ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খাল দখল করে ঘের॥ ছয় শ’ বিঘা জমি অনাবাদি

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৯ অক্টোবর ২০১৭

খাল দখল করে ঘের॥ ছয় শ’ বিঘা জমি অনাবাদি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ৮ অক্টোবর ॥ কেশবপুরের কালকেতলা ছোট পদ্মবিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র সরকারী খাল দখল করে প্রভাবশালী এক ব্যবসায়ী মাছের ঘের করেছেন। পানি নিষ্কাশনের কালভার্ট ও সরকারী খাল বন্ধ করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। ফলে ওই বিলের প্রায় ৫ শতাধিক কৃষকের শত শত বিঘা ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। কেশবপুরের ভয়াবহ জলাবদ্ধতার মূল কারণ হিসেবে খাল, নদ, নদী দখল করে মাছের ঘের করা চিহ্নিত করে উপজেলা প্রশাসন থেকে বার বার খাল দখল মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্থানীয় এমপি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক নির্দেশনা দিলেও মাছের ঘের অভ্যন্তরে সরকারী খাল অবৈধভাবে দখলে রেখে চলেছে ঘের মালিকরা। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া, ফতেপুর, ধর্মপুর ও কাস্তা গ্রামের কৃষকরা জানান, প্রায় ৬শ’ বিঘা জমি নিয়ে কালকেতলা পদ্মবিলের অবস্থান। ওই বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য কপোতাক্ষ নদ থেকে একটি সরকারী খাল বিলের ভেতর প্রায় দেড় কিলোমিটার চলে গেছে। এই খাল দিয়ে বৃষ্টি মৌসুমে পানি নিষ্কাশিত হয়। কিন্তু কেশবপুরের আলতাপোল গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বিশ্বাস ও শহিদুল ইসলাম বিলের কৃষকদের কাছ থেকে জমি বিঘাপ্রতি আড়াই হাজার ও ১৬ হাজার টাকা হারির মাধ্যমে ৭ বছরের চুক্তিতে নিয়ে গত ৫ বছর যাবত মাছ চাষ করে আসছেন। কিছু কৃষকের পানি নিষ্কাশন করে আবাদ করার ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও তিনি বাঁশবাড়িয়া কালকেতলা পদ্মবিলের সরকারী খালে কুমিরা-পুলেরহাট সড়কের ব্রিজে কপাট দিয়ে বিলের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে শত শত কৃষক ফসল করতে পারছে না। এছাড়া তাদের নিয়মিত হারি দেয়ার কথা থাকলেও তিনি তা দিচ্ছেন না এমন অভিযোগ করেছেন একাধিক কৃষক। বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান, আব্দুস সাত্তার মৃধা, আবুল শেখ, ধর্মপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও শেখ রেজাউল ইসলাম বলেন কামরুল তাদের নিয়মিত হারির টাকা পরিশোধ করে না এবং পানি আটকে দেয়ায় ফসল করতে পারছেন না। খাল দখলে নেয়ার বিষয়ে ঘের মালিক কামরুল ইসলাম বিশ্বাসের ০১৭১২৯৮৪৩৮৮ নম্বর সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার ঘেরের ভেতর সরকারী খাল নেই। আমার ঘেরের পশ্চিমে বর্তমান চেয়ারম্যান মুক্তর ঘেরের ভেততে খাল। তবে ব্রিজের কপাট তিনি বন্ধ করেছেন জানিয়ে বলেন, সময়মতো কপাট সরিয়ে পানি বের করে কৃষকদের ফসল কতে দেয়া হয়। কালভার্টের মুখ বন্ধ না রাখলে মাছ চলে যাবে। ভুক্তভোগী কৃষকরা বিলের খাল দখলমুক্ত করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, কোন সরকারী খাল বা নদী দখল করা হলে তা উচ্ছেদ করা হবে। সকল খাল ও নদ-নদী দখলমুক্ত করায় প্রক্রিয়া চলছে।
×