ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে ৩ হত্যাকান্ড নিয়ে বিপাকে পুলিশ

প্রকাশিত: ০৪:১১, ৮ অক্টোবর ২০১৭

চট্টগ্রামে ৩ হত্যাকান্ড নিয়ে বিপাকে পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ নিজ গৃহের সামনে দুইদিনে ৩ হত্যার ঘটনা পুলিশ প্রশাসনকে ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। শনিবার ভোরে ডবলমুরিং থানাধীন সুপারীপাড়া এলাকায় এক যুবক ছুরিকাঘাতে খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তার নাম মোহাম্মদ ইমন (২৫)। এ ঘটনায় হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে কোন হত্যা মামলা দায়ের না হওয়ায় পুলিশ ইউডি মামলা দায়ের করেছে। এদিকে, শুক্রবার মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৭ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বাবা এমন তথ্য জানিয়েছেন থানার ওসি মর্জিনা বেগম। অপরদিকে, আকবরশাহ থানা এলাকার কৈবল্যধাম আশ্রমের কাছে জয়দাশ নামক এক যুবক হত্যার ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় দুই সহোদরকে পূর্ব ফিরোজশাহ কলোনি থেকে শনিবার রাতে আটক করা হলেও আকবরশাহ থানা পুলিশ স্বীকার করছে না। ডবলমুরিং থানা সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) থেকে সুপারীপাড়ার বাসার সামনে আসতেই ১০/১২ জন সন্ত্রাসী ইমনের ওপর হামলে পড়ে। সন্ত্রাসীরা তাকে ঘিরে ধরেই ছুরিকাঘাত করে মাটিতে লুটিয়ে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা দ্রুত তাকে চমেক হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ইমন সুপারীপাড়া এলাকার আব্দুল হালিমের ছেলে। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাসুদুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, ইমনের সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী তার ডান পায়ের রানের ঠিক ভেতরের দিকটাতে একটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিবারের কেউ থানায় মামলা দায়ের করেনি। ইমনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ইমন তার অসুস্থ চাচাত ভাইকে দেখতে চমেক হাসপাতালে গিয়েছিল। রাত বেশি হওয়ায় সে আর বাসায় ফেরেনি। ইমনের ভাই নাহিন পুলিশকে জানিয়েছে, হত্যাকারীরা ১০/১২ জন ছিল। এদের মধ্যে কয়েকজনকে নাহিন চিনতে পেরেছে। কিন্তু কি কারণে তার ভাইকে খুন করা হয়েছে সে তা জানে না। এদিকে, গত শুক্রবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে হত্যা করা হয়। দক্ষিণ নালাপাড়ার নিজ গৃহ থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার কারণে পরিবারের সদস্যরা এটিকে রাজনৈতিক কোন্দলের জের বলে ধারণা করছেন। কারণ সুদীপ্ত ফেসবুকে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিয়ে বেশকিছু পোস্ট দিয়েছে। এতে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দলের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। এমনকি সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিয়েও লেখালেখি করা হয়েছে ফেসবুকে। এর পর নতুন কমিটি গঠিত হলেও সুদীপ্ত কোন পদে বিজয়ী হয়নি। কিন্তু এরপরও নতুন কমিটি তাকে সহ-সাধারণ সম্পাদকের পদ দিলেও তাতে সন্তুষ্ট ছিল না সুদীপ্ত। সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা বেগম জনকণ্ঠকে জানান, সুদীপ্ত হত্যার ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু শনিবার বিকেল পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। অপরদিকে, আকবরশাহ থানা এলাকার কৈবল্যধাম আশ্রমের কাছে জয়দাশ নামক এক যুবক হত্যার ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে শুক্রবার রাতে। এ ঘটনায় পূর্ব ফিরোজশাহ কলোনির ‘ডি’ লেনের ইডি/২ নং বাড়ি সাদা পোশাকে শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে একদল পুলিশ বাড়িটি ঘেরাও করে। এ সময় স্থানীয়দের কাছে সাদা পোশাকধারীদের সন্দেহ হলে তারা নিজেদের আকবরশাহ থানা পুলিশের লোক দাবি করে এবং আসামি ধরতে কোন প্রকার বাধা না দিতে অনুরোধ করে। ঐ বাড়ি থেকে মাউন ও হিমেল নামের দুই সহোদরকে আটক করেছে পুলিশ। এই দুই সহোদরের বাবার নাম মনির আহমেদ ভূঞা। এ বিষয়ে জানতে শনিবার বিকেলে আকবরশাহ থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার থানা হাজতে কোন আসামি নেই বলে জানান। তবে এই ঘটনার তদন্ত করছেন এসআই জাকির হোসেন তা নিশ্চিত করেছেন। পূর্ব ফিরোজশাহ কলোনি থেকে শনিবার রাতে এ ঘটনায় কোন ব্যক্তিকে আটক করেনি পুলিশ। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঘুমাচ্ছেন তাই রাত আটটার আগে কোন তথ্য দিতে পারবেন না বলে জানান।
×