কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ও ভারতকে যৌথভাবে নদী উন্নয়নে কাজ করতে হবে। দুই দেশের মধ্যে অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। এই পানিপ্রবাহ কোনভাবেই যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর দেয়ার ওপর জোর দিয়েছেন দুই দেশের পানি বিশেষজ্ঞরা। সোমবার বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী উৎসবের সমাপনী দিনে এসব আলোচনা হয়।
উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব নদী রয়েছে তার উপযুক্ত ব্যবহার এবং এসব নদীকেন্দ্রীক পর্যটন খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ নদী উৎসবের আয়োজন করা হয়। দুই দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন। এই অনুষ্ঠান আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করে ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ।
সোমবার অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, অসমের পানি সম্পদমন্ত্রী কেশব মোহন্ত, পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত ও দিল্লীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার তারিক এ করিম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনেক সমস্যার সমাধান আমরা সমাধান করেছি। দীর্ঘদিনের একটি সমস্যা ছিল স্থলসীমান্ত সমস্যা। সেটা আমরা করেছি। এটা করার জন্য শুধু এ অঞ্চলেই নয়, পুরো বিশ্বেই আমরা সমাদৃত হয়েছি। অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ ধরে রাখতে হবে। নদীর পানিপ্রবাহ ঠিক না থাকলে বন্যা হয়ে থাকে। এছাড়া নদীভিত্তিক বাণিজ্যে আমাদের জোর দিতে হবে। নদীভিত্তিক বাণিজ্য বাড়ানো হলে উভয় দেশই উপকৃত হবে।
অসমের পানি সম্পদমন্ত্রী কেশব মেহন্ত বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতকে যৌথভাবে নদী উন্নয়নে কাজ করতে হবে। দুই দেশের মধ্যে নদীভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে অনেক পাথরের প্রয়োজন। ভারত থেকে নদী পথেই এই পাথর পরিবহন বাড়ানো যেতে পারে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
তারিক এ করিম বলেন, দুই দেশের নদীর পানিপ্রবাহ অব্যাহত রাখতে হবে। নদীর গতিকে কোনভাবেই রোধ করা যাবে না। নদীর গতি রোধ করলে নদী মরে যায়। এদিকে উভয় দেশকেই নজর দিতে হবে।
রবিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এশিয়া সংলগ্ন নদী উৎসব (নদী-দুই) উদ্বোধন করা হয়। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক মাধব রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সোমবার অনুষ্ঠানের শেষ দিনে হোটেল সোনারগাঁওয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত নদীগুলোর চিরায়ত ঐতিহ্য : পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ ও ভারত’ শীর্ষক বিভিন্ন পর্বে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং এ প্রথম নদী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। উৎসবে ভারতের উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চল এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত নদীগুলোর উপযুক্ত ব্যবহার, এ অঞ্চলের জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ স্থাপন এবং বাণিজ্য ও পর্যটন খাতের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: