ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্লাস্টিক শিল্পের উন্নয়নে রোডম্যাপ হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৮ অক্টোবর ২০১৭

প্লাস্টিক শিল্পের উন্নয়নে রোডম্যাপ হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্লাস্টিক শিল্প খাত উন্নয়নে রোডম্যাপ-২০৩০ প্রণয়ন করা হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লাস্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড টেকনোলজিকে (বিপেট) বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এই রোডম্যাপের আওতায় শতভাগ কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন উদ্যোক্তারা। বর্তমান এ শিল্প খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ হয়েছে। প্লাস্টিক শিল্প খাতের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভ্যাট আইন পরিবর্তন করে তা সময়োপযোগী করার তাগিদ দিয়েছেন শিল্পমালিকরা। শনিবার দুপুরে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক এ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সহসভাপতি মুনতাকিম আশরাফ, সাবেক সহসভাপতি দেওয়ান সুলতান আহমেদ, মো. হেলাল উদ্দিন, পরিচালক আবু মোতালেব প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত আয়ের দেশ হলে সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে প্লাস্টিক শিল্প খাত। প্লাস্টিক সেক্টরে নতুন নতুন শিল্প গড়ে উঠবে। অটোমোবাইল, ইলেক্ট্রনিক্স এবং ফুড সেক্টরে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বাড়বে। সুতরাং এসব সার্ভিস দেয়ার জন্য এখন থেকেই উদ্যোক্তাদের প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন। জানা গেছে, এ শিল্প উন্নয়নে কমন ফ্যাসিলিটিস সেন্টার করার জন্য বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ২০ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া শিল্পোন্নয়ন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে ‘বিপেট’। ইতোমধ্যে বিপেটের জন্য স্থায়ী ক্যাম্পাস করার জন্য জমি ক্রয় করা হয়েছে। মূল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিং করা হয়ে গেছে। প্লাস্টিক শিল্প খাতের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরিতে বিপেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। ইতোমধ্যে বিপেট উন্নয়নে সরকার ১০ কোটি টাকার আর্থিক অনুদান দিয়েছে। এছাড়া আরও ২০ কোটি টাকার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বিপেটকে ভার্সিটি লেবেলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেলক্ষ্যে আমাদের সব ধরনের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ রয়েছে। তিনি বলেন, রোডম্যাপের মাধ্যমে সবাই জানতে পারবেন, আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যে এ শিল্প খাত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এ শিল্প খাতের উদ্যোগে আইপিএফ-১৭ অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ইউপি (ইউটিলাইজেশন অব পারমিশন) ইস্যু এ্যাসোসিয়েশনে আনার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, শীঘ্রই বিপিজিএমইএ তাদের সদস্যদের জন্য ইউপি ইস্যুর কাজ শুরু করবে। এর ফলে উদ্যোক্তাদের হিডেন বা গোপন খরচ কমে যাবে। ভ্যাট আইনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এই আইনের দ্বারা সম্পূরক কর উঠিয়ে দেয়া হলে তা স্থানীয় শিল্পের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই স্থানীয় শিল্পকে বাঁচানোর জন্য ইতোপূর্বে ঘোষিত ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি। এদিকে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্যোক্তাদের দাবির মুখে রি-সাইক্লিন শিল্পকে ভ্যাটের আওতামুক্ত করা হয়েছে। এ শিল্পটি পরিবেশবান্ধব, তাই এ শিল্পে রি-সাইক্লিন ম্যাটারিয়ালস ব্যবহার বাড়াতেই হবে। এজন্য ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের লক্ষ্যে ওয়েস্ট কনসার্ন এর সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে লোকাল গবর্মেন্ট এবং সিটি কর্পোরেশনের কালেকশন সিস্টেম উন্নয়নের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। জানা গেছে, অভ্যন্তরীণভাবে বর্তমান প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন করা হচ্ছে। এই সেক্টর সরকারী কোষাগারে প্রতিবছর ৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব দিয়ে থাকে। প্লাস্টিকের তৈরি প্রচ্ছন্ন রফতানি পণ্যের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা এবং সরাসরি রফতানির পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকার বেশি। সরকার সরাসরি রফতানির ওপর ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে। এতে রফতানি আরও বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ভারত ও চীনের মতো বড় বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে প্লাস্টিক শিল্প খাত এগিয়ে যাচ্ছে।
×