ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত থেকে জ্বালানি তেল কেনার সিদ্ধান্ত

মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১২ অক্টোবর ২০১৭

মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মিয়ানমার থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এক লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এছাড়া ভারত থেকে ১৫ বছর মেয়াদে জ্বালানি তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশটির উত্তরাঞ্চলে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেডের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে পার্বতীপুর ডিপোতে এ তেল আসবে। এ রুটে ৫০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আসবে বাংলাদেশে। বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে আয়োজিত বৈঠকে কমিটি এ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। বৈঠক থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সংবাদিকদের এ কথা জানান। এছাড়া বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এসময় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মিয়ানমার থেকে জি-টু-জি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে এক লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখন এ ব্যাপারে চুক্তি হবে। প্রতিটন চালের মূল্য পড়বে ৪শ’ ৪২ ডলার। এ হিসাবে এক লাখ মেট্রিক টন চালের মূল্য হবে ৩শ’ ৬৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এছাড়া বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯১টি বই মুদ্রণের প্রস্তাব এসেছিল, তাও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে খরচ হবে ১১২ কোটি ৮৯ লাখ ২৮ হাজার টাকা। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার টু সরকার পর্যায়ে এ চাল আমদানি করা হবে। দেশের খাদ্য মজুত বাড়াতে এ চাল সরকারী গুদামে রাখা হবে। উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের নেতৃত্ব একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমার যায়। সফরকালে তিন লাখ টন চাল আমদানির ব্যাপারে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরপর পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ আসে। ওই সময় এক লাখ টন আতপ চাল আমদানির করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ভারত থেকে পনেরো বছরে ৫০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানিতেল কেনা হবে ভারত থেকে ১৫ বছর মেয়াদে ৫০ লাখ জ্বালানিতেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বৈঠকে ভারত থেকে ১৫ বছর মেয়াদে ৫০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানিতেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ব্যারেল প্রতি প্রিমিয়াম ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৯২ মার্কিন ডলার। এতে সরকারের ব্যয় হবে ১ হাজার ৮০৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন স্থাপন হচ্ছে। ২০১৫ সালে এ নিয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন এবং নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হয়। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের নামকরণ হবে ‘ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’। এ পাইপলাইনে তেল আমদানি খরচ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হবে। এর আগে আমদানিকৃত জ্বালানিতেল নৌপথে ভারতের অসম রাজ্যের শিলঘাট থেকে বাংলাদেশের বাঘাবাড়ী ডিপোতে জ্বালানিতেল পরিবহন করা হতো। তেলের একেকটি চালান বাংলাদেশে পৌঁছতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগত। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জটিলতার কারণে নৌপথে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
×