ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের রিচার্ড থেলার

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১০ অক্টোবর ২০১৭

অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের রিচার্ড থেলার

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে মনস্তত্ত্বের প্রভাব নিয়ে গবেষণার জন্য এবার অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড এইচ থেলার। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস সোমবার এই পুরস্কারের জন্য তার নাম ঘোষণা করে। রিচার্ড থেলার দেখিয়েছেন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা সবসময় যৌক্তিকভাবে কাজ করেন না। বরং তাদের সিদ্ধান্তগুলো গভীরভাবে মানবিক। অর্থনীতি ও মনস্তত্ত্বের মধ্যের দূরত্বে তিনি সেতুবন্ধ তৈরি করেছেন।-খবর এএফপি ও নিউইয়র্ক টাইমসের। নোবেল কমিটি বলছে, অধ্যাপক থেলারের কাজ অর্থনীতির মনস্তত্ত্ব বুঝতে অবদান রেখেছে। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেসের অন্যতম বিচারক পার স্ট্রয়েমবার্গ বলেন, অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তকে মানব মনস্তত্ত্ব সুনির্দিষ্ট কোন দিক রূপ দেয় সেটি উন্মোচিত করেছে তার কাজে। তিনি বলেন, গবেষক হিসেবে রিচার্ড থেলার যা পেয়েছেন, তা অন্য অনেক গবেষককে তার পদাঙ্ক অনুসরণে উদ্বুদ্ধ করেছে। এটা অর্থনীতির একটি নতুন ক্ষেত্রের ভিত্তি দিয়েছে, যাকে আমরা বিহেইভিওয়ারাল ইকোনমিক্স বলি। নাবেল কমিটি বলছে, সীমিত মিতব্যয়িতা, সামাজিক অগ্রাধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাবের মতো বৈশিষ্ট বিশ্লেষণ করে এগুলো কিভাবে বাজারের ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে মানুষের বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে তা অধ্যাপক থেলার দেখিয়েছেন। অধ্যাপক থেলারের অন্তর্দৃষ্টি মানুষকে কেনাকাটার কৌশল চিহ্নিত ও বাজে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো এড়াতে সাহায্য করবে বলছে বিচারকদের প্যানেল। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষ কিভাবে বাজে পছন্দটাই বেছে নেয় আমেরিকান আইন বিশেষজ্ঞ কাস সানস্টেইনের সঙ্গে যৌথভাবে লেখা বেস্ট সেলার বই ‘নাজ’ এ তা দেখিয়েছেন থেলার। এর দুই বছর পর ব্রিটিশ সরকার থেলারের পরামর্শের ওপর ভিত্তি করে আচরণগত অর্থনীতি নামে একটি ইউনিট খোলেন। নোবেল পুরস্কারের ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার পাবেন যুক্তরাষ্ট্রের এই অধ্যাপক। পুরস্কারের অর্থ নিয়ে রসিকতা করে অর্থনীতিবিদ থেলার বলেন, আমি এই অর্থ যতদূর যথেচ্ছভাবে সম্ভব, সেইভাবেই খরচের চেষ্টা করব। অধ্যাপক থেলার ১৯৪৫ সালে নিউ জার্সির ইস্ট অরেঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। হার্ভাডের আইন অধ্যাপক ও তার দীর্ঘদিনের সহযোগী সানস্টেইন অনেকটা মজা করে বলেন, থেলারকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা সীমাহীনভাবে যুক্তিযুক্ত। তিনি বলেন, এর আগে অর্থনীতিবিদরা ভাবতেন, মানুষ ওষুধ কিনতে গিয়ে, বিনিয়োগ কিংবা চাকরি করতে গিয়ে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু থেলার এই সিদ্ধান্তকে নাকচ করে দিয়েছেন। তার মতে, ভবিষ্যদ্বাণী ও পদ্ধতিগত উপায়ে মানুষ যৌক্তিকতা থেকে বহুদূরে অবস্থান করছে। রীতি অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর এবারের নোবেল পুরস্কার তুলে দেয়া হবে। গত বছরে নিয়োগদাতা ও তাদের কর্মী, কোম্পানি ও তাদের ক্রেতাদের মধ্যে প্রচলিত চুক্তির পরিকল্পনার উন্নয়ন ঘটিয়ে অলিভার হার্ট ও বেঙট হলমস্ট্রোম অর্থনীতিতে নোবেল জিতেছিলেন।
×