ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু রাজনীতিতে সৃজনশীলতা এনেছিলেন ॥ অধ্যাপক মুনতাসীর

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ৮ অক্টোবর ২০১৭

বঙ্গবন্ধু রাজনীতিতে সৃজনশীলতা এনেছিলেন ॥ অধ্যাপক মুনতাসীর

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ হলভর্তি মানুষের উপস্থিতিতে পিনপতন নিস্তব্ধতার মধ্যে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন জানালেন, বঙ্গবন্ধু কিভাবে আমাদের স্বাধীনতা এনেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা অজানা তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকেই এই স্বপ্ন দানা বাঁধে এবং ষাটের দশকে তিনি তা কার্যকরের চেষ্টা গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বপ্ন হয়ত অনেকে দেখেছেন; কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছেন, স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং তা কার্যকর করেছেন। আজ থেকে ২০০ কিংবা ৩০০ বছর পর এ দেশের ভৌগোলিক সীমানা বদল হতে পারে, নাম বদল হতে পারে, অনেক কিছু হতে পারে, কিন্তু বাঙালী জাতি যতদিন থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর নামও উচ্চারিত হবে। কারণ বঙ্গবন্ধু বাঙালীকে প্রথম একটি রাষ্ট্র দিয়েছেন। তিনি রাজনীতিতে সৃজনশীলতা এনেছিলেন। সৃজনশীল রাজনীতি করেছেন বলে শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু হয়েছেন। রাজনীতিতে সৃজনশীলতা না থাকলে তা গতানুগতিক রাজনীতি হয়। সম্প্রতি ড. মুনতাসীর মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক নিযুক্ত হওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় খুলনা ক্লাবে খুলনার নাগরিকবৃন্দের পক্ষ থেকে তাকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন ও ‘বঙ্গবন্ধু কীভাবে স্বাধীনতা এনেছিলেন’ শীর্ষক জনবক্তৃতার আয়োজন করা হয়। সভায় জনবক্তৃতায় মুনতাসীর মামুন এসব কথা বলেন। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু চেয়ার বা বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক হিসেবে তিনি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জনবক্তৃতা দেবেন। বঙ্গবন্ধু চেয়ার সক্রিয় রাখার জন্য তিনি এটি করবেন। খুলনায় প্রথম বঙ্গবন্ধু জনবক্তৃতা-১ আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম। জনবক্তৃতায় খুলনার বিভিন্নস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ড. মুনতাসীর মামুন ‘বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক’ পদে মনোনীত হওয়ায় তাকে বহু প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে উত্তরীয় পরিয়ে ও ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। এর পর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ড. মুনতাসীর মামুনের পুরনো ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল। তিনি ড. মামুনের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন শিক্ষক, সংগঠক, সৃজনশীল চিন্তার ক্ষেত্রে ড. মুনতাসীর মামুন অগ্রগণ্য। যিনি তিন শ’র অধিক বই লিখেছেন, সারা জীবন এদেশের মানুষের অধিকার আদায় ও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তা অতুলনীয়। এক জীবনে তিনি যা করেছেন অন্য কেউ তা করতে পারবেন কিনা সন্দেহ। সবচেয়ে বড় কথা অসাধারণ প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে ইতিহাসকে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে এসেছেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খুলনার সিনিয়র নাগরিক সৈয়দ মনোয়ার আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সরকারী বিএল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শংকর কুমার মল্লিক। অনুষ্ঠানের শেষপর্বে প্রণব সাহা নির্মিত বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক তথ্যচিত্র ‘বঙ্গবন্ধু ও মার্চ ১৯৭১’ প্রদর্শন করা হয়। অনেক অজানা তথ্যে ভরপুর এই তথ্যচিত্র দর্শকরা আগ্রহ নিয়ে দেখেন। তথ্যচিত্রটি প্রযোজনা করেছে খুলনায় প্রতিষ্ঠিত ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর। অর্থায়ন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
×