ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১২ অক্টোবর ২০১৭

আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তানের একজন বাঙালী সাহিত্যিক। বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান এই গবেষকের ১৪৬তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে একক বক্তৃতার আয়োজন করা হয় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বুধবার বিকেলে। বাংলা একাডেমি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ‘সাহিত্যবিশারদের সাধনা’ শীর্ষক একক বক্তৃতা করেন অধ্যাপক মোরশেদ শফিউল হাসান। একক বক্তৃতায় তিনি বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের অবদানকে যদি এককথায় মূল্যায়ন করতে হয়, তবে বলতে হবে, বাংলা সাহিত্যে বাঙালী মুসলমানের অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা এবং এ বিষয়ে তার মনে আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালনকারীদের একজন তিনি। মুসলিম রচিত পুঁথি সংগ্রহ ও গবেষণার মাধ্যমে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ এই দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন সময়ে লেখা তাঁর প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং সভা-সম্মেলন-সংবর্ধনায় দেয়া লিখিত অভিভাষণ আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের যে উদার, অসাম্প্রদায়িক, বিশ্লেষণী ও বাস্তববাদী মনোভঙ্গির পরিচয় দেয়, সমকালে তার তুল্য উদাহরণ বেশি পাওয়া যায় না। কলকাতা বা ঢাকা থেকে বহুদূরে এক নিভৃত পল্লীতে বসে একাকী যে সাধনা আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ করে গেছেন তা আমাদের সাহিত্যিক ও সামাজিক ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ আকরাম হোসেন। স্বাগত বক্তবে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের অবদান নানা দিক থেকে নবমূল্যায়নের দাবি রাখে। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বাংলা সাহিত্যের সামগ্রিক ইতিহাস নির্মাণে সাহিত্যবিশারদের কাছে আমাদের ফিরে আসতেই হবে। বাঙালী মুসলমানের আত্মপরিচয় সঙ্কট নিরসনে তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান কখনও বিস্মৃত হবার নয়। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন বলেন, পুঁথি সংগ্রহ, সম্পাদনা ও গবেষণার মাধ্যমে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ বাংলা সাহিত্যের ঐতিহাসিক ধারাক্রমকে পরিপূর্ণতা দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন মাতৃভাষাকে জাতীয় ভাষায় রূপান্তর করতে না পারলে জাতীয়তার পরিচয় পূর্ণাঙ্গ করা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে তিনি ঐতিহ্যের অন্ধ অনুবর্তনের পরিবর্তে তার সমকালীন রূপান্তরে আস্থা রাখতেন। তিনি বলেন, সাহিত্যবিশারদ জনলগ্ন আধুনিকতার চর্চা করতেন, তাই লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি ছিল তাঁর বিশেষ আগ্রহ। স্থবির-জঙ্গম কুসংস্কারের অচলায়তন ভেঙ্গে গতিশীল বাঙালী সমাজ বিনির্মাণে সাহিত্যবিশারদের ঐতিহাসিক ভূমিকা আমরা চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব। আমাদের সমাজ যে কত মানবিক, তা সুজনের ঘটনার মধ্য দিয়ে আরেকবার প্রমাণিত হয়েছেÑ সংস্কৃতিমন্ত্রী ‘আমাদের সমাজ যে কত মানবিক, তা সুজনের ঘটনার মধ্য দিয়ে আরেকবার প্রমাণিত। বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এ্যান্ড এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন ইন জার্মানি (জার্মান প্রবাসে) সুজন ও সুজনের পরিবারের জন্য যা করেছে, তা মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত। আমাকে অনুপ্রাণিত করে সুজনকে ঘিরে মানবিক কাহিনী যা নিরেট সত্য ঘটনা। এ মানবিকতা আমাদের বড় ভরসা, শক্তি ও সাহসের জায়গা। আর মানুষের প্রতি মানুষের যে ভালবাসা তাতে রয়েছে অসাধারণ শক্তি’Ñ জার্মান প্রবাসী প্রয়াত সুজন চন্দ্র সরকারের স্মরণসভা পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এ্যান্ড এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন ইন জার্মানি (জার্মান প্রবাসে)। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ বরাবরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ায়। বর্তমানে রোহিঙ্গা সমস্যা একটি মানবিক বিপর্যয়। এ বিপর্যয়েও বর্তমান সরকারসহ এদেশের মানুষ উদাত্তভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্রমশ উন্নতি করছি। একইসঙ্গে আমাদের মানবিকতাবোধ আরও উন্নত ও জাগ্রত করতে হবে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জার্মান প্রবাসে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রয়াত সুজনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও ২ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডাঃ পবিত্র দেবনাথ এবং জার্মান প্রবাসে সংগঠনের এডমিন ও কোঅর্ডিনেটর তানজিয়া ইসলামের বাবা ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ফর ডায়াবেটিস, এ্যান্ডোক্রাইন এ্যান্ড মেটাবলিক ডিসঅর্ডারের (বারডেম) প্রফেসর ডাঃ মীর নজরুল ইসলাম এবং প্রয়াত সুজনের বাবা ও ভাই। গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের ৬ষ্ঠ দিনে তিন নাটক মঞ্চস্থ রাজধানীর সেগুন বাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে ১০ দিনব্যাপী ‘গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব’। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তন, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল, স্টুডিও থিয়েটার হলসহ মুক্তমঞ্চে একযোগে চলছে এই উৎসবটি। ‘গঙ্গা-যমুনা নাট্যোৎসব পর্ষদ’ আয়োজিত এ উৎসবের বুধবার ছিল ৬ষ্ঠ দিন। এদিন সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার তিন হলে একই সঙ্গে তিনটি নাটক প্রদর্শিত হয়। প্রধান মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় কণ্ঠশীলনের নাটক ‘যাদুর লাটিম’, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে থিয়েটার আর্ট ইউনিট মঞ্চস্থ করে ‘কোর্টমার্শাল’ এবং স্টুডিও থিয়েটার হলে রঙ্গপীঠ মঞ্চস্থ করে ‘শাদী পয়গাম’। এ উৎসব উৎসর্গ করা হয় ভারতের কলকাতার নাট্যব্যক্তিত্ব প্রয়াত অমলেশ চক্রবর্তীকে। এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনের ঠিক বাইরের উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনÑপথনাটক, আবৃত্তি, সঙ্গীত এবং নৃত্য পরিবেশন করে।
×