ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডের মিশন শুরু

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১১ অক্টোবর ২০১৭

প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডের মিশন শুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নয় বছর পর সিরিজ খেলতে গিয়ে ব্লুমফন্টেইনের ম্যাংগাউং ওভালে ইনিংস হারের তীক্ত স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ দল। এই স্টেডিয়ামেই বৃহস্পতিবার দক্ষিন আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে একদিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। আর এ ম্যাচ দিয়েই মুলত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের মিশনও শুরু করে দেবে মাশরাফিবাহিনী। টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে হারার স্মৃতি দুর করে এবার ওয়ানডে সিরিজে নামবে বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজের আগেও বাংলাদেশ দল একটি তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। সেই সিরিজেই বোঝা গেছে বাংলাদেশ দল টেস্ট সিরিজে কেমন করতে পারে। প্রস্তুতি ম্যাচে আনকোরা ক্রিকেটারদের নিয়ে খেলেছে দক্ষিন আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশ। সেই দলটির বিপক্ষেই বাংলাদেশ ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছে। টেস্টে হোয়াইটওয়াশ ফল হয়েছে। এবার ওয়ানডে সিরিজে নামার আগেও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। তবে এবার আর প্রতিপক্ষ দলটি সহজ নয়। জেপি ডুমিনি আছেন। তিনিই নেতৃত্ব দেবেন দক্ষিন আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশ দলটির। আছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। এবার ওয়ানডে সিরিজের আগেই ডি ভিলিয়ার্সকে সামলাতে হবে বাংলাদেশকে। কিছুদিন আগেই ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়া এই ব্যাটসম্যান খেলবেন বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ। বাংলাদেশ ও দক্ষিন আফ্রিকার মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে ১৫ অক্টোবর। সেদিন প্রথম ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ১৮ ও ২২ অক্টোবর যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। ওয়ানডে সিরিজ শুরুর তিনদিন আগে হচ্ছে প্রস্তুতি ম্যাচটি। এ ম্যাচেই বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স ওয়ানডেতে কেমন হবে, তা বোঝা যাবে। স্বাগতিক দলটি যে শক্তিশালী। প্রস্তুতি ম্যাচের দলে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট দলের এইডেন মার্করাম ও কেশভ মহারাজ। যে দুইজন বাংলাদেশকে টেস্টে ডুবিয়েছেন। আছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা বিউরান হেনড্রিক্স। রয়েছেন অনেক দিন থেকেই জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা ব্যাটসম্যান খায়া জোন্দো ও গত বছর বাংলাদশে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশে খেলে যাওয়া উঠতি অলরাউন্ডার উইয়ান মাল্ডার। দক্ষিন আফ্রিকার প্রস্তুতি ম্যাচের দলটি হচ্ছে এমন-জেপি ডুমিনি (অধিনায়ক), ম্যাথিউ ব্রিটসকি, এমবুলেলো বুদাজা, এবি ডি ভিলিয়ার্স, রবি ফ্রাইলিঙ্ক, বেউরান হেনড্রিক্স, হেইনরিচ ক্লাসেন, কেশভ মহারাজ, এইডেন মার্করাম, উইয়ান মুলডার, মালুসি সিবোতো ও খায়া জোন্দো। এই দলটির বিপক্ষেই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। যেহেতু প্রস্তুতি ম্যাচ। তাই সুযোগ আছে ব্যাটিং ও বোলিং শক্তি ওয়ানডে সিরিজে দক্ষিন আফ্রিকার মাটিতে কেমন করবে, তা বুঝে নেওয়ার। বাংলাদেশ দল সেটিই চাইবে। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে আছেন তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন, সাইফউদ্দিন ও মুমিনুল হক। এ ক্রিকেটারদের মধ্যে তামিম ইকবাল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারবেন না। এমনকি ওয়ানডে সিরিজেও তার খেলা অনিশ্চিত। তামিম না খেললে সৌম্য ও ইমরুল ওয়ানডেতে ওপেনিংয়ে কেমন করেন, সেটিই দেখা হবে। মুমিনুল হক দীর্ঘদিন পর ওয়ানডেতে খেলতে নেমে কেমন জৌলুস ছড়ান, সেদিকেও নজর থাকবে। দক্ষিন আফ্রিকার উইকেটে পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের বলের কার্যকারিতা কেমন, সেটিও দেখার বিষয় থাকবে। প্রস্তুতি ম্যাচটিতেই বাংলাদেশ দল নিজেদের বুঝে নেবে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দল দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছে। সবার প্রত্যাশা টেস্টে যাই হয়েছে, ওয়ানডেতে চমক জাগাবে বাংলাদেশ। সেই চমকের অপেক্ষাই করা হচ্ছে। বাংলাদেশ দল যেখানেই ওয়ানডে খেলুক, প্রতিপক্ষ মহা চিন্তায় থাকে। দক্ষিন আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক শন পোলক যেমন বলেছেন, ‘যেখানেই যাক, ওয়ানডেতে বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন দল।’ পোলকের এ কথাতেই বোঝা যাচ্ছে, ওয়ানডেতে কেমন দল বাংলাদেশ। দক্ষিন আফ্রিকাও কেমন চিন্তায় আছে। পোলক আরও বলেছেন, ‘যেসব উইকেট আপনি পাবেন, সেগুলোও হয়তো ফ্ল্যাট উইকেট হবে।’ ফ্ল্যাট উইকেট মানেই হচ্ছে, বাংলাদেশ সুবিধা পাবে। সুবিধা পাওয়া মানেই জয়ও সম্ভব। এ জয় পেতে হলে টেস্টের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে ওয়ানডেতে ভালো কিছু করে দেখাতে হবে। বাংলাদেশ দল কতটা ভাল করবে ওয়ানডেতে, তা বোঝা যাবে প্রস্তুতি ম্যাচেই। অবশ্য দক্ষিন আফ্রিকা ওয়ানডে দলটি অনেক শক্তিশালী। দক্ষিন আফ্রিকা কোচ ওটিস গিবসনতো বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে নয়, তিনি ২০১৯ বিশ্বকাপ নিয়ে চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘২০১৯ সালের আগে আমরা ৩০ থেকে ৩৫টি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পাবো। এই সময়ে আমার, ফাফ ও নির্বাচকদের লক্ষ্যই থাকবে খেলোয়াড়দের দিকে। যারা খাদের কিনারে থাকবে তাদের সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্য থাকবে।’
×