ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিপিএল ফুটবল

আবাহনী-শেখ জামাল দ্বৈরথ অমীমাংসিত

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১০ অক্টোবর ২০১৭

আবাহনী-শেখ জামাল দ্বৈরথ অমীমাংসিত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুটি ক্লাবই অবস্থিত একই এলাকায়। ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড। মজার ব্যাপার, ম্যাচ শুরুর আগে পয়েন্ট টেবিলে দুই দলের সব পরিসংখ্যান ও পয়েন্ট একেবারেই হুবহু এক। অবস্থানও যুগ্মভাবে দ্বিতীয়। আবার ম্যাচ শেষেও একই অবস্থা! কেননা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সোমবারের একমাত্র রোমাঞ্চকর এই খেলায় (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল) দু’দল ১-১ গোলে ড্র করে। আগের দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আকস্মিকভাবেই পরলোকগমন করেছিলেন আবাহনীর সহকারী কোচ অমলেশ সেন। সেই শোককে যেন শক্তিতে পরিণত করে মাঠে নেমেছিল আবাহনী। এ ম্যাচ জিতলে প্রয়াত গুরুকে যথার্থ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারত তারা। কিন্তু অল্পের জন্য সেটা আর হয়নি। একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করে তাদের হাসি কেড়ে নেয় ‘বেঙ্গল ইয়োলোস’ খ্যাত জামাল। গত লীগের প্রথম মোকাবেলায় উভয় দল ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল। ফিরতি সাক্ষাতে জিতেছিল আবাহনীই, ৩-২ গোলে। নিজেদের দশম ম্যাচে এটা সর্বাধিক ১৬ বারের লীগ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীর এবং তিনবারের লীগ শিরোপাধারী জামালের তৃতীয় ড্র। ২১ পয়েন্ট নিয়ে এখন তারা আবারও যুগ্মভাবে ঠাঁই করে নিল পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে। খেলার শুরুতে উভয় দলই খেলা শুরু করে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণ, আক্রমণ, চাপ সৃষ্টি ... সবকিছুতেই প্রতিপক্ষের চেয়ে এগিয়ে ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক, ধারক-বাহক আবাহনী। প্রথমার্ধেই তারা এগিয়ে যেতে পারত কমপক্ষে তিন গোলে। কিন্তু তাদের ফরোয়ার্ডদের অমার্জনীয় ব্যর্থতায় একটিও গোল হয়নি। বিশেষ করে বলতে হয় স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবনের কথা। জাতীয় দলে খেলা জীবন এমন দুটি গোল করার সহজ সুযোগ নষ্ট করেন, যা আক্ষেপে পুড়িয়েছে ‘দ্য স্কাই ব্ল ব্রিগেড’কে। পক্ষান্তরে জামালও যে আক্রমণ শাণায়নি, তা নয়। কিন্তু তাদের আক্রমণগুলো দক্ষতা-দৃঢ়তার সঙ্গে বার বার নস্যাত করে দেয় আবাহনীর রক্ষণভাগ। ৫৭ মিনিটে এমেকার থেকে বল পেয়ে বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে গোলপোস্টে লব করেন লেফট ব্যাক ওয়ালী ফয়সাল। সেই বল বিপন্মুক্ত করতে পারেননি জামালের ডিফেন্ডার খান মোঃ তারা। লাফিয়ে ওঠা চলতি সেই বলে ড্রপ হেড করে গোলরক্ষক মিতুলকে পরাস্ত করে বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন জীবন (১-০)। ৮৪ মিনিটে জামালের বদলি নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল ওদোয়িন আবাহনীর বক্সের ডান প্রান্ত দিয়ে ঢুকে যে গড়ানো শট করেন, তা পায়ে সংযোগ করেন গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড সলোমন কিং। সেই বল আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল আলমের হাত ফস্কে পোস্টে ঢুকে যাবার ঠিক আগ মুহূর্তে আবাহনীর ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা শুয়ে পড়ে বা পায়ে শট নেন। তা পোস্টের কানায় লেগে বক্সের বাইরে পড়ে। সেই বল আবাহনীর আরেক খেলোয়াড় বিপন্মুক্ত করেন। কিন্তু জামাল রেফারি আজাদ রহমানের কাছে জোরালো দাবি জানায় বল গোললাইন অতিক্রম করেছে। কিন্তু রেফারি তা না মানলে রাগে-ক্ষোভে ডাগআউট ছেড়ে ড্রেসিংরুমে চলে যান জামালের কোচ জোসেফ আফুসি। কিন্তু নাটকের আরেকটু বাকি ছিল। ইনজুরি টাইমে (৯০+৩ মিনিটে) অবিশ^াস্যভাবে সমতায় ফেরে জামাল। ডান প্রান্ত দিয়ে সলোমন কিংয়ের জোরালো গড়ানো শটটি ডিফ্লেকটেড হয়ে চলে যায় তার সতীর্থ ও বদলি মিডফিল্ডার জাহেদ পারভেজ চৌধুরীর পায়ে। ডি-বক্সের মাথা থেকে চলতি বলে ডান পায়ের তীব্র গড়ানো শট নেন জাহেদ। সেই বল গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে চলে যায় জালে (১-১)। আনন্দে মাতোয়ারা হয় জামাল শিবির।
×