ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চীন, জাপান, ভারত, রাশিয়া ও সৌদি আরবের জন্য হবে পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল ;###;বর্তমান সরকারের সময়ে বিনিয়োগ বেড়েছে ৫ গুণ

৫ দেশের বিনিয়োগ আসছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১০ অক্টোবর ২০১৭

৫ দেশের বিনিয়োগ আসছে

এম শাহজাহান ॥ অবকাঠামো খাত উন্নয়নে পাঁচ দেশের বিনিয়োগ আসা শুরু হয়েছে। প্রতিটি দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য হবে পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল। এই পাঁচ দেশ হচ্ছে- চীন, জাপান, ভারত, রাশিয়া ও সৌদি আরব। সৌদি আরব ব্যতীত অন্য চার দেশের সঙ্গে ইতোমধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। আর সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ-সংক্রান্ত রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। শীঘ্রই সৌদি আরবের সরকারী-বেসরকারী সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসছে। ওই সফরের সময় বাংলাদেশে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করার ঘোষণা দেবে সৌদি আরব। সূত্র মতে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের মেয়াদে দেশে প্রায় ৫ গুণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের ধারাবাহিকতা এবং বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ন্ত্রণে থাকায় আস্থা বেড়েছে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের। জঙ্গীবাদ, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়নসহ বেশকিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশী উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ আকর্ষণে ওয়ানস্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য যেসব সঙ্কট ও বাধা রয়েছে তা দূর করার জন্য বলেছেন। ইতোমধ্যে এসব সঙ্কট দূরীকরণে ওয়ানস্টপ সার্ভিস আইন প্রণয়নসহ আরও বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বিনিয়োগ বাড়াতে অবকাঠামো উন্নয়নে ফাস্ট ট্র্যাক খ্যাত দশ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। শিল্পের চাকা সচল রাখতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বিদ্যুত উৎপাদনে। এছাড়া ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে দেশে বিনিয়োগ বাড়ছে। অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর্থসামাজিক, প্রকৃত এবং রাজস্ব খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জানা গেছে, এই পাঁচ দেশের সঙ্গে করা বিনিয়োগ-বাণিজ্য-সংক্রান্ত চুক্তিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গত কয়েক বছরে শুধু চীনের সঙ্গে প্রায় শতাধিক চুক্তি হয়েছে। এসব চুক্তির মধ্যে রাজশাহী ওয়াসা সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, কর্ণফুলী নদীর ওপর প্রস্তাবিত দ্বিতীয় রেল সেতু, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, ভায়া রামু ও রামু থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ঘুনধুম পর্যন্ত প্রস্তাবিত ডুয়াল গেজের রেললাইন নির্মাণ এবং তৃতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি নেটওয়ার্কের সহায়তা প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে এসব চুক্তির তেমন কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি। এই বাস্তবতায় এবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চুক্তি বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন দেশ সফর বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশ সফর করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫-২৮ মে ২০১৪ তারিখে জাপান সফরকালে এবং ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বেশকিছু স্বাক্ষরিত চুক্তি সমঝোতা স্বারক করা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী গত ৬-১১ জুন ২০১৪ তারিখে গণচীন সফরকালে এবং চীনের রাষ্ট্রপতি ১৪-১৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে বাংলাদেশ সফরকালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি, সমঝোতা স্বারক বিষয়ে সভা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩-৬ জুন ২০১৬ সৌদি আরবে দ্বিপক্ষীয় সফর করেন। এছাড়া তিনি গত ১৫-১৬ জুলাই আসেম সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য মালয়েশিয়া সফর করেন। ওই সময়ও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি চুক্তি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ জনকণ্ঠকে বলেন, চীন, জাপান, রাশিয়া, সৌদি আরব, ভারত ও কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ আনার চেষ্টা চলছে। এ কারণে বিনিয়োগ-বাণিজ্য-সংক্রান্ত যেসব চুক্তি করা হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণ করছে সরকার। সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ চীন সফরের সময়ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য সম্পর্ক জোরালো করার লক্ষ্যে উভয় দেশের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি করা হয়। এর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার নিশ্চয়তা কথা বলা হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, চীন প্রতিবছর বাংলাদেশকে ৩০ কোটি চীনা মুদ্রা সহায়তা দেয়ার কথা, চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন এবং নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ, চট্টগ্রামে চাইনিজ ইকোনমিক এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট জোন নির্মাণে সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও অন্যান্য দুর্যোগকালে দ্বিতীয় দফায় ব্যবহৃত উদ্ধারকারী যন্ত্র ক্রয় ও ব্যবহারে সহায়তা ও কর্ণফুলী নদীতে আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল নির্মাণে সমঝোতা স্মারক করা হয়। এছাড়া গত ১৪ অক্টোবর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে দুই দেশের মধ্যে ২৭টি নানা ধরনের চুক্তি এবং সমঝোতা হয়েছে। দুই দেশের কর্মকর্তাদের তথ্যানুযায়ী, ওই সময় চীন বাংলাদেশকে বিভিন্ন খাতে ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। যদিও এর বেশিরভাগই অবকাঠামো খাতে। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম এবং খুলনায় দুটি বড় তাপবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, যার একেকটির ক্ষমতাই হবে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়েএকটি টানেল তৈরির প্রকল্পেও অর্থ সহায়তা দিচ্ছে চীন। এছাড়া একটি সার কারখানা, ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট নামে একটি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে চীনা অর্থ সাহায্যে। চীন বাংলাদেশের উপকূলে গভীর সমুদ্রে একটি বন্দর নির্মাণেও আগ্রহী ছিল। চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের ১৩টা চুক্তি হয়েছে। এই ১৩টি চুক্তিতে প্রায় এক হাজার ৩৬০ কোটি ডলার ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে। জাপানের বিনিয়োগ সবকিছু ঠিক থাকলে জাপানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব হবে বাংলাদেশে। বিগ-বি ইনিশিয়েটিভের আওতায় বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে এই শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে। এ ক্ষেত্রে জাপানের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার। চলতি অর্থবছরের মধ্যে যাতে জাপানের প্রতিশ্রুত বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসতে পারে সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও মনিটরিং করার উদ্যোগ নিয়েছে। জাপানী শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য পাঁচটি ইপিজেডে ৪০টি শিল্প প্লট ও ২টি কারখানা ভবন সংরক্ষিত করা হয়েছে। এছাড়া জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে যেসব আলোচনা ও চুক্তি, সমঝোতা ম্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তা বাস্তবায়নে ৩১ দফা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় জাপানের সঙ্গে ৭২০ কোটি ডলারের যে চুক্তি হয়েছে তা বাস্তবায়নেও সরকারের পক্ষ থেকে কাজ করা হচ্ছে। দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে জরুরী বৈঠক আহ্বান করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এছাড়া শেখ হাসিনার সফরে বাংলাদেশকে জাপান বড় ধরনের ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এ ঋণের অর্থে বিভিন্ন প্রকল্পে বাস্তবায়ন হবে। এর মধ্যে আছেÑ গঙ্গা ব্যারাজ, যমুনা নদীর নিচে টানেল, যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতুর মতো শুধু রেলের জন্য আরেকটি সেতু, বহুমুখী ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস ও ঢাকার চারপাশে থাকা চার নদীর জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনার মতো বৃহৎ অর্থায়নের প্রকল্প। এ প্রকল্পগুলোই বাছাই, সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও তদারকির জন্য যৌথ কাঠামো চাইছে জাপান। একই সঙ্গে কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে দেশের সবচেয়ে বড় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প ও রাজধানীতে মেট্রোরেল প্রকল্পেও অর্থায়ন করছে জাপান। বিনিয়োগ করবে সৌদি আরব ভারত-চীন-জাপানের পর বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে এবার মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৪-৫ জুন সৌদি আরব সফর করেন। ওই সময় তার দুই দিনের সফরে সময় বিনিয়োগ, সংস্কৃতি ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতার বিষয়ে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরই ধারবাহিকতায় উৎপাদনমুখী শিল্প ও অবকাঠামো খাত থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে দেশটি। আর এ ক্ষেত্রে সৌদি আরবের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। বিদ্যুত-গ্যাস, ঢাকা-চট্টগ্রাম সুপার হাইওয়ে, মংলা ও পায়রা পোর্ট উন্নয়নসহ এরকম বড় বড় দশটি খাতে বিনিয়োগ করবে সৌদি আরব। সৌদি আরবের উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সংগঠন জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল শীঘ্রই ঢাকা সফরে আসছে। বিদ্যমান বিনিয়োগের দক্ষতা বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যমান বিনিয়োগের দক্ষতা বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিকভাবে দুটি বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছেÑ কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে সহায়তা প্রদান করে কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো। এ লক্ষ্যে চলতি বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়ার পাশাপাশি শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রাথমিকভাবে বিদ্যমান বিনিয়োগের দক্ষতা বাড়ানো গেলেও উৎপাদন ও সেবার মান প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহসভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, ব্যাংক সুদ কমানো এবং বিদ্যুত উৎপাদন বাড়ায় বিনিয়োগের খরা কেটে গেছে। এছাড়া সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় উদ্যোক্তাদের আস্থাহীনতার সঙ্কট দূর হয়েছে। এ কারণে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা দশ প্রকল্পের পাশাপাশি এবং ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রূপকল্প-২১ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। বিডা বলছে বিদেশী বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) বলছে, কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশী (এফডিআই) বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় দেশ। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে ভারত, চীন, জাপান, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং আমেরিকার মতো রাষ্ট্রের বিনিয়োগ আকর্ষণ করা সবচেয়ে বেশি জরুরী হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ন্যাশনাল কনফারেন্স অন ট্রেড এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিডা। প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিশ্ব বিনিয়োগ পরিস্থিতির স্থবিরতার মধ্যেও বাংলাদেশে এফডিআই বেড়েছে। আগের বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ২০১৬ সালে এফডিআই এসেছে ২৩৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। স্বাধীনতার পর দেশে এটিই সর্বোচ্চ পরিমাণ। এফডিআই কিছুটা বাড়লেও গত বছরের চেয়ে অনেক কম হারে বেড়েছে। ২০১৫ সালে প্রবৃদ্ধি ছিল ৪৬ শতাংশের বেশি। এসেছিল ২২৩ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ৪৮ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মধ্যে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। এসব দেশের মধ্যে বৃহৎ আকারের ১০ নতুন বিনিয়োগ প্রস্তাবের ৩টিই এসেছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে বড় আকারের বিদ্যুত প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া ২০১৭ সালে বাংলাদেশের এফডিআই পরিস্থিতি আরও ভাল হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আঙ্কটাড। এ প্রসঙ্গে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ২০১৬ সাল বিশ্ব বিনিয়োগের মন্দার বছর গেছে। সে তুলনায় বাংলাদেশের এফডিআই খুব কম বলা যাবে না। তবে জিডিপি অনুপাতে এ হার আরও বাড়ানো উচিত। তিনি বলেন, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপক হারে কাজ করছেন তারা। উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন সহজেই মেটানোর পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। ফলে আগামীতে এফডিআই অনেক বেশি পরিমাণে বাড়বে। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে।
×