ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেক্সিট স্থগিত করতে গোপনে পরামর্শ !

চাপের মুখে টেরেসা মে

প্রকাশিত: ০৫:০২, ৯ অক্টোবর ২০১৭

চাপের মুখে টেরেসা মে

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ব্রেক্সিট বা ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার বিষয়ে চাপের মুখে আছেন বলে জানা গেছে। ব্রেক্সিট স্থগিত করতে তাকে ‘গোপনে পরামর্শ’ দেয়া হয়েছে কিনা তা প্রকাশ করার জন্য তার ওপর চাপ বাড়ছে। গার্ডিয়ান। ব্রেক্সিট স্থগিত করার জন্য মে’কে গোপনে আইনী পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাজ্য যে কোন সময় ইইউ ছাড়ার চিন্তা থেকে সরে আসতে পারে। ব্রেক্সিট সম্পন্ন করার জন্য ব্রিটেনের হাতে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত সময় রয়েছে। কিন্তু জাতীয় সার্থে এর মধ্যে পার্লামেন্ট সদস্যরা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টাতে পারেন। এ ধরনের খবর প্রকাশের ফলে ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রাসেলসের সঙ্গে ব্রিটেনের আলোচনায় অনিশ্চয়তার ছায়া পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রেক্সিট হবেই, ব্রেক্সিট অনিবার্য। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ রকম বক্তব্য আসার পর দেশটির শীর্ষ আইনজ্ঞরা মে’কে ব্রেক্সিট না করার জন্য বোঝানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ব্রেক্সিট হবেই। তাই এমপিদের এখন ঠিক করতে হবে ব্রেক্সিট পরবর্তী ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করা। ব্রেক্সিট নিয়ে ইইউপন্থী এমপি এবং আইনজীবী ও ব্যবসায়ী কমিউনিটির মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। মন্ত্রীরা বলছেন, যেহেতু ব্রিটেনের জনগণ গত বছর এ বিষয়ে গণভোটে তাদের মতামত জানিয়ে দিয়েছে এবং সরকারও ইইউ চুক্তির ৫০ ধারাটি উত্থাপন করেছে তাই এ বিষয়ে পেছন ফেরার কোন সুযোগ নেই। ম্যাঞ্চেস্টারে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সাম্প্রতিক সম্মেলন বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সম্মেলনে মে’র দেয়া ভাষণ ছিল গতানুগতিক ও হতাশাব্যঞ্জক। এ থেকে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে যে ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনায় নেতৃত্ব দেয়া এবং একটি গ্রহণযোগ্য সমঝোতায় পৌঁছানোর মতো রাজনৈতিক কর্তৃত্ব মে’র আছে কিনা। কথা উঠেছে, ২০১৯ সালের মার্চের আগে যে কোন সময় ইইউ চুক্তির ৫০ ধারা প্রত্যাহার করে নিতে পারে ব্রিটেন। বিষয়টি নিয়ে মে’কে কেউ গোপনে পরামর্শ দিয়েছেন কিনা তথ্য অধিকার আইনের আওতায় দেশটির সুপরিচিত আইনজ্ঞ জেসিকা সিমোর মে’র কাছে চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, এখন নষ্ট করার মতো সময় হাতে নেই। প্রধানমন্ত্রীকে কেউ যদি এ বিষয়ে উপদেশ দিয়ে থাকেন তবে তার উচিত পার্লামেন্টে বিষয়টি তোলা। পার্লামেন্ট সদস্যরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। মে’র কাছে আসা উপদেশ আর্টিকেল ৫০ যারা প্রণয়ন করেছিলেন তাদের দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এদের মধ্যে আছেন লর্ড কের, জ্যঁ ক্লদ পিরিস এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের লিগ্যাল সার্ভিসের সাবেক ডিরেক্টর জেনারেল মার্টিন সেলমার। জেসিকা হার্ড ব্রেক্সিট বা ইইউর সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার বিরোধী এবং প্রক্রিয়াটি শুরু হয়ে গেছে; এ থেকে বেরিয়ে আসার কোন উপায় নেই সরকারের এই দৃষ্টিভঙ্গীরও তিনি বিরোধী। জেসিকা মনে করেন সরকার যেভাবে ব্রেক্সিটকে একটি আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসেবে জনগণের সামনে তুলে ধরছে এটি আসলে তেমন নয়। এটি আইনগত নয় বরং নীতিগত একটি বিষয়। এদিকে ব্রেক্সিট কিভাবে আটকানো যায় সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ তার ওপর একটি বই লিখে ফেলেছেন। ব্রিটেনের অবজারভার পত্রিকাকে তিনি বলেন, আর্টিকেল ৫০ একবার উত্থাপন করলে তা আর প্রত্যাহার করা যায় না যে কথাটি সরকার জনগণকে বুঝিয়ে এসেছে তা যথাযথ নয়। মে পার্লামেন্ট সদস্যদের এই বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন যে, আসন্ন শরৎকালীন অধিবেশনে তিনি পার্লামেন্টে যে বিলটি উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন এমপিদের সেটি অনুমোদন করাতে হবে। অন্যথায় তিনি কোন চুক্তি না করেই ইইউ থেকে বেরিয়ে আসবেন। তিনি বলছেন, বিলটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য এমপিরা এক বছর সময় পাচ্ছেন। তাদের ভেবে দেখা উচিত, ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের আগে তারা নিজ নিজ এলাকার ভোটারদের যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এই বিল তার অনুকূল কি না।
×