেই দু’দল মিলে সর্বাধিক গোল (৯টি) হয়েছে। এশিয়া কাপ হকির সবচেয়ে সফল দল দক্ষিণ কোরিয়া। মোট নয়টি আসরের মধ্যে সর্বাধিক চারবার শিরোপা জিতেছে তারা। শুধু তাই নয়, এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে তারা হবে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন। এর আগে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ১৯৯৩, ১৯৯৯, ২০০৯ এবং ২০১৩ সালে। এছাড়া রানার্সআপ হয়েছে ২০০৭ সালে। এছাড়া তৃতীয় হয়েছে তিনবার। এছাড়া বিশ^ হকির র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা আছে ত্রয়োদশ অবস্থানে। পক্ষান্তরে এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া তো দূরে থাক, কখনও ন্যূনতম চতুর্থও হতে পারেনি ওমান। র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা আছে ৩০ নম্বরে। বৃহস্পতিবারের খেলায় ওমান হারলেও বিস্ময়করভাবে তারাই আগে গোল করে চমকে দিয়েছিল কোরিয়ানদের। ১৮ মিনিটে কোরিয়ার জালে বল পাঠিয়ে চমক দেখান ফাজারি রাশাদ (১-০)। তবে সেই বিস্ময় সামলে খুব দ্রুতই খেলায় ফিরে আসে কোরিয়ানরা। প্রচ- গতি দিয়ে, দুই উইং দিয়ে উপর্যুপরি আক্রমণ করে আর পিসি থেকে গোল করে বেসামাল করে দেয় ওমানকে। ২২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে লি মুকইয়ংয়ের কানেক্টে গোল করলে সমতায় ফেরে কোরিয়া (১-১)। ৩৫ মিনিটে চু সুক হুনের রিভার্স হিটে গোল করলে আবারও ব্যবধান বাড়ায় তারা (২-১)। ৩৬ মিনিটে সিও ইনু ওমান গোলরক্ষককে ডজ দিয়ে গোল করেন (৩-১)। ৪১ মিনিটে পিসি থেকে গোল করেন কোরিয়ার ইয়াং জি হুন (৪-১)। ৪৭ মিনিটে জং হিউন থেকে লিমাইয়ং ওমান গোলরক্ষককের ওপর দিয়ে ফ্লিক করে বল পোস্টে পাঠান (৫-১)। পরের মিনিটেই আবারও পিসি থেকে জং হিউন গোল করেন (৬-১)। ৫১ মিনিটে কোরিয়ান গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে ডজ দিয়ে চমৎকার হিটে আসাদ মুবারক গোল করলে কিছুটা ব্যবধান কমায় ওমান (২-৬)। খেলা শেষ হবার মাত্র ৩ সেকেন্ড আগে ৬০ মিনিটে শেষ গোলটি করেন কোরিয়ার ইয়াং জি হুন (৭-২)।
×