ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাস্টিন গোমেজ

শিশুর জন্য ভালোবাসা

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১২ অক্টোবর ২০১৭

শিশুর জন্য ভালোবাসা

মানুষের মধ্যে যে সব মানবিক গুণাবলীর অভাব একটা সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ডেকে আনে সেগুলোর মধ্যে শিশু নির্যাতন অন্যতম। শিশুরা হলো সুন্দরের প্রতীক, পবিত্রতার প্রতীক, আনন্দের উৎস। প্রতিটি শিশুর নিরাপত্তা ও সঠিকভাবে গড়ে ওঠার জন্য দরকার তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষের আদর-ভালবাসা-যথাযথ পরিচর্যা ও সঠিক দিক নির্দেশনা। এক কথায় একটা সুস্থ পরিবেশ ও নিরাপদ আশ্রয়। দেশের ভবিষ্যৎ ফুলের মতো শিশুদের মমতা আর ভালবাসা দিয়ে সমাজের প্রতিটি নাগরিকের যেখানে আগলে রাখার কথা, সেখানে এই সমাজেরই কিছু বিকৃত মনের মানুষ তাদের ওপর চালাচ্ছে জঘন্য নির্যাতন। এমনকি ঘৃণ্য এ অপরাধের হাত থেকে মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। শুধু অপরিচিত ব্যক্তি নয়, পরিচিত, নিকটাত্মীয়, প্রতিবেশীর দ্বারাও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর যে ব্যক্তিরা শিশুদের ওপর এ ধরনের ঘৃণ্য নির্যাতন চালাচ্ছে তারা ভিন্ন বয়সী কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত। এদের কেউ শিশুদের জোর করে, কেউ খাওয়ার বা খেলনার প্রলোভন দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে এ অত্যাচার চালাচ্ছে। অভাব-অনটন, দারিদ্র্য, অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের জন্যই আমাদের দেশের শিশুরা শ্রমসাধ্য কাজে নিয়োজিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক শিশু বিষয় আইন, এখন পৃথিবীর সব দেশে শিশু-অধিকার একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায় বিবেচিত হয়েছে। জাতিসংঘ এ বিষয় এ শিশু অধিকার সংক্রান্ত নীতিমমালা প্রণয়ন বা ঘোষণা করেছেন। জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেও এই সনদপত্রে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। সে জন্য আমাদের দেশে শিশুদের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার প্রতি বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং সরকারের বিশেষ গুরুত্ব বা বিশেষ ভূমিকা পালন করা অতি জরুরী বা প্রয়োজন। শিশু অধিকারের আইনের আওতায় আঠারো বছরের নিচ পর্যন্ত বয়সী সকলকে শিশু হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। শিশু অধিকার আইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, কোন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করছে এবং শিশুদের ভবিষৎ অনিশ্চয়তার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। আমাদের দেশের শিশুদের সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবে যেসব বিপদ সেসব বিপদ থেকে আমাদের দেশের শিশুদের রক্ষা করতে হবে, আর এ ব্যাপারে দেশের সরকার ও আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সব শিশুকে সকল প্রকার হয়রানি ও নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে হবে। আমাদের সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে শিশুদের যে কোন ঝুঁকিপূর্ন কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে। আর এ বিষয়ে সরকারের শিশু মন্ত্রণালয়ে মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। আর আমাদের সকলকে শিশুশ্রমের ক্ষতিকর বিষয়গুলোর ব্যাপারে গণসচেতনতা বাড়াতে হবে। শিশু পাচারের ব্যাপারে সকলকে সচেতন হতে হবে। শিশু পাচারকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে শ্রমবাজারে শিশুশ্রম একটি বিরাট অংশজুড়ে আছে। তাই হঠাৎ করে শিশুশ্রম বন্ধ বা নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয় সুতরাং এর জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। আজকে যারা শিশু তারাই আগামীতে বড় হবে এবং সমাজের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। সে জন্য তাদের নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে এবং তাদের জাতির বড় ধরনের স্বার্থে যোগ্য নাগরিক হিসেবে বেড়ে ওঠার সুযোগ ও সুবিধা দিতে হবে। নটর ডেম কলেজ, ঢাকা থেকে
×