ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান একদল কন্যা শিশুর সঙ্গে দেখা। হঠাৎ করেই। কী যে মিষ্টি দেখতে মেয়েগুলো! সুন্দর সাজুগুজু করে এসেছিল। জামাকাপড় নয়, বড়দের মতো কুচি দিয়ে শাড়ি পরেছিল তারা। একটু পর নাচের অনুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমির সিঁড়িতে বসে নাচার প্রস্তুতি নিচ্ছিল দলটি। শিশুদের প্রত্যেকের সহজ তাকানো। সরল ভঙ্গি। দেখে মন ভাল হয়ে যায়। এই শিশুদের সুন্দর নিরাপদ জীবনের প্রত্যাশায়ই একদিন আগে বুধবার বিশ্বব্যাপী উদ্যাপিত হয় আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস। পৃথিবীজুড়ে চলা লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর প্রথম দিবসটি উদযাপন করা হয়। এর পর থেকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো প্রতিবছর উদ্যাপন করে কন্যা শিশু দিবস। ঢাকায়ও ছিল নানা আনুষ্ঠানিকতা। ওইদিন ব্র্যাক, এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন ও অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের থ্রিডি সেমিনার হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখায় দেশের ছয়জন কন্যাশিশুকে পুরস্কার দেয়া হয়। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কন্যাশিশুর শিক্ষার অধিকার, পরিপুষ্টি, আইনী সহায়তা, চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন বক্তারা। তবে বিশেষ করে বলতে হয় শহর ঢাকার বাবা মায়েদের কথা। দিবসটি সম্পর্কে অবগত বাবা মায়েরা আলাদা করে সময় কাটিয়েছেন কন্যা শিশুর সঙ্গে। কেউ কেউ বাইরে খেতে গিয়েছেন। ঘুরে বেড়িয়েছেন। ফেসবুকের পাতায় সে সব ছবি ভেসে উঠেছে। ছবির মতো সুন্দর জীবন হোক আমাদের মেয়েদের। কন্যা শিশুরা ভালবাসায় আদরে বড় হোকÑ এমন প্রত্যাশা সকলের। হরতালের প্রসঙ্গে আসা যাক। একটু না বললেই নয়। হ্যাঁ, আবারও হরতালের ডাক। কথা নেই বার্তা নেই ইয়ার্কিটা করল জামাত শিবির। দুর্র্বৃত্তদের এই অস্ত্র অনেক আগে ভোঁতা হয়ে গেছে। অথচ বাংলাদেশ বিরোধী অপশক্তি পরিত্যক্ত সেই অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানোর ফন্দি করেছিল। কী এক ছুতোয় বৃহস্পতিবার হরতাল ডাকে যুদ্ধাপরাধীদের দল। জবাবটিও ভাল পেয়েছে তারা। ততাকথিত হরতাল পায়ে মাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছে জনগণ। রাজধানী শহর ঢাকায়ও ‘হরতাল ওয়ালাদের’ কোন তৎপরতা ছিল না। অফিস আদালত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যাংক বীমায় স্বাভাবিক কাজ কর্ম হয়েছে। সব ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে। যানজটও যথারীতি ছিল। সব দেখে মনে হয়েছে, লজ্জা শরমের মাথা খাওয়া জামাত শিবির ‘মানুষ’ হবে না কোনদিন। বিজিএমইএ ভবনের কথা হোক এবার। আগেও অনেকবার এই কথা হয়েছে। আরও একবার প্রসঙ্গটি তোলার কারণ, গত কয়েকদিন আগে হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙতে আরও ৭ মাস সময় দিয়েছে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। এবার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপীল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছে। এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল ভূমির মালিকানা স্বত্ব না থাকা এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও জলাধার আইন ভঙ্গ করায় বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এর পর থেকে চলছে বহুবিধ আইনী লড়াই। সর্বশেষ, বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে ৩ বছরের সময় চেয়ে গত ৮ মার্চ আবেদন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ ৬ মাস সময় বেঁধে দিয়েছিল আদালত। তাতেও কিছু না হলে আসে নতুন আদেশ। এখন কী হবে? অনেকেই আশাবাদী। তারা বলছেন, লেক দখল করে নির্মাণ করা অবৈধ ভবন আর রক্ষা করা যাবে না। ভুল হয়েছিল। সে ভুল স্বীকার করে ভবন সরিয়ে নেয়ার জন্য বিজিএমইএ কর্র্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছে ঢাকার পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।
×