ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কাউন্সিলর সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কুকুর কামড়ানো গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ৮ অক্টোবর ২০১৭

কাউন্সিলর সামিউল  ইসলামের বিরুদ্ধে কুকুর কামড়ানো গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ডোমার পৌরসভার কাউন্সিলর সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে মরা মহিষের মাংস বিক্রির দায়ে পৌরসভা জরুরী মিটিং করে রেজুলেশনের মাধ্যমে তাকে সতর্ক করলেও টনক নড়েনি তার। এবার তার বিরুদ্ধে কুকুর কামড়ানো গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জোড়াবাড়ি এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। এ নিয়ে গত দুই দিন ধরে ডোমার উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। শনিবার এলাকাবাসী জানায়, ডোমার পৌরসভার কাউন্সিলর সামিউল একজন কসাই। চলতি বছরের ৩ জুন গভীর রাতে অসুখে আক্রান্ত হয়ে একটি মহিষ মারা গেলে তা জবাই করে। খবর পেয়ে পুলিশ তা জব্দ ও ওই কাউন্সিলরকে আটক করে। পরে পৌরসভার প্যানেল মেয়র এনায়েত হোসেন নয়নসহ অন্যান্য কাউন্সিলর বিষয়টি নিষ্পত্তি করে। এ জন্য কাউন্সিলর সামিউল মুচলেকা দেয় এ ধরনের কাজ করবেন না। এরপর পৌরসভা মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানুর উপস্থিতিতে জরুরী বৈঠকে কাউন্সিলরকে সতর্ক করে দেয়া হয়। এদিকে আবার ৩ অক্টোবর বিকেল ৫টায় উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের লোকজন ধঞ্চনপুর এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ বেতগাড়া বাবুপাড়া গ্রামের গোলাম নুরের একটি গরুকে কুকুর কামড় দেয়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রাসেদুল হক গরুটিকে জলাতঙ্ক রোগের বিষয় নিশ্চিত করে। কিন্তু গরুর মালিক গোপনে উক্ত কাউন্সিলর গরু ব্যবসায়ী পার্টনার গুলবাহারের কাছে ৪০ হাজার টাকা দামের গরুটি মাত্র চার হাজার টাকায় বিক্রি করে। গুলবাহার গরুটি জবাই করে মাংস ডোমার পৌর সভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামিউল ইসলামের কাছে পাঠায়। গরু জবাইয়ের সময় রক্ত খেয়ে তিনটি কুকুর মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার আজিবর রহমান (৫০), মোহম্মদ আরিফ (৩২), আইয়ুব আলী অভিযোগ করে বলেন অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রয়ের হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এদিকে ঘটনাটি মিথ্যে ও ষড়যন্ত্র আখ্যায়িত করে পৌর কাউন্সিলর সামিউল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে ৫ অক্টোবর। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর সামিউল ইসলাম বলেন, আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হবার পর মাংস বিক্রি করি না। এখন আমি বাদামের পাইকারি ব্যবসা করি। এলাকার রতন নামের এক ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়েছে। এমনকি আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। তিনি আরও বলেন পৌরসভায় যে মিটিং হয় সেখানে আমার ওয়ার্ড এলাকায় যাতে কোন অসুস্থ গরু-মহিষ জবাই না হয় সে জন্য সতর্ক করা হয়েছিল। তবে ডোমারের অনেকে অভিযোগ করে জানায় চোরাই গরু থেকে মরা গরু জবাই করে কাউন্সিলর এখনও ব্যবসা করে যাচ্ছে। বাজারে ভাল গরুর মাংস সাড়ে ৪শ’ টাকা কেজি। অথচ কাউন্সিলর ৪০০ টাকায় বিক্রি করে। ডোমার থানার ওসি (তদন্ত) ইব্রাহিম খলিল বলেন ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্রাণিসম্পদ, স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে হবে । ডোমার পৌরসভার মেয়র মুনছুরুল ইসলাম দানু জানান, ইতোপূর্বে পৌরসভায় মিটিং করে রেজুলেশনের মাধ্যমে তাকে সতর্ক করা হয়েছে । আবার এ রকম ঘটনা করলে যে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হলে আমরা সহযোগিতা করব।
×